বেটার হেল্থ ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের মডেল ফার্মেসি ও মডেল মেডিসিন শপ কার্যক্রম
রংপুর জেলার ফার্মেসী মালিকদের উদ্দেশ্যে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ফার্মাসিস্ট কর্তৃক কোন ধরনের এন্টিবায়োটিক ঔষধ বিক্রি করবেন না। আজ ২২ নভেম্বর ২০২০, দুপুর ১২.০০ টায় রংপুর আরডিআরএস বেগম রোকেয়া হলে “বাংলাদেশ মডেল ফার্মেসী ও মডেল মেডিসিন শপের প্রয়োজনীয়তা ও সম্ভাবনা” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহবান জানান।
ব্রিটিশ সরকারের অর্থায়নে এবং বাংলাদেশ কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্ট সোসাইটি ও ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস ফর হেল্থ এর সহযোগিতায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিসিডিএস রংপুর শাখা সভাপতি ও কেন্দ্রীয় পরিচালক মোঃ আব্দুল কাদেরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রংপুর জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোঃ আরাফাত রহমান; ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ সালাউদ্দিন; রংপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মারুফ আহমেদ; রংপুর জেলার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ তৌহিদুল ইসলাম; বিসিডিএস রংপুর শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি খোন্দকার মারুফ ইলাহি। স্বাগত বক্তব্য দেন এমএসএইচ’র বিএইচবি প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোঃ ইফতেখার হাসান খান।
প্রধান অতিথি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোঃ মাহবুবুর রহমান বলেন, লাইসেন্স ও ফার্মাসিস্ট বিহীন কোন ফার্মেসি থাকবেনা। ফার্মেসীতে সেবা প্রদানে অবশ্যই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষকর্মী রাখাতে হবে। রংপুর জেলার ফার্মেসী মালিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ইনভয়েস ছাড়া এবং আন-রেজিস্টার্ড কোম্পানি থেকে কোন ধরনের কেনাকাটা করবেন না।
তিনি আরও বলেন, আমরা পৃথিবীর ১৪৮ দেশে ঔষধ রপ্তানি করি এবং দেশের মোট চাহিদার মাত্র ২% আমদানি করি। সারাবিশ্বে আমাদের ঔষধের সুনাম রয়েছে। আপনারা পুরো মেডিসিন ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমেরই অংশ, দেশেও সঠিক মানে ও তাপমাত্রায় মানুষের হাতে আপনারা ঔষধ তুলে দিবেন। তিনি জানান, মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে ঔষধ প্রশাসন প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি মডেল ফার্মেসি ও উপজেলায় মডেল মেডিসিন শপ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
উল্লেখ্য, মডেল ফার্মেসি হওয়ার অন্যতম শর্ত হলো মডেল ফার্মেসিতে একজন বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্ট থাকবেন, যার দায়িত্বে থাকবে পুরো ফার্মেসিটি। ফার্মেসির আয়তন হবে ন্যূনতম ৩০০ বর্গফুট এবং থাকবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। ঔষধ বিক্রয়ের সঙ্গে রোগীকে ঔষধ সেবনের পদ্ধতি বলে দেওয়া এবং নিয়মিত সঠিকভাবে ঔষধ গ্রহণ করার জন্য কাউন্সিলিং করা।
মডেল মেডিসিন শপ মূলত বাংলাদেশের সর্বত্র সঠিক ওষুধসেবা নিশ্চিত করার জন্যে মডেল ফার্মেসি থেকে কিছুটা শিথিল শর্ত নিয়ে তৈরি। মডেল মেডিসিন শপের আয়তন নির্ধারণ করা হয়েছে ন্যূনতম ১২০ বর্গফুট। গ্র্যাজুয়েট ফার্মাসিস্টের অপ্রতুলতার কারণে গ্রেড বি (ডিপ্লোমা) ফার্মাসিস্ট বা ন্যূনতম গ্রেড সি ফার্মাসিস্ট থাকতে হবে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের কিছু স্বল্পমূল্যের প্রস্তুতি রাখতে হবে; যেমন, সিলিং ফ্যান ও একজস্ট ফ্যান। ওষুধ বিক্রয়ের সঙ্গে রোগীকে ওষুধ সেবনের পদ্ধতি বলে দেয়া এবং নিয়মিত সঠিকভাবে ওষুধ গ্রহণ করার জন্য কাউন্সিলিং করা।
সার্বিকভাবে মডেল ফার্মেসি আর মডেল মেডিসিন শপের পরিচালনার নিয়মকানুন নিয়ে একটি স্ট্যান্ডার্ডও তৈরি করা হয়, যা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটিতে উত্থাপিত হয় এবং অনুমোদিত হয়। বর্তমানে, বেটার হেল্থ ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের কারিগরি সহযোগীতায় ফার্মাসিস্টদের মডেল ফার্মেসি এবং মডেল মেডিসিন শপের উপর মোট ১১টি জেলায় যেখানে ২৩টি উপজেলার মোট ৫০৫৯ জন ফার্মাসিস্টবৃন্দ প্রশিক্ষন নিয়েছেন। প্রশিক্ষণ পরবর্তীতে তাদের ফার্মেসিতে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে মডেল ফার্মেসি এবং মডেল মেডিসিন শপে উন্নীত করার কার্যক্রম চলছে।
More Stories
কিশোরগঞ্জে ব্রিজ উদ্বোধন করলেন চেয়ারম্যান
কিশোরগঞ্জ উপজেলায় সড়ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
মধ্যপাড়ার পাথর খনি এলাকাবাসীর জন্য বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে পাশে দাড়িয়েছে জিটিসি চ্যারিটি হোম।