সারাদেশ

ঝিনাইদহে বিক্রি নেই কোরবানী পশুর চামড়া!

ঝিনাইদহ-
জরিনা বেগম একটি ছাগল কোরবানি দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি চামড়া বিক্রি করতে পারেননি। অগত্য তিনি চামড়া ফ্রি দিয়েছেন। আনোয়ার পাশার ২০ কেজি ওজনের ছাগলের চামড়া বিক্রি করেছেন ২০ টাকায়। আতিকুর রহমানের ৮০ কেজি গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র এক’শ টাকায়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ পশুর চামড়া বিক্রি হতাশা ব্যক্ত করেছেন। অথচ এই চামড়া ১০ বছর আগেও তারা চড়া দামে বিক্রি করে সেই টাকা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দিয়েছেন। অনেকে বলেছেন, চামড়া বিক্রি তো দূরের কথা, কেউ নিতেও আসেনি। কোরবানির পর চামড়া বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। বিক্রি করতে না পেরে পরে নিজ খরচে কেউ কেউ আড়তে পৌছে দিয়েছেন। সাধুহাটী ইউনিয়নের হাবিবুর রহমান হাবু বলেন, আমি একটি খাসি কোরবানি দিয়েছি। চামড়া বিক্রি করতে পারিনি। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সরকার চামড়ার যে রেট দিয়েছে তার অর্ধেক দামও চামড়া বিক্রি করতে পারেনি মানুষ। ক্ষোভ প্রকাশ করে ফারুক হোসেন নামে এক গৃহস্থ জানান, কোরবানির চামড়া পুরোটাই গরিবের হক। এটা বিক্রি করে দান করতে হয়। এখন দাম যত কমবে গরিব তত বঞ্চিত হবে। আগে একটা বড় গরুর চামড়া বাড়িতে এসে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যেত আড়াই থেকে তিন হাজার টাকায়। ওই সাইজের গরুর চামড়া এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০/২০০ টাকায়। তার মানে গরিবরা তাদের পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বাবলুর রহমান নামে এক গৃহস্থ জানান, চামড়ার দাম কমার কোনো যৌক্তিকতা খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ, চামড়ার পণ্যের দাম তো বাড়ছে। তাহলে কাঁচা চামড়ার দাম কেন কম হবে? গরিব মেরে লাভ কার প্রশ্ন রাখেন তিনি। চামড়ার দাম কমে যাওয়া কিংবা না পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান জানান, গ্রাম গ্রামে ফড়িয়ারা যে দামে চামড়া কিনছে তাতে কোরবানীদাতারা বঞ্চিত হচ্ছেন। তিনি বলেন, তারা যে চামড়া ১০০ টাকায় কিনছেন সেই চামড়া আড়তে ৩০০ টাকা দামে আমরা কিনছি। আসলে গ্রামাঞ্চলে গুজব ছড়িয়ে চামড়া কেনা হচ্ছে। চামড়া ব্যবসয়ীদের মতে ২০ টাকার একটি ছাগলের চামড়া কিনে লবণ ও শ্রমিক খরচসহ সংরক্ষন করতে ৬০ টাকা খরচ আছে। তিনি বলেন ইউরোপের দেশগুলো এখন আর চামড়া যায় না। যে কারণে দাম অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে। তাছাড়া ট্যানারি ও শহর অঞ্চলের চামড়া ব্যবসায়ীরা লোকসান দিতে দিতে পথে বসেছে। উল্লেখ্য এবার গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট সাত টাকা আর খাসির চামড়া তিন টাকা বাড়ানো হয়েছে। সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী এবার ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকায় বিক্রি হওয়ার কথা। খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। ঢাকার বাইরে এবং ঢাকায় বকরি ও খাসির চামড়ার দাম একই থাকবে। কিন্তু বাস্তবে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অর্ধেক দামে গরুর কাঁচা চামড়া কেনাবেঁচা হতে দেখা গেছে। খাসি বা বকরির চামড়ার কোনো মূল্য মিলছে না।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments