September 08, 2024
সারাদেশ

ফুলবাড়ীতে গরুর চামড়া ২০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হলেও ছাগলের চামড়া ফ্রি

ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে কোরবানীর গরুর চামড়া আকার ভেদে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পিস দরে বিক্রি হলেও ছাগলের চামড়া ফ্রি দিতে হয়েছে চামড়া মালিকদেরকে। কারণ ছাগলের চামড়া কেনার কেউ ছিল না। ট্যানারী মালিকদের কাছ থেকে পাওনা টাকা দীর্ঘ সময়েও না পাওয়ায় কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয় নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই স্থানীয় ব্যবসায়িদের।

সঠিক দাম ও বকেয়া টাকা না পেয়ে পুঁজি হারিয়ে ব্যবসা ছেড়েছেন ফুলবাড়ীর অন্তত ১৫ জন চামড়া ব্যবসায়ি। সে কারণে এক সময়ের জমজমাট পশুর চামড়ার বাজার এখন প্রায় সারা বছরই থাকে জনশূন্য। কোরবানিকে ঘিরে পৌরশহরের নিমতলা মোড়, হাসমিপট্টি ও চামড়া গুদাম এলাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম হলেও ব্যবসায়িদের কাছে যথেষ্ট পুঁজি না থাকায় গত কয়েক বছর ধরে ব্যবসা নেই বলে দাবি করেন ব্যবসায়িরা।

ফুলবাড়ীতে চামড়া ব্যবসায়ি শমসের আলী জানান, কোরবানী আকার ও প্রকার ভেদে গাভীর চামড়া ২০০ থেকে ৩৫০ টাকা এবং আড়িয়া গরুর চামড়া ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা দরে কিছু চামড়া কিনে আড়ৎদার কাবির হোসেনের কাছে বিক্রি করেছেন। ছাগলের চামড়ার ক্রেতা না থাকায় এক টাকা দিয়েও কেউ ছাগলের চামড়া কেনেনি।

এদিকে উপজেলার দক্ষিণ সাহাবাজপুর গ্রামের মাজহারুল ইসলাম নামের যুবক বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ৮০০ টাকায় ৬০ পিস ছাগলের চামড়া কিনে রবিবার সন্ধ্যায় স্থানীয় আড়তে আসেন চামড়াগুলো বিক্রি করতে। আড়তদাররা ছাগলের চামড়া কিনতে অনিহা প্রকাশ করায় ওই যুবক হতাশ হয়ে চামড়াগুলো ছোট যমুনা নদীতে ফেলে বাড়ী ফেরেন।

ফুলবাড়ীর চামড়া ব্যবসায়ী মালিক সমিতি সূত্রে জানা যায়, গত বছর সরকার যে দাম নির্ধারণ করেছিল তার চেয়ে প্রতি বর্গফুটে ১০ টাকা কমে ট্যানারি মালিকদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। তারা সিন্ডিকেট করে দাম নির্ধারণ করেন। বাধ্য হয়ে সেই দামেই চামড়া বিক্রি করতে হয়। তাই সরকার দাম বাড়ালেও আমাদের কোনো লাভ নেই। ট্যানারী মালিকরা যা নির্ধারণ করবেন তাই সঠিক এর বাহিরে কোন কিছু করার থাকে না। ট্যানারি মালিকদের কাছে টাকা বকেয়া থাকায় অনেকেই পথে বসেছেন। অনেকেই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন।

ফুলবাড়ী চামড়া ব্যবসায়ী কাবির হোসেন বলেন, ফুলবাড়ীতে বছরজুড়ে গরু ও ছাগলের চামড়া বেচাকেনা হতো। শুধু কোরবানির সময় এই বাজারে ১৫ থেকে ২০ হাজার গরু ও ২৫-৩০ হাজার পিস ছাগলের চামড়া বেচাকেনা হয়ে থাকে। গত বছরের তুলনায় এবার গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট বাড়ানো হয়েছে ৭ টাকা এবং খাসির চামড়া বাড়ানো হয়েছে ৩ টাকা। সরকার দাম নির্ধারণ করলেও তারা এই দাম কোনো দিনই পান না। ট্যানারি মালিকদের ইচ্ছামতো দামেই তাদেরকে চামড়া বিক্রি করতে হয়। ট্যানারি মালিকদের কাছে প্রায় ৭০ লাখ টাকা পাওনার কারণে পুঁজি হারিয়ে গেছে তার ব্যবসার। টাকা না পাওয়ায় ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ধুকে ধুকে চলছে ব্যবসা। যা যেকোন সময় অন্যদের মতো বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এক সময় ফুলবাড়ীতে লক্ষ লক্ষ টাকার চামড়া ক্রয় করত ব্যবসায়ীরা। গত ২ যুগ ধরে চামড়া ব্যবসায় ধস নেমে যাওয়ায় এখন তেমন ব্যবসা নেই। এছাড়া ট্যানারীর মালিকগুলির কাছে চামড়া ব্যবসায়ীরা বাকীতে চামড়া দেওয়ায় অনেকে পুঁজি হারিয়েছে। সে কারণে এখন চামড়া ব্যবসায় তেমন কোন জোরদার নেই।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments