রাসেল মিয়া ডিবির জালে ধরা
কখনো রাজনৈতিক নেতা আবার কখনো প্রলোভন দেখাতেন চাকরি দেওয়ার। ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে তা দেখাতেন নানাজনকে। এসবকে পুঁজি করে করতেন প্রতারণা। অবশেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অ্যাডিশনাল পার্সোনাল অফিসার (এপিও) পরিচয় দেওয়া মো. রাসেল মিয়া নামে সেই যুবককে ধরেছে গোয়েন্দা পুলিশ। সোমবার রংপুর কোতয়ালী থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।ডিবি বলছে, গ্রেপ্তার হওয়া রাসেল নিজেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চাকরির প্রলোভন, বিভিন্ন রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান, পুলিশে নিয়োগসহ সব কাজের কাজী বনে যায়।ঢাকার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের পার্টি অফিসে বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে নিজের ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করতেন। এই পরিচয়ে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে বদলী, এলাকার মামলা নিষ্পত্তি সংক্রান্তে তদবির করেও বিপুল পরিমাণে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে বিস্তারিত জানান মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।এসময় গোয়েন্দা সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ, এডিসি মোহাম্মদ জুনায়েদ আলম সরকার ও ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিমের এডিসি মহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।হারুন অর রশিদ জানান, রাসেল মিয়াকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি তার কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন ও ২টি সিম, ১৬টি ভিজিটিং কার্ড (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়ধারী) ও একটি সিল (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয়ধারী) উদ্ধার করা হয়।ডিবি প্রধান বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ভিজিটিং কার্ড তৈরি করে প্রতারণা করে আসছে বলে অভিযোগ পায়। এছাড়া এক ভুক্তভোগী গতকাল সোমবার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি প্রতারণার মামলা করেন। মামলাটি তদন্তকালে প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পরে এসব সব বিষয় বেরিয়ে আসে।’হারুন অর রশিদ বলেন, ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ অফিস নেতাকর্মীদের জন্য উন্মুক্ত থাকার সুযোগে রাসেল ধানমন্ডি পার্টি অফিসে আসত। ফলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরে কৌশলে মন্ত্রী, এমপি ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে ছবি তুলে সেই ফেসবুকে আপলোড করে। পার্টি অফিসে ছবি তুলে সে ছবি তার নিজ ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করে। তার আপলোড করা ছবি ব্যবহার করে নিজ এলাকাসহ রংপুর জেলার একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে সমাজে নিজেকে পরিচিত করে। এছাড়াও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এপিও পরিচয় দিয়ে ভুয়া ভিজিটিং কার্ড বানিয়ে তা সবার মাঝে বিতরণ করত।’ভিআইপিদের সঙ্গে ছবি থাকলেই যে কারোর সাথে সম্পর্ক করা বা লেনদেন না করার পরামর্শ দিয়ে ডিবি প্রধান বলেন, এ ধরনের প্রতারণা এড়াতে এমপি, মন্ত্রী ও সমাজের বিশিষ্টজনদের ঘনিষ্ঠ পরিচয়ে কারো সঙ্গে লেনদেন হতে বিরত থাকতে হবে।
Comments