সারাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ টাকা কেজি চালের বরাদ্দে বাদ পড়েছে অনেক অসচ্ছল ও অসহায় পরিবার।

জসীম উদ্দিন ইতি (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণে সচ্ছল পরিবারকে সুবিধা দিতে গিয়ে তালিকা থেকে বাদ পড়েছে অনেক অসচ্ছল ও অসহায় পরিবার।  
মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নে সরকারের খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি চালের আগের কার্ডধারী ২শ জনেরও বেশি সুবিধাভোগীর নাম বাদ দিয়েছেন চেয়ারম্যান। এ অভিযোগ করেছেন ইউনিয়নের বাদপড়া সুবিধাভোগীরা। যাদের মধ্যে রয়েছেন শ্রমিক, মজুর, প্রতিবন্ধী ও বিধবা নারীও।
দেখা যায়, নতুন তালিকায় থাকা তপন নামক সুবিধাভোগীর বসবাস ছাদপিটা ফাউন্ডেশনের বাড়িতে। নিজের বড় ব্যবসা থাকার কথা নিজ মুখেই বেশ গর্বের সাথে স্বীকার করেন তিনি।
এছাড়াও তালিকার অনেক সুবিধাভোগী নিয়ম বহির্ভূতভাবে সরকারের খাদ্য কর্মসূচীর আওতায় ১০ টাকা কেজি চালর সুবিধা ভোগ করছে।  
এই বিষয়ে শীবগঞ্জ বাজারে দলবদ্ধভাবে অভিযোগ করেছেন চাতাল শ্রমিক শহিদুল ইসলাম, মজুর শাহেদ আলী, মামুন, বাসুদেব সহ অনেকে। এছাড়াও অভিযোগ রয়েছে প্রতিবন্ধী সুমনের পরিবারেরও।  
চাতাল শ্রমিক শহিদুল ইসলাম বলেন, ৬ মাসের বেশি সময় ধরে কার্ডের মাধ্যমে ১০ টাকা কেজির চাল কিনে আসছি। এবারে নতুন তালিকায় আমার নাম বাদ দিয়েছে। বলেছে আর চাল দিবে না। কার্ডটাও নিয়ে রেখে দিয়েছে।  
তিনি বলেন, রোদে পুড়ে চাতালে কাজ করে ৪শ টাকা পাই। আবার প্রতিদিন কাজ হয়না। আমাকে যদি চেয়ারম্যান বিত্তবান বলেন তাহলে আমার কিছু করার নাই।
মজুর শাহেদ আলী। এ বৃদ্ধ জানালেন, এর আগেও তাকেসহ অনেক গরীব মানুষের নাম বাদ দিয়েছিলো। তখন তারা চেয়ারম্যানের প্রতি চাপ সৃষ্টি করে নামগুলো বহাল রেখেছিলেন। কয়েকমাস বাদে আবারও নাম বাদ দিয়েছে।  
তিনি বলেন, আমরা গরীব মানুষ। প্রতিমাসে অন্তত চালে কিছুটা সাশ্রয় হতো। এখন আর সেটাও পাবো না। এটা আমাদের প্রতি চেয়ারম্যানের জুলুম।  
আলমামুন বলেন, আমরা কি অপরাধ করেছি। যদি গরীবের সংখ্যা কম হয় তবে বরাদ্দ বাড়িয়ে আনতে পারতেন চেয়ারম্যান। আমাদের বঞ্চিত করে তিনি যা করেছেন, তা নিয়মের মধ্যে পড়ে কিনা আমার জানা নাই। আমি দাবি রাখছি যেন চেয়ারম্যান এই দুই শতাধিক গরীব মানুষের কার্ড ফিরিয়ে দেন।  
প্রতিবন্ধী সুমনের পরিবারের একজন বলেন, আমাদের কার্ড ছিলো। ১০ টাকা কেজি চাল সংগ্রহ করতাম। কিন্তু আমাদের প্রতিবন্ধী সুমনের কার্ডটাও রেখে দিয়ে নাম বাতিল করা হয়েছে। শুনেছি আমরা আর চাল পাবো না।  
চেয়ারম্যানের এমন কর্মকান্ডে বিস্তর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সচেতন মহল। নাম না প্রকাশের শর্তে এক রাইসমিল ব্যবসায়ী বলেন, আমার চাতালে কাজ করেন গরীব মানুষরা। প্রতিদিন কাজও থাকেনা। তাদেরকে বিত্তবান বলে কার্ড বাতিল করে তার নির্বাচনী কর্মীদের তালিকাভুক্ত করেছেন তিনি। এছাড়াও দলীয় নেতাকর্মীদের কার্ড করে দিয়েছেন। এমন মন মানসিকতার একজন চেয়ারম্যানের নিজেকে জনগণের সেবক দাবি করাটা অযৌক্তিক।  
জামালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ বলেন- নির্দেশনা মোতাবেক যারা সচ্ছল, যারা ভিজিডি সুবিধা পায় এবং যারা মারা গেছেন তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে ভুল করে কিছু বিত্তবান এই তালিকায় আসতে পারে। এটা দ্রুতই সমাধান করা হবে।
এ বিষয়ে ইউএনও আবু তাহের মো. শাসুজ্জামান বলেন, আমরা চাই সরকারের দেওয়া সুবিধায় অসচ্ছল ব্যক্তিরা যেন অগ্রাধিকার পান। ভোক্তাদের নতুন তালিকা হালনাগাদের সময় কোন অসচ্ছল ব্যক্তি বাদ পড়ে গেলে বা সচ্ছল পরিবারের নাম যোগ হলে তা সংশোধনের সুযোগ রয়েছে৷

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments