September 08, 2024
রাজনীতি

রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপির কমিটি নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, তৃণমূলে ক্ষোভ

 নেতাকর্মীদের খোঁজ নেয় না শীর্ষ নেতারা
রংপুর প্রতিনিধি॥
সম্মেলন ছাড়াই রংপুর মহানগর ও মহানগর বিএনপির পূর্বের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে সম্মেলন ছাড়াই নতুন করে আবারও রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপি’র কমিটি ঘোষণা করে দলটির কেন্দ্রীয় কমিটি। দীর্ঘ ৫ বছর কমিটি ঘোষণার পর গুটি কয়েক নেতাকর্মী খুশি হলে দলটির ভিতরে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। মহানগর ও জেলা কমিটির সদস্যসহ তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। পদ বঞ্চিত অনেকেই নিষ্কিয় হয়ে পড়েছেন। কেউবা দলীয় কার্যাক্রমে অংশ নিচ্ছে না। সব মিলিয়ে ওয়ার্ড, থানা ও উপজেলাসহ জেলা এবং মহানগর পর্যায়ে তেমন একটা সাড়া ফেলতে পারেনি দলটির নতুন কমিটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও অনেক শীর্ষ নেতা কর্মীর খোঁজ তো দুরের কথা তাদের ফোনও ধরে না।
একারণে অনেকেই এই কমিটির বাতিল করে সম্মেলন বা কেন্দ্র থেকে নতুন করে আবারও কমিটি দেয়ার দাবি করেন।
গত ১৫ এপ্রিল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রংপুর জেলা বিএনপির কমিটিতে সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং আনিছুর রহমান লাকুকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। জেলার ৩৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করা হয়েছে। এদিকে, সামসুজ্জামান সামুকে আহবায়ক ও অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন-নবী ডনকে সদস্য সচিব করে ৪২ সদস্য বিশিষ্ট রংপুর মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে। নতুন এই কমিটিতে মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম মিজু সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক এবং জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রইচ আহমেদ যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে। আগামী ৩ মাসের মধ্যে সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
এনিয়ে দলের মধ্যে চরম বিশৃংঙ্খলা দেখা দেয়। তৃণমূল থেকে শুরু করে মহানগর ও জেলা কমিটির অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ দলের কার্যক্রমে অনুপস্থিত থাকছেন। নিষ্কিয় হয়েছেন অনেকেই। সবমিলিয়ে মহানগর ও জেলা বিএনপির দলীয় কর্মসূচী গুলো হাতে গোনা কয়েকজন সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে দেখা গেলেও অধিকাংশ সদস্য থাকছেন অনুপস্থিত। যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের অসদ আচরণেও কেউ কেউ পার্টি আফিসে আসেন না।এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে অর্থিক বিষয়াদি নিয়ে শীর্ষ পদের নেতাদের মনমালিন্যও রয়েছে। আর্থিক সংকটও দেখা দিয়েছে। দলের নেতাকর্মীদের যাতায়াত ভাড়া তো দুরের কথা চা নাস্তা পর্যন্ত খাওয়ানো হচ্ছে না।
এদিকে তৃণমূল পর্যায়ে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর সাথে কথা হলে অনেকেই নতুন আহবায়ক কমিটির বিষয়ে অখুশি ভাব প্রকাশ করেছেন। অনেকে মনে করছেন এতে দলীয় কোন্দল বাড়তে পারে। সেই লক্ষণ সত্যিই প্রমানিত হয়েছে। কারণ মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কাকসুর জিএস শহিদুল ইসলাম মিজুসহ কাঙ্খিত পদ বঞ্চিত দলের বৃহৎ অংশ নিষ্কিয় হয়ে পড়েছেন। তারা দলের কোন কর্মসূচীতে অংশ নিচ্ছে না।
তবে দলের একটি সূত্র জানায়, রংপুর বিএনপিতে গ্রুপিং রাজনীতি শুরু করেছেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু। তারা নিজের স্বার্থের কারণে দলটির রংপুর জেলা ও মহানগরসহ অধিকাংশ স্থানে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। তিনি নিজের পছন্দের লোকদের কাঙ্খিত পদ দিয়ে রংপুর বিভাগীয় নগরীর রাজনীতি নিজের দখলে রেখেছেন। এছাড়াও তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল এর অনুসারীদের তিনি কোনঠাসা করে রেখেছেন। একারণে দলে বিদ্রোহ প্রকাশ রুপ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৬ মে কোনো সম্মেলন ও কাউন্সিল ছাড়াই রংপুর জেলা ও মহানগর বিএনপির কমিটি অনুমোদন করা হয়েছিল। ওই কমিটিতে সাইফুল ইসলামকে সভাপতি ও রইছ আহম্মেদকে সাধারণ সম্পাদক করে রংপুর জেলা বিএনপি এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেনকে (প্রয়াত) সভাপতি ও শহীদুল ইসলাম মিজুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর বিএনপি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি নিয়ে কোন্দল প্রকাশ্য রুপ নিয়েছিল।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments