মুক্তমত

পুলিশকে যারা ঘৃনা বা তুচ্ছ মনে করেন তাদের বলছি ।। মোল্লা তানিয়া ইসলাম তমা ।।

ও পুলিশ ভাই তোমাকে
ধন্যবাদ জানাই,
জানি তুমি করেছো শপথ
যতই আসুক আপদ বিপদ
দেশকে তুমি রাখবে নিরাপদ ।
তুমি নির্ভীক তুমি যে দেশপ্রেমীক
তুমি যে নিদ্রাহীন
তবুও শীড় উন্মোচিন
তুমি আজ দেশের জন্য
নিজেকে করেছো বিপন্ন
তাই মহামারীর দুর্দিনে আজ
সচেতনতার করছে যে কাজ
খাবার নিয়ে ছুটছো তুমি
হাসপাতালে নিচ্ছ তুমি
লাশের বোঝা ও বইছো তুমি
তোমায় স্যালুট হাজারবার
করোনা এসে দেখিয়ে দিল
পুলিশ বন্ধু সকলের,
দেশের জন্য জীবন গেলো
কত পুলিশের।
সালাম তোমায় হাজার সালাম
দিচ্ছে জনগণ
নিজের দিকে খেয়াল রেখো
এই নিবেদন ।-
 করোনা মহামারীর সময় উপরোক্ত কথা গুলো কবিতা আকারে একজন লিখেছিল । সেই থেকে ভাবছিলাম পুলিশ নিয়ে আমিও কিছু লিখব । কিন্তু সময়ের কারনে লিখা হয়নি । আজ কিছু লিখব তাদের উদ্দেশে, যাহারা পুলিশ কে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন । পুলিশ জনগণের বন্ধু । আমি বলব আসলেই তারা জনগণের বন্ধু । পুলিশের ভাল কাজ গুলো আমরা কখনো চোখ মেলে দেখিনা । খারাপ দিকটা নিয়েই সব সময় আলোচনার ঝড় তুলি । আর যারা সাংবাদিকতা করেন তারা মাঝে মাঝে খবরের পাতায় পুলিশের ভাল ও খারাপ দিক প্রথম পৃষ্ঠায় তুলে ধরেন । হা কিছু কিছু পুলিশ কর্মকতা আছেন যাদের কারণে বদনাম ছড়ায় পুরো পুলিশ ডিপার্টমেন্টের উপর । তবে দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন প্রয়োগ করা হয় ডিপার্টমেন্টের পক্ষ হতে । আর বর্তমানে অনলাইনে কিছু হলেই বলে অমুক পুলিশ এর বিচার চাই । আসল ঘটনা না জেনে অনেকেই পুলিশ এর বিরুদ্ধে দেয় ফেইসবুক স্টেটাস । আপনি যখন অন্যায় করবেন তখন পুলিশ আপনার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যাবস্তা নিলে আপনি বলেন পুলিশ খারাপ তাহার চৌদ্দ গুষ্ঠি উদ্ধার করেন । আর আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা প্রতিপক্ষ যদি সঠিক বিচার না পান তাহলে সে ও বলে পুলিশ খারাপ । তাহলে পুলিশ যাবে কেথায়। তারপর আবার মামা খালু চাচা আছেই তাদের কথা মানতে হয়। আছে তাদের অফিসিয়াল রোলস । একমাত্র বাংলাদেশের পুলিশ আনলিমিটেড ডিউটি করে। যা বিশ্বে আর কোন দেশে নেই । একমাত্র পুলিশ যাদের ঝুকি ভাতা নেই। ওভারটাইম নেই । মালয়েশিয়ার এক পুলিশ এর সাথে আমার মাঝে মধ্যে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ হয় । তাদের বেসিক ৮ ঘন্টা পর বাকী যত ঘন্টা ডিউটি করবে তা অটি হিসাবে গন্য হয় । তা মাস শেষে বেতনের সাথে সংযোগ হয়ে আসে । তারপর ঝুকি ভাতা সহ অন্যন আধুনিক সকল সুযোগ সুবিধে তাদের আছে । তাহলে আমাদের দেশের পুলিশ কেন পাবে না । আমি বলি পুলিশ কে তার আইন অনুযায়ী কাজ করতে দিন। পুলিশ এর কাজে কোন দিন বাধা দিবেন না। তাহলে সঠিক বিচার পাবেন । আমার মনে পড়ে আমি যখন পি এস সিতে এপ্লাস পেয়ে ছিলাম তখন সর্বপ্রথম পুলিশের কয়েক সদস্য আমাদের স্কুলে এসে আমাকে মিষ্টি ও ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে ছিল । আমি এখন অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী । আর সেই থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে প্রায় ২০ বারের অধিক বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে পুস্কার পেয়েছি । আমার ও আমার পরিবারের যে কোন ধরণের সমস্যায় পুলিশ অফিসার থেকে শুরু করে কন্সটেবল সহ সবাই সহযোগীতার হাত বাড়ীয়ে দেয় । আমি পত্র পত্রিকায় লেখালেখি করি বলে নয় সাধারণ মানুষ হিসাবে । আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী একটি ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান । দেশের অভ্যন্তরীণ কাজের পাশাপাশি জাতিসংঘ শান্তি মিশন পর্যন্ত কাজ করছে বেশ সফলভাবে । মানবসম্পদ ও জীবনের নিরাপত্তা প্রদান, বিভিন্ন উদ্ধার অভিযান, নানাবিধ ক্ষেত্রে সংঘটিত অপরাধ দমন, অপরাধী শনাক্তকরণ, জল ও স্থল সীমানার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, চোরাচালান রোধ, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার রোধ, মানবপাচার রোধ প্রভৃতি কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা । দিন-রাত, রোদ-বৃষ্টি-ঝড়, ঈদ-পূজা-পার্বণ প্রভৃতি সময়ে বিরামহীন ভাবে দেশসেবায় নিয়োজিত আছেন এই বাহিনীর প্রতিটি সদস্য। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তারক্ষা, মানুষের কুপ্রবৃত্তি দমনে সচেতন করে তোলা প্রভৃতি ক্ষেত্রেই বিরামহীনভাবে কাজ করছে এই বাহিনী। অথচ যে বাহিনী এত নিষ্ঠা ও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে সেই বাহিনীর বিরুদ্ধে কোনো একটি নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হলে কিংবা নেতিবাচক কোনো ইঙ্গিত পাওয়া গেলেই মনে হয় যেন আগুনে ঘি পড়েছে । কিছু মানুষ যেন সবসময় অপেক্ষা করতে থাকেন, কখন তিনি বা তারা এই পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে কথার ঝুড়ি নিয়ে বের হবেন । অথচ যে বা যিনি পুলিশ সদস্যদের শুধু দোষ খুঁজে বেড়ান, সেই ব্যক্তি বা তিনিই কিন্তু আবার নানা বিষয়ে ও নানা সময়ে পুলিশ বাহিনীর সহায়তার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন । পরিবারের কোনো সদস্য কিংবা পরিচিত জন যদি পুলিশ বাহিনীর সদস্য থাকেন, তখন অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ বাহিনীর ওই সদস্যকে নিয়ে গর্ববোধ করতে পছন্দ করেন । পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে নেতিবাচক আলোচনা করা যেন এখন আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে । আবার অনেকে হয়তো ভাবেন যে, এই বাহিনীর নানা নেতিবাচক কর্মকা- তুলে ধরতে পারলে সহজেই হিরো বনে যাওয়া যাবে । কোনো পুলিশ সদস্য যদি নেতিবাচক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েন তাহলে অবশ্যই তার সমালোচনা হবে । বিচার দাবি করা হবে । বিচারও হবে । কিন্তু যে বিষয়টি নিয়ে পুলিশ বাহিনীকে জড়ানো হবে, সে বিষয়টির কার্যকারণ সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা-সমালোচনা করা বাঞ্ছনীয়। কেননা সঠিকভাবে কার্যকারণ না জেনে কোনো পুলিশ সদস্য সম্পর্কে ঢালাও মন্তব্য করলে এই বাহিনীর যেমন মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়, ঠিক তেমনি তা দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ করে । বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে প্রায় দেড় লাখের উপরে সদস্য রয়েছেন । দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা বিধানে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর এসব সদস্য মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন । এই বাহিনীর সদস্যদের নানা প্রতিকূল পরিবেশের মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয় । প্রয়োজনের তুলনায় লোকবল কম থাকায় এই বাহিনীর সদস্যদের ১২/ ১৪ ঘণ্টা, কখনো ১৮ বা ২৪ ঘণ্টাও কাজ করতে হয় । বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার অনুপাতে এক হাজারের বেশি মানুষের জন্য একজন পুলিশ সদস্য রয়েছে । আনুপাতিক হারে এই অল্প সংখ্যক পুলিশ সদস্য রাত-দিন এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তবে হ্যাঁ, এভাবে কাজ করতে গিয়ে মাঝে মধ্যে বেশকিছু বিতর্কিত কাজও করে থাকেন বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর কতিপয় সদস্য । কতিপয় সদস্য আবার নানা সময়ে কিছু অনিয়মের সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন কিংবা নিজেদের সম্মুখে ঘটা ঘটলেও চুপ থাকেন । এরকম অনেক ছবি, নানা সময়ে পত্রপত্রিকায় দেখা গেছে। যেমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন ছাত্র সংগঠনের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয় তখন দেখা যায় পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করে থাকে, কিংবা পুলিশের সম্মুখে নানা সময়ে ছাত্র সংগঠনের নেতা অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছেন কিন্তু ওই সদস্য দেখেও না দেখার ভান করছেন, এমন ছবিও প্রকাশিত হয়েছে । এসব ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নানা সময়ে ব্যবস্থাও নেওয়া হয় । তবে ব্যবস্থা নেওয়ার এসব খবর ফলাও করে প্রকাশিত হয় না কিংবা টক অব দ্য টাউনও হয়ে ওঠে না । বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রয়েছে এই বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে পুলিশের বাঙালি সদস্যগণ শত্রুর মোকাবিলা করেন । পুলিশের বাঙালি সদস্যদের দাবির মুখে রাজারবাগ পুলিশ লাইনস অস্ত্রাগারের সামনে পাকিস্তানের পতাকা নামিয়ে উত্তোলন করা হয় বাংলাদেশের পতাকা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তখন বুঝতে পারে যে, বাঙালি দমনের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়াবে পুলিশ । তাই তারা ২৫ মার্চ কাল রাতে প্রথম আক্রমণ করে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসসহ পুলিশের নানা স্থাপনা । আর এই প্রতিরোধ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে শহীদ হন পুলিশের অনেক বীর সদস্য । দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে প্রায় ১৪ হাজার পুলিশ সদস্য মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন । ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি পুলিশ সদস্য অসীম বীরত্ব প্রদর্শন করে শাহাদাত বরণ করেন । নিজের জীবনের তোয়াক্কা না করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ৩ জন বীর বিক্রম এবং ৩ জন বীর প্রতীক পদকে ভূষিত হন । এ ছাড়াও আরো নানাভাবে পুলিশ বাহিনী আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশেও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী দক্ষতা ও সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন । নানা সময়ে দেশের বৃহৎ জঙ্গি সংগঠনের আস্তানা ভেঙে দিয়েছে । সারা দেশে নানা সময়ে গণতন্ত্রের লেবাসধারীদের মুখোশ উন্মোচন করেছে এই পুলিশ বাহিনী । স্বাধীন বাংলাদেশে তখন প্রায় ৩৪ হাজার পুলিশ সদস্য ছিল । কিন্তু বর্তমানে এই সংগঠনের ব্যাপ্তি ব্যাপকভাবে বেড়েছে । সম্প্রতি পুলিশ প্রশাসনে একটি শক্তিশালী কাঠামোতে দাঁড় করানোর সরকারি প্রচেষ্টায় পুলিশের জনবলও ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে । দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য এই বাহিনী নানাভাবে নানা সময়ে কাজ করে যাচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনসংখ্যার অনুপাতে আমরা যদি বিবেচনা করি তাহলে দেখা যাবে পুলিশ বাহিনী তাদের মেধা, যোগ্যতা ও দক্ষতার বলেই এত বিপুল সংখ্যক মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন । জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বাধিক পুলিশ প্রেরণকারী দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশ পুলিশের পেশাদার পুরুষ ও নারী সদস্যরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অত্যন্ত সততা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন, যা দেশের জন্য বয়ে আনছে বিরল সম্মান। প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৯৮৯ সালে মিশনে দায়িত্ব পালন শুরুর পর থেকে ২০টি দেশে ১৬ হাজারেরও বেশি পুলিশ সদস্য অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়াও আরো নানাভাবেই আমাদের পুলিশ সদস্যগণ দেশের সার্বিক উন্নয়ন ও কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। তাই আমাদেরও উচিত জাতির অহংকার এই বাহিনীকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখা । আমি কামনা করি সব পুলিশ কর্মচারী যিনি যেখানেই থাকুন না কেন, সবাই যেন সৎ হওয়ার এবং মানুষকে ভালোবাসার সুযোগ পান। পুলিশ হবে মানুষের সেবক, শাসক নয় । আমি পুলিশ বাহিনীর ভাই ও বোনদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানিয়ে বলছি, একদিন বাংলার মানুষ সুখী হবে, এ বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তার জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে । সৎ পথে থাকতে হবে ।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments