সারাদেশ

বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির ৫৪৫জন শ্রমিক চাকরি হারিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছে

বড়পুকুরিয়া, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে সিএমসি, এসএমসি ও জিএমসি’র আওতায় কর্মরত ৫৪৫ জন শ্রমিক তাদের চাকুরি হারিয়ে মানবতার জীবন যাপন করছেন।
২০১৯ইং সালে ১৭ মার্চ মহামারী করোনা ভাইরাস শুরু হওয়ার পর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে কর্মরত খনি শ্রমিকদের জীবন যাত্রার মান ক্রমগতভাবে নিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। বর্তমানে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ভূগর্ভে ১হাজার ৪৫ জন শ্রমিক কর্মরত আছে। তারা বিভিন্ন শিফট্ এ ভূগর্ভস্থ স্থলে কাজ করছেন। এর মধ্যে চীনা কোম্পানি করোনা ভাইরাস মুক্তকল্পে কোরাইনটাইনে রাখার পর ৪ ধাপে শ্রমিকদেরকে কাজে যোগদান করান, এর মধ্যে কখনও ১৪ বা কখনও ১৫ দিন রেখে কাজে পাঠাচ্ছেন। প্রথম ধাপে ১মাস ১৫দিন, দ্বিতীয় ধাপে ১মাস, তৃতীয় ধাপে ২০ দিন, ৪র্থ ধাপে ১০/১৫দিন কাজ করাচ্ছেন। পূর্বে যারা কাজ করছেন তাদেরকেই রি-সাইকেল ভাবে কাজ করাচ্ছে। বর্তমান বাড়ীতে বেকার হয়ে পড়ে আছেন প্রায় শ্রমিক। আবার জীবিকার তাগিদে অনেকেই রিক্সা ভ্যান বা অন্যের বাড়ীতে কাজ করে তারা তাদের জীবিক নির্বাহ করছেন। চুক্তিতে কথা ছিল চীনা কোম্পানির সাথে যাদেরকে বাহিরে রাখা হয়েছে তাদেরকে ক্রমনয়ে যোগদান করা হবে। কিন্তু তারা শ্রমিকদের সাথে সেই কথামত কাজ করছে না। চীনা কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ইে চুক্তি ভঙ্গ করে শ্রমিকদের সাথে খারাপ আচর করছেন। কাজ না করলে খনির শ্রমিকদেরকে কোন বেতন দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকদেরকে কোরাইনটাইনে ১০ দিন রাখলেও তাদেরকে খনি কর্তৃপক্ষ যে খাবার দেন তাও নি¤œমানের। এই অবস্থা ২০১৯ ইং সাল থেকে চলে আসছে। প্রত্যেক শ্রমিককে বর্তমান রেশনের পরির্বতে ১৪৯০ টাকা প্রদান করছে খনি কর্তৃপক্ষ। খনির বাহিরে ৫৪৫জন শ্রমিক বেতন ভাতা পাচ্ছে না। তারা শুধু পাচ্ছে রেশনের পরির্বতে ১৪৯০টা। যাদের পরিশ্রমে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ভূগর্ভ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার কয়লা উত্তোলন করা হচ্ছে তাদের কে খনি কর্তৃপক্ষ ও চীনা কোম্পানি কোন সুযোগ সুবিধা প্রদান করছে না বরং তাদের সাথে করা হচ্ছে খারাপ আচরণ। এটাই কি তাদের প্রাপ্য?
এই বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন এর সাথে কথা বললে তিনি জানান, খনির শুরু থেকে আমরা কাজ করে আসছি। গত ২যুগ ধরে শ্রমিকদেরকে জিম্মি করে চীনা কোম্পানি শ্রমিকদের কাজ করাচ্ছেন। তারা শ্রমিকদের কোন দাবি দাওয়া মানছেন না। আন্দোলন করতে গেলে চীনা কোম্পানি ও খনি কর্তৃপক্ষ উল্টো শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্র শুরু করেন। বর্তমান কিছু শ্রমিক আন্দোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এ পর্যন্ত প্রায় দাবি দাওয়া নিয়ে ৪০ বারেরও বেশি আন্দোলন করা হয়েছে, ফলাফল শূণ্য।
শ্রমিক সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ নূর ইসলাম জানান, বহু শ্রমিক চাকুরি হারিয়ে পথে বসেছে। এদের ভ্যাগে আর চাকুরি হবে কী না এই সংসয় রয়েছে। তাদের পরিবার পরিজনরা অনাহারে অদ্যহারে দিন যাপন করছে। অনেকের ছেলে মেয়েদের কে অর্থের অভাবে লেখাপড়া করাতে পারছে না। শ্রমিকরা ভেবেছিল এখানে কর্মসংস্থান হওয়ায় তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। কিন্তু এখানেও ফলাফল শূন্য। শ্রমিকদের কেউ একটি প্রভাবশালী মহল ব্যবহার করছেন। ব্যবহার করা শেষ হলে তারা ফায়দা লুটে কেটে পড়েন।
এ ব্যাপারে কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ সাইফুল ইসলাম এর সাথে গতকাল শনিবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বহুবার চেষ্ঠা করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments