সারাদেশ

পীরগঞ্জে ২ সতীনের দ্বন্দ্বে স্বামী দেলদার হত্যা মামলার চার্জশিট প্রদান

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি ঃ
পীরগঞ্জে দুই সতীনের দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে স্বামী দেলদার আলী (৬৫) হত্যার ঘটনায় পুলিশ গত সোমবার ৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে। গত ৬ জুন দুপুরে উপজেলার টুকুরিয়া ইউনিয়নের টুকুরিয়া বাজারে ওই সংঘর্ষ হয়। ঘটনাটির পর থেকেই ছোট স্ত্রী রেখা তার বাবার বাড়ী টুকুরিয়া গ্রামে বসবাস করছেন। পুলিশ ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে নিহতের বড় স্ত্রী এবং তার ছেলেকে গ্রেফতারের পর আদালতে প্রেরন করেছিল।

মামলা সুত্রে জানা গেছে, পীরগঞ্জের পার্শ্ববর্তী মিঠাপুকুর উপজেলার দুর্গামতি গ্রামে বাসিন্দা দেলদার আলী। তিনি প্রথম স্ত্রী আনোয়ারা বেগম থাকাবস্থায় প্রায় ২৪ বছর আগে পীরগঞ্জের টুকুরিয়া গ্রামের রেখা বেগমকে বিয়ে করে দুর্গামতি গ্রামে পৃথক বাড়ী করে দেন। এ নিয়ে দু'সতীন এবং সন্তানদের মাঝে জমিজমা নিয়ে বিরোধ বাঁধলে দেলদার তার প্রায় ১৫ বিঘা জমি স্ত্রী, সন্তানদের নামে দলিল করে দেন। জমিজমা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে দেলদার ঢাকায় রিক্সা চালানো শুরু করেন। গত ২৭ রমজান ছোট স্ত্রী রেখার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে বাড়ীঘর ভাংচুর করে। খবর পেয়ে দেলদার ঢাকা থেকে এসে রেখার বাড়ীতে অবস্থান করেন। এদিকে বড় স্ত্রী তার বাড়ীতে স্বামীকে জোরপূর্বক নিয়ে গিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। একপর্যায়ে দেলদার তার ছোট স্ত্রী রেখাকে নিয়ে রেখার বাবার বাড়ী টুকুরিয়া গ্রামে চলে আসেন।

গত ৬ জুন স্বামীকে বাড়ীতে নেয়ার জন্য বড় স্ত্রী আনোয়ারা, তার ছেলে আনিছার রহমান বাটুলকে নিয়ে রেখার গ্রামের বাড়ী টুকুরিয়ায় আসেন। এ সময় দেলদারকে ভ্যানে তুলতে ব্যর্থ হলে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি মারে। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলেই দেলদার নিহত হন। ওই ঘটনায় ছোট সতীন রেখা তার সতীনের ছেলে আনিছার রহমান বাটুল, বড় সতীন আনোয়ারা বেগম এবং ভ্যান চালক মমদেল হোসেন কে আসামি করে পীরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বড় সতীন, তার ছেলে আনিছার রহমান বাটুলকে গ্রেফতার করে।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপসহকারী পরিদর্শক (এসআই) প্রদীপ কুমার বর্মন গত সোমবার ওই ৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেছি। মামলার বাদী রেখা বেগম বলেন, আমার বাড়ীতে আসামিরা দরজা-জানালা ভাংচুর করে ক্ষতি করেছে। আমি বিভিন্ন সমস্যার ব্যাপারে একাধিক মামলা ও অভিযোগ করেছি। তার বড় সতীন আনোয়ারা বেগম বলেন, আমার স্বামীকে হত্যা করিনি। তিনি হার্টএ্যাটাকে মারা গেছেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, মামলাটি নিবিড়ভাবে তদন্তের পর ৩ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেছি।রংপুর পুলিশের ডি সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান বলেন, মামলাটির বাদী রেখা বেগম যেসব অভিযোগ করে, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে তার সত্যতা পাইনি। রেখা বেগম তার স্বামীর বাড়ীতে বসবাসে কেউ বাঁধা বা হুমকি দিলে তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments