অপরাধ

মাদারীপুর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে জাটকা

জাহিদ হাসান, মাদারীপুর প্রতিনিধি:
মাদারীপুরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ভেঙে বিভিন্ন হাট বাজারে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে জাটকা। জাটকা ইলিশ পরিবহন, বিক্রি ও বাজারজাতকরণ নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের নজরদারির অভাবে জেলার বিভিন্ন আড়তে জাটকা বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব জাটকা বিক্রি বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে ইলিশ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল।

জেলা মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জাটকা ইলিশ রক্ষায় গত ১ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত নদ নদীতে জাটকা মাছ ধরা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এই ৮ মাস জাটকা পরিবহন, বিক্রি ও বাজারজাতকরণও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তবে বড় আকারের ইলিশ ধরতে কোনো বাধা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিদিন রাতে মাদারীপুরের আড়িয়াল খাঁ ও পদ্মা নদী থেকে প্রতিনিয়ত জেলেরা জাটকা ধরে জেলার বিভিন্ন আড়ত ও হাট-বাজারে বিক্রি করছেন। এছাড়াও শরীয়তপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, বরগুনাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে ট্রাক, নসিমনে করে প্রতিনিয়ত ইলিশের পাশাপাশি জাটকা নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। এসব জাটকা শহরের পুরান বাজার, ইটেরপোল, মস্তফাপুর এলাকার মাছের আড়তে নিয়ে আসার পরে মাছ বিক্রেতারা পাইকারি কিনে নিয়ে জেলার মিয়ারহাট, টেকেরহাট, কবিরাজপুর, শ্রীনদী, শিবচর, উৎরাইল, কাওড়াকান্দি, ভ‚রঘাটা, গোপালপুর, খাসেরহাট, সাহেবরামপুর, ডাসার, শশীকরসহ জেলার ছোট-বড় হাট বাজারে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মাছ বিক্রেতা বলেন, জাটকা আড়তে আসে বলেই আমরা কিনে বিক্রি করি। এখানে আমাদের দোষের কিছু নেই। আড়তদাররা যদি জাটকা আনা বন্ধ রাখেন তাহলে আমরাও জাটকা ইলিশ বিক্রি বন্ধ রাখবো।

সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ইলিশ কেন বিক্রি করা হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে মাদারীপুর জেলা পুরান বাজার মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোসলেম মাতুব্বর বলেন, আমি বিষয়টি জানি না। হয়তো ২-১ জনে বিক্রি করতে পারে। বড় ১ মণ মাছের সাথে চার পাঁচ কেজি জাটকা মাছ থাকতে পারে।

মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সভাপতি ইয়াকুব খান শিশির বলেন, ইলিশ মাছ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই জাতীয় সম্পদ রক্ষায় জাটকা ইলিশ রক্ষা করতে হবে। যদি জাটকা আহরণ ও পরিবহন রোধ করা না যায়, ভরা মৌসুমে ইলিশ মাছের সংকট দেখা দিবে। আমি মনে করি প্রশাসনের এ বিষয়ে দ্রæত পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তপন মজুমদার বলেন, আমরা জেলার নদী ও স্থল পথে জাটকা ইলিশ আহরণ ও পরিবহন বন্ধ করতে কাজ করছি। তবে কেউ যদি এরমধ্যেও জাটকা ইলিশ আহরণ বা বিক্রি করে আমাদেরকে তথ্য দিয়ে সাহায্য করবেন। আমরা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

মাদারীপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা বলেন, জাটকা ইলিশ ধরা ও বিক্রি বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমাদের অগোচরে জাটকা বিক্রি করছে। তাছাড়াও জাটকা রক্ষার নজরদারি আরও বাড়ানো হবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাইনউদ্দিন বলেন, জাটকা ইলিশ বিক্রির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আমরা গত সপ্তাহে অভিযান পরিচালনা করে ৩০০ কেজির বেশি জাটকা জব্দ করে এতিমখানা বিতরণ করেছি। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী যদি জাটকা পরিবহন বা বিক্রির সাথে সম্পৃক্ত থাকে তার বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments