কৃষি

পীরগঞ্জে সরিষার হলুদ হাসিতে কৃষকের ভাগ্য বদলের স্বপ্ন

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধিঃ রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কৃষকরা সরিষা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন।উপজেলার গ্রামের ফসলের মাঠে এখন হলুদের সমারোহ। যেদিকে চোখ যায় সেদিকে সবুজের মাঠ জুড়ে হলুদ রঙের সরিষার ফুলের হাসি। কম খরচে কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় পীরগঞ্জে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে সরিষার চাষ। এবার অধিক ফলনের আশা করছেন কৃষকেরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায় সরিষার চাষে খরচ ও পরিশ্রম দুটোই কম হওয়ায় অনেক কৃষক এই ফসল চাষে ঝুকেছেন। সরিষা তোলার পর একই জমিতে বোরো আবাদ হচ্ছে।
সরিষা বেলে দো-আঁশ মাটিতে ভালো হয়। তবে বেলে বা দো-আঁশ মাটিতেও সরিষা হয়।সেদিক থেকে এই অঞ্চলের মাটি সরিষা চাষে খুবই উপযোগী বলে মনে করেন কৃষিবিদরা। পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে ৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে প্রায় দ্বিগুনের বেশী জমিতে বেশি চাষ হয়েছে। চলতি সরিষা মৌসুমে উপজেলায় চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৮৫০”হেক্টর জমিতে। এবছর লক্ষ‍্যমাত্রা ছাপিয়ে উপজেলায় সরিষার চাষাবাদ হয়। সেই উৎপাদনের লক্ষ‍্য মাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৬ হাজার মেট্রিক টন।
সরিষা পীরগঞ্জ উপজেলার সব ইউনিয়নে কমবেশী উৎপাদন হয়। তবে উপজেলার মদনখালী, টুকুরিয়া,বড় আলমপুর, শানেহাট, চতরা ও পাঁচগাছী ইউনিয়নে অন‍্য ইউনিয়নের চেয়ে অপেক্ষাকৃত অনেক বেশী জমিতে সরিষা উৎপাদন হয়।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায় বিস্তৃর্ণ মাঠ জুড়ে সরিষার ফুলের সমারহ। ফুলে ফুলে ভরে গেছে সরিষার ক্ষেত। এসময় চাষিরা জানান, আমন ধান কাটার পর জমি কয়েক মাসের জন্য পরিত্যক্ত থাকে ওই জমিতে অতিরিক্ত ফসল হিসাবে সরিষা চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক। ইতোমধ্যে ক্ষেতে সরিষার দানা বাধতে শুরু করেছে। আবার কোথাও ফুল ফুটেছে।
বড় আলমপুর ইউনিয়নের আকুবের পাড়া গ্রামের সরিষা চাষি জামাল মিয়া জানান, এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষে খরচ হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫ শত টাকা। ফলন পাওয়া যায় ৫ থেকে ৭ মন। প্রতিমন সরিষার বাজার মূল্য ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ৫শত টাকা।
উপজেলার চতরা ইউনিয়নের ঘোনা চতরা গ্রামের চাষি হযরত আলী বলেন,এবার প্রায় ১০০ শতাংশ জমিতে বারী ১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছি বাম্পার ফলনের আশা করছি।
টুকুরিয়া ইউনিয়নের আটিবাড়ী গ্রামের সোলেমান জানান,সরিষা চাষে তেমন খরচ হয়না,অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষা চাষ করে সাবলম্বী হওয়ার সুযোগ রয়েছে।গত বছরের চেয়ে এবার ভালো ফলনের আশা করছি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান জানান, সরিষা চাষে কৃষকরা যে ভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছে তা অত্যন্ত ইতি বাচক। এটি কৃষি ক্ষেত্রে সরকারের আরও একটি সাফল্য। উচ্চ ফলনশীল ও স্থানীয় উভয় জাতের সরিষা কৃষকরা চাষ করেছে। আমরা কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও সরিষার বীজ বিতরণ সহ মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। আগামী বছর আরও বাড়বে বলে আশা করছি। তিনি আরও বলেন, সরিষার আবাদ বৃদ্ধি হলে তেল জাতীয় ফসলের উৎপাদন বাড়বে এবং তেলের আমদানী নির্ভরতা কমে যাবে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments