সারাদেশ

অযত্ন আর অবহেলায় আক্কেলপুরে ভেঙ্গে রয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্তম্ভ

মওদুদ আহম্মেদ, আক্কেলপুর(জয়পুরহাট)প্রতিনিধিঃ
“রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই” ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের এক গৌরবময় ইতিহাসের সূচনা। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের ম্মৃতি স্মরণে প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারী ফুল দেওয়া হয় শহীদ মিনারে। অযত্ন-অবহেলায় ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার পৌর এলাকায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের একটি স্তম্ভ।
আক্কেলপুর রেল স্টেশন এর উত্তর পাশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার কমপ্লেক্স স্থাপিত হয় ২০১১ সালের ২০ ফেব্রুয়ারী। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক বাবলু এবং ২০১১ সালের ১ জুলাই এর উদ্বোধন করেন দেশ বরেণ্য ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২১ ফেব্রুয়ারী আসতে আর মাত্র ১৬ দিন অবশিষ্ট রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে নতুন করে উন্নত শহীদ মিনার স্থাপনের দাবী জানিয়েছেন উপজেলার বিভিন্ন সচেতন মহল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভেঙ্গে পড়ে রয়েছে শহীদ মিনারের ডান পাশের স্তম্ভটি। অপর দুটি স্তম্ভের উপরে কাপড় শুকাতে দিয়েছেন স্থানীয়রা। মিনারের পাশে বাঁশে দড়ি বেধেও শুকানো হচ্ছে কাপড়। কাপড় শুকানোর কাজে বাদ পড়েনি শহীদ মিনার ঘিরে রাখা দেওয়ালও। প্রবেশ দ্বারে দেখা গেছে শুকাতে দেওয়া আছে গোবর। দেওয়ালের সাথে রাখা আছে পায়খানার ভাঙ্গা প্যান স্লাব। অপরিচ্ছন্ন হয়ে রয়েছে ভিতরের প্রাঙ্গন, বিবর্ণ হয়েছে রয়েছে শহীদ মিনারের স্তম্ভ ও দেওয়ালের রং।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ২৫ দিন পূর্বে ভেঙ্গে গেছে শহীদ মিনারের ওই স্তম্ভটি। বছরের অন্যান্য সময়ে শহীদ মিনারটি অযতœ আর অবহেলায় ও অরক্ষিত অবস্থায় থাকলেও প্রতি বছর শুধু ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বরকে কেন্দ্র করে পরিপাটি করা হয় শহীদ মিনারটি।
স্থানীয় এক মহিলা বলেন, স্তম্ভটি ভাঙ্গার পর দেখা গেছে শহীদ মিনারের স্তম্ভের ভেতরের গাথুনি মাটির মিশ্রণ দিয়ে করা। বাচ্চারা ভেতরে খেলাধুলা করে। খেলার সময় হয়ত এটি ভেঙ্গে গেছে।
বীরমুক্তিযোদ্ধা বজলুর রশিদ মন্টু বলেন, ‘এই শহীদ মিনারের বিষয়ে একাধিকবার উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। শুধু আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। এটি উন্নত ও স্থায়ী শহীদ মিনার হওয়া উচিত’।  
বীরমুক্তিযোদ্ধা সাইদুর রহমান কবিরাজ বলেন, ‘শহীদ মিনারটি ভেঙ্গে আছে তা আমার জানা নেই। সদিচ্ছা, অসেচতনতা ও অবহেলার কারণে শহীদ মিনারটির এই অবস্থা। শহীদ মিনারের বিষয়ে স্থায়ী একটি কমিটি গঠনের পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি সহ সকলের নজরদারি রাখা প্রয়োজন’।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল হক বাবলু বলেন, ‘কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটির দ্রুত সংস্কার ও ভালো মানের একটি নকশা করে স্থায়ীভাবে করা উচিত। এর পাশাপাশি যথাযথ তদারকি করা প্রয়োজন।’
আক্কেলপুর পৌরসভার মেয়র শহীদুল আলম চৌধুরী বলেন,‘ এবছর ২১ ফেব্রুয়ারী এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংস্কার করে উদযাপন করা হবে এবং স্থায়ীভাবে নতুন করে শহীদ মিনার স্থাপনের জন্য জেলা পরিষদের নিকট টেন্ডার আহব্বান করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। টেন্ডার পাশ হলে নতুনভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মান হবে’।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments