সারাদেশ

বীরগঞ্জে বসস্তের শুরুতেই প্রকৃতি সেজেছে শিমুল ফুলের রক্তিমতায়

খায়রুন নাহার বহ্নি,বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি ঃ পাতাঝরার গান আর কোকিলের কুহুতান। শুরু হয়েছিল আরও কিছুদিন আগে। এবার সরে গেল শীতের চাদরখানি। চারিদিকে আলো ছড়াচ্ছে রৌদ্রোজ্জ্বল দিন। বাতাসে ভাসছে আনন্দ -আভা। এমন দিনে ভালোবাসার ডাক শুনে জেগে উঠেছে মনপ্রাণ।প্রকৃতি একাকার হবে জাগরণে। দিনাজপুরের বীরগঞ্জে ঋতুরাজ বসস্তের শুরু লগ্নেই গ্রাম বাংলার প্রকৃতিতে রাঙিয়ে ফুটছে শিমুল ও পলাশ ফুল। নানা ছন্দে কবি সাহিত্যিকদের লেখার খোরাক যোগায় রক্ত লাল এই শিমুল ফুল। শুক্রবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার প্রধান সড়কের হাটখোলা, বলাকা মোড়স্থ বিষ্ণু মন্দির ও মহানাম যজ্ঞানুষ্ঠান প্রঙ্গণে দেখা মিললো কয়েকটি ফুটন্ত ফুলের রক্তলাল পলাশ - শিমুল গাছ। অন্যদিকে ঋতুরাজ বসস্তের এখন আর হরহামেশাই চোখে পড়ে না রক্তলাল শিমুল গাছ। উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম, পাল্টাপুর, সুজালপুর, নিজপাড়া, মোহাম্মদপুর,ভোগনগর, সাতোর, মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের প্রতন্ত গ্রামঞ্চলে গুটি কয়েক শিমূল গাছে ফুল দেখা গেলেও বর্তমানে কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে তা।গাছে গাছে সবুজ পাতা, মুকুল আর ফুল আর কোকিলের ডাক মনে করিয়ে দেয় বসস্তের আগমনী বার্তা। আম কাঁঠালসহ, লিচু লেবু ও বিভিন্ন গাছের পাতা ও মুকুল দেখে বোঝা যায় শীত বিদায় নিয়ে আবার এলো ফাগুন, এলো বসন্ত। কিন্তু কালের বিবর্তনে গ্রাম বাংলার প্রকৃতি থেকে এখন বিলুপ্তির পথে মূল্যবান শিমুল গাছ। তাই আগের মতো খুব একটা চোখে পড়ে না ফাগুনের রঙে রাঙানো রক্তলাল শিমুল গাছ।
গ্রামে শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত। গ্রামাঞ্চলের মানুষ বিষ ফোঁড়া, আখের গুড় তৈরিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠ কাঠিন্য নিরাময়ে গাছের মূলকে ব্যবহার করতো।কিন্তু নানা কারণে তা হ্রাস পেয়েছে। এখন আর শিমুল গাছ কেউ রোপণ করে না। শিমুল গাছ এমনিতেই জন্মায় তা দিনে দিনে বড় হয়ে একদিন বিশাল আকৃতি ধারণ করে। বসস্তের শিমুল গাছে রক্ত কবরী লাল রঙে ফোটে তোলে, দৃষ্টি কেড়ে নেয় সবার মন। কিছুদিন পরে রক্তলাল থেকে সাদা ধুসর হয়ে তুলার তেরি হয়। গ্রাম বাংলার এই শিমুল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিতো।গ্রামের মানুষেরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোষক, বালিশ। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে, এমন নজিরও আছে। তবে কালের বিবর্তনে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বীরগঞ্জ উপজেলায় আগের মতো তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের।প্রতিনিয়ত বিলুপ্তি হয়ে যাচ্ছে শিমুল গাছ। যার কারণে গ্রাম বাংলার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে, অতি চিরচেনা শিমুল গাছ। বীরগঞ্জ সরকারি কলেজের প্রভাষক মোঃ নজরুল ইসলাম খান বলেন,বসন্ত মানেই শিমুল ও পলাশ ফুল। এবারের বসন্তের ঘুরে আসতেই বীরগঞ্জ উপজেলায় শিমুল গাছগুলোতে আগুনরাঙা নতুন রূপে সেজেছে প্রকৃতি। সহৃদয়ের ব্যাকুলতা নিয়ে এসেছে বসন্ত। কবি নির্মলেন্দু গুণ লিখেছেন, ' হয়তো ফুটেনি ফুল রবীন্দ্র - সঙ্গীতে যতো আছে, হয়তো গাহেনি পাখি অন্তর উদাস করা সুরে বনের কুসুমগুলি ঘিরে। আকাশে মেলিয়া আঁখি তবুও ফুটেছে জবা, দুরন্ত শিমুল গাছে গাছে, তার তলে ভালোবেসে বসে আছে বসন্ত পথিক। ' আগে শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবেও পরিচিত ছিলো । বর্তমানে শিমূল গাছ বিলুপ্তের পথে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments