September 20, 2024
সারাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ে পুনর্বাসনের জমি দখলের অভিযোগ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁওয়ে ওসমান বিহারির নামের এক কোটপতির ওয়ারিশগণের বিরুদ্ধে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জমি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যানা যায়, ২০২২ সালের ১০ আগষ্ট সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর কতৃর্ক একটি নোটিশের মাধ্যমে জানা যায়,সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর মৌজার তাঁতিপাড়া মহল্লার ৪৫৫ দাগে ০.৫০ একর ও ৪৫৬ দাগে ০.৫৫ একর জমি রাষ্ট্রীয় অদিগ্রহন ও প্রজাতন্ত্র আইন ১৯৫০ এর (ক) ধারা মতে খাস করা হবে এবং উক্ত জমিতে বর্তমানে যার বসবাস করছে তাদের কাগজপত্র দেখানো জন্য বলা হয়।
বিষয়টি জমির মূল মালিক দাবিদার গোলাম রহমান ও নাজির হোসের পরিবারের নজরে আসলে পরবর্তীতে তারা ভূমি অফিসে সেই প্রজ্ঞাপনের জবাব দেন। এসময় তারা সেই জমিকে নিজের বলেও দাবি করেন।
যানা যায়, সদর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর মৌজার তাঁতিপাড়া মহল্লার ৪৫৫ দাগে ০.৫০ একর এর মধ্যে ২৭ শতক জমিতে বর্তমানে বসবাস করছেন কোটিপতি ওসমান বিহারির ওয়ারিশগণ। কিন্তু কাগজপত্র যাচাই করে দেখা যায়, ১৯৫২ সালে এই জমি যাদের নামে বরাদ্দ করা হয়েছিল ওসমান বিহারিরা তাদের কোন ওয়ারিশ নন। জমির কাগজে উল্লেখ্য যে ১৯৫২-৫৩ সালে তৎকালিন সরকার ভারত হতে আগত মহাজেরগণের পূর্নবাসেনর জন্য ১২জন ভূমিহীনের নামে প্রত্যেকে ৯ শতাংশ করে জমি বরাদ্দ করে। যেখানে ওই ১২ জনের মধ্যে ওসমান বিহারী ও তার কোন ওয়ারিশগনের নাম উল্লেখ নেই। কিন্তু বর্তমানে ক্ষমতার জোড় খাটিয়ে ওসমান বিহারির ওয়ারিশগণ একাই ২৭ শতক জমি দখল করে বসবাস করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,১৯৫২ সালে যাদের নামে ওই জমি বরাদ্দ হয়েছিল তাদের মধ্যে দুই জন ওয়ারিশ গোলাম রহমান ও নাজির হোসেন এখনো এই শহরে বসবাস করছেন।
জমির মালিক দাবিদার গোলাম রহমান জানান, ১৯৫২ সালে তাদের চাচা ও নানার নামে ৯ শতাংশ করে জমি বরাদ্দ হয়। পরবর্তীতে ১৯৭২ সালে আমার বাবা ও নাজির হোসেনের মা’এর নামে জমি পুন:বরাদ্দ হয় এবং তারা সেই জমিতে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সরকারের সকল খাজনা ও পৌর ট্যাক্স প্রদান করে বসবাস করেছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১৯৯৮ সালে আর্থিক সংকটের কারণে আমার বাবা ও নাজির হোসেন মা মৌখিক ভাবে ওসমান বিহারীকে তাদের বরাদ্ধকৃত জমি ভাড়া হিসেবে প্রদান করে। সেই সময় ওসমান বিহারী তৎকালীন ডিসি অফিসের কর্মকর্তার সাথে যোগসাজশের মাধ্যমে জমি ইজারা গ্রহণ করে এবং ভূয়া দলিল বানিয়ে নেয়। আমাদের ইজারা বতিল না হয়েও, তারা ইজারা গ্রহন করলো কিভাবে তা আমার জানা নেই।
জমির আরেক মালিক দাবিদার নাজির হোসেন বলেন,মূলত ওসমান বিহারীরা সেই জমির মালিক নয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনীর আমাদের পরিবারকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। সেই জমিতে আমাদের পরিবার সহ এলাকার মানুষের গণকবর ছিলো। তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর সরকার মুক্তিযুদ্ধে আমাদের পরিবারের আত্মত্যাগের জন্য আমাদের পরিবারকে ৯ শতাংশ করে জমি পুণ:বরাদ্দ করে। কিন্তু ওসমান বিহারি আমাদের আর্থিক দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে ভুল বুঝিয়ে আমাদেরকে জমি থেকে বিতারিত করে। বর্তমানে আমরা ভূমিহীন কোথাও আমাদের নামে কোন জমি নেই,ওই জমিই ছিল আমাদের শেষ সম্পদক।
এদিকে অভিযোগ বিষয়ে ওসমান বিহারীরর ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন বলেন,একটি নোটিশ এসেছে ভূমি অফিস থেকে কিন্তু এখানে বাসার মালিকেরা উপস্থিত না থাকার কারনে কিছু বলতে পাড়ছিনা। তারা আসলে আপনাদের সাথে কথা বলবেন ও এই নোটিশের জবাব দেবেন। এর বেশি কিছু বলতে পাড়ছিনা।
এ বিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভূমি) তানজিলা তাসনিম বলেন,জমিটি বিষয়ে আমরা নোটিশ দিয়েছি। কেউ যদি সেটিকে নিজের বলে দাবি করে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ আমাদের কাছে আসলে আমরা সেটি যাচাই করে ব্যবস্থা নেব। যদি কারো কাগজের কোন সত্যতা না থাকে তাহলে সরকার তার জমি বুজিয়ে নেবেন।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments