সারাদেশ

ঠাকুরগাঁওয়ে অজ্ঞত রোগে একই মৌজায় ৮০ টির বেশি গরুর মৃত্যু

জসীমউদ্দীন ইতি (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:-

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের একই মৌজার ৪ পাড়ায় ২ মাসের ব্যবধানে প্রায় ৮০ টির বেশি গরুর মৃত্যু হয়েছে। যার বাজার মূল্য আনুমানিক এক কোটি টাকারও বেশি।

গ্রামবাসীরা জানায়, জোরপুকুর, ব্যাংকপুকুর, ভেলা পুকুর ও ছয় ঘড়িয়া এ ৪ পাড়ায় এখন পর্যন্ত অজ্ঞাত রোগে ৩০ থেকে ৩৫ জন খামারীর ৮০ টির অধিক গরু মারা গিয়েছে।

সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল মোতালেব বলেন,১৫ দিনের ব্যবধানে আমার ৫ টি গরু মারা যায়। প্রথমেই একদিন বিকালে আমার একটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। আমি স্থানীয় ভাবে পল্লী চিকিৎসা দেওয়ার ২ ঘন্টার ব্যবধানে গরুটি মারা যায়। এক‌ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,১ বছর আগে আমি একটি গরুর বাছুর এর চিকিৎসা করার জন্য উপজেলা পশু হাসপাতালে নিয়ে যায় । চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফেরার পথে আমার বাছুরটি মারা যায়। এতে আমি খুব কষ্ট পায়। যার ফলে আমার ৫ টি গরু মারা গেলেও হতাশ হয়ে চিকিৎসার জন্য উপজেলা পশু হাসপাতালে আমি নিয়ে যায়নি।

আরেক খামারী মুসলিম উদ্দিন জানান, আমার ২টি গরুর সমস্যা হলে আমি স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক কে জানাই। সে চিকিৎসা দেওয়ার পরেও ভালো না হলে আমি উপজেলা পশু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলি কিন্তু পল্লী চিকিৎসক জানান, এ রোগের কারণ এখনো কেউ জানে না এবং এ রোগের ওষুধও নেই উপজেলা পশু হাসপাতালে।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরো জানান, আমাদের এ ৪ পাড়ায় আতঙ্কে খামারীরা বেশির ভাগ গরু কম দামে বিক্রি করে দিয়েছে। এখনো যাদের ঘরে কিছু গরু রয়েছে তার মধ্যে থেকেই আরো কয়েকটি গরু গত কয়েকদিন এর ব্যবধানে মারা গিয়েছে।

এ প্রতিবেদক উপস্থিত থাকাকালে শাহানা পারভীন নামে একজন খামারী দাবি করেন, একই লক্ষণে আমার একটি গরু অসুস্থ। গত বুধবার উপজেলা পশু হাসপাতালে ফোন দিলে তারা জানায় বৃহস্পতিবার সকালে আপনার খামারে আমাদের চিকিৎসক যাবে। তবে বৃহস্পতিবার দুপুর গড়িয়ে গেলেও ভুক্তভোগীর বাসায় কোন চিকিৎসক আসেনি বলে দাবি করেন।

দিনমজুর ও খামারী শহিদুল জানান, গত এ রোগে কয়েকটি গরু মারা গেলে টিকা দেওয়ার জন্য কয়েকজন চিকিৎসক আসে সেসময় তারা টিকা প্রতি ৫০ টাকা দাবি করলে আমার কাছে কোন টাকা না থাকায় আমি আমার গরু গুলোকে টিকা দিতে পারিনি। এর পরে ভয়ে আমার সব গরু বাজার থেকে কমদামে বিক্রি করে দিয়েছি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ মোছাঃ মৌসুমী আক্তার বলেন, আমরা বিষয়টি জানার পরে গ্রামটিতে গিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করেছি এবং তরকা ও বদলা রোগের টিকা কার্যক্রম করেছি। কয়টি গরু মারা গিয়েছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন কয়টি গরু মারা গিয়েছে এ ব্যাপারে আমার কাছে কোন তথ্য নেই।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকারনাইন কবীর স্টীভ দৈনিক জনকন্ঠকে জানান,'এ বিষয়টি জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। তিনি গত বুধবার এসেছিলেন এবং উনাদের কাছে যতটুকু প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া দরকার তারা দিয়েছেন ও তাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করেছেন'। ৫০ টাকার বিনিময়ে ভেকসিন দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন "তাদের এখতিয়ার না থাকলে তো নেওয়ার কথা না"।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments