সারাদেশ

খানসামায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখী ফুল, ভোজ্য তেলের চাহিদা মেটাতে সম্ভাবনার হাতছানি

এস.এম.রকি,খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ ভোজ্য তেল হিসেবে সূর্যমুখীর গুনাগুণ অনন্য তবে আপাতত মাঠে এই ফুলের সৌন্দর্যে মুগ্ধ মানুষ। এই অপরুপ চিত্র দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায়। স্বল্প অর্থ ও সময় ব্যয় করে সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলছে কৃষি বিভাগ।

মাটি ও আবহাওয়া এই এলাকায় সূর্যমুখী চাষাবাদের জন্য উপযোগী। তাই কৃষি বিভাগ সাধারণ কৃষকদের সূর্যমুখী চাষে উদ্বুব্ধ করতে পরীক্ষামূলকভাবে উপজেলায় গত বছর থেকেই সূর্যমুখী চাষ শুরু করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, তেল ফসলের আবাদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৬ ইউনিয়নের ৩০ বিঘা জমিতে ৩০ জন কৃষককে বীজ ও প্রযুক্তিসহ কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতায় এর আবাদ শুরু করেছেন।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ফসলের মাঠে হলুদ ফুল আর সবুজ গাছের অপরুপ দৃশ্য। সবুজ পাতার ভেতর থেকে মাথা উঁচু করে প্রকৃতিতে নিজের সৌন্দর্য জানান দিচ্ছে সূর্যমুখী ফুলগুলো। এদিকে সূর্যমুখী ফুলের বাগানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর দর্শনার্থী ও সৌন্দর্য পিপাসু মানুষ দল বেঁধে আসতে শুরু করেছেন বাগান দেখতে। অনেকেই বাগানে ঢুকে শখ করে ছবি তুলেন। এতে করে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে কৃষককে।

জানা যায়, বাংলাদেশে ভোজ্য তেলের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন আর উৎপাদন হয় সাড়ে তিন লাখ মেট্টিক টন। যার সত্তর শতাংশই বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এই আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষি বিভাগ সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছে এবং সহায়তা প্রদান করছে।

খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও ডা. শামসু্দ্দোহা মুকুল বলেন,সূর্যমুখী একটি অত্যন্ত উৎকৃষ্ট তেল। সূর্যমুখীর বীজে ৪০-৪৫% পর্যন্ত লিনোলিক এসিড রয়েছে। এ তেলে ক্ষতিকারক ইরোসিক এসিড নেই। কোলেস্টেরলমুক্ত সূর্যমুখীর তেল শরীরের দুর্বলতা কমায় ও মানসিক চাপ দূর করে। রান্নার জন্য সয়াবিন তেলের চেয়ে সূর্যমুখীর তেল দশ গুণ বেশি পুষ্টিসমৃদ্ধ।

ভান্ডারদহ গ্রামের মজিবর রহমান বলেন,গত বছরে সূর্যমুখীর চাষে সফলতার কথা শুনে কৃষি অফিসের সহায়তা নিয়ে এবছর সূর্যমুখী চাষ করেছি। আশা করছি এবার ভাল ফলন হবে। অন্য ফসলের চেয়ে সূর্যমুখী ফুল চাষে খরচ কম। তাই লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বাসুদেব রায় বলেন,আমাদের দেশে বেশিরভাগ তেল বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। এই আমদানি নির্ভরতা কমাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রণোদনা কার্যক্রমের আওতায় সূর্যমুখীর চাষ করা হচ্ছে। সূর্যমুখী বীজের তেল স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আর সূর্যমুখী বীজ বিক্রি করতে কৃষকদের সঙ্গে কোম্পানির প্রতিনিধিদের আন্তঃসর্ম্পক তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে কৃষকরা এটি কোথায় বিক্রি করবেন সেটি নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ থাকবে না। তিনি আরো বলেন, সূর্যমুখী তেল উৎপাদন পদ্ধতি আরো আধুনিকায়ন হলে ভোজ্য তেলের চাহিদা অনেকাংশেই মিটবে।


Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments