সারাদেশ

অভিবাসী শ্রমিক বনাম টেকসই উন্নয়ন

মো: আহসান হাবিব: ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডর অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ কর্মক্ষম যুবসমাজ , যাদের সঠিক প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনার মাধ্যমে শ্রমবাজার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করলে বাংলাদেশ উন্নয়নের গতি আর অনেকগুন বাড়িয়ে টেকসই উন্নয়নের যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। পুঁজিবাদী অর্থনীতিতে শ্রেণী বৈষ্যমের কারনে এই তৃতীয় বিশ্বে মানুষে মানুষে বিভেদ অনেক, সেই সাথে লিঙ্গ বৈষম্যের কারনে মানুষ আজ দারিদ্রতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না, আর এই কারনেই আদিকাল থেকে মানুষ স্থান পরিবর্তন করে উন্নত জীবনের স্বপ্নকে পুঁজি করে অভিবাসনের নামে মানব পাচারের শিকার হচ্ছে। আবার বর্তমান বাস্তবতায় রিক্রুটিং এজেন্সি নিযুক্ত দালাল কর্তৃক স্বপ্নের বিক্রয় করে যে প্রতারণার ব্যবসা চলছে, সেখানেও শুধু অভিবাসী শ্রমিকের সংখ্যা ও রেমিটেন্স হিসাব করে সরকারী মন্ত্রনালয় বসে থাকবে তা হতে পারে না ! একথা অস্বীকার করছি না যে বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান, প্রশিক্ষণ ব্যুরো যা আমাদের কাছে (বিএমইটি) নামে পরিচিত তারা ভিসা যাচাই, বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে আঙ্গুলের ছাপ, স্মার্টকার্ড, চাকুরির চুক্তিপত্র যাচাইসহ বহুমুখি কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসনের জন্য যে কাজ করছেন তা প্রশংসার দাবী রাখে। তারপরও প্রাণের টানে কিছু প্রশ্ন আজ করতে চাই, অভিবাসী শ্রমিকদের জীবন উৎসর্গ করে নিজের পরিবার ও মাতৃভূমির জন্য অদম্য ভালবাসা ও দেশপ্রেমের কারনে যে বিপুল পরিমান রেমিটেন্স বাংলাদেশে প্রেরণ মাধ্যমে অর্থনীতি আজ সচল রয়েছে, তা উপলব্ধি করে সরকার কি তাদের পরিবার ও সন্তানদের জন্য কোন কর্মসূচি নিয়েছেন? অভিবাসী শ্রমিক ভাই ও বোনেরা বিদেশে কর্মক্ষেত্রে কোন সমস্যার সম্মুখিন হলে বাংলাদেশী দূতাবাস ও লেবার এটাচি গুলোতে এই জাতীয় বীরদের সাথে অশোভন আচরন করে, যেখানে লেবার এটাচি গুলোতে জনবান্ধব ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকার কর্মদক্ষতা ও সঠিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কর্মী নিয়োগ কি করতে পারে না? অভিবাসী নারী শ্রমিকদের নিরাপত্তা , পূর্ণবাসন ও সামাজিকভাবে একীভূত করণে করতে প্রকল্প গ্রহণ ও মধ্যপাচ্যের দেশগুলোতে নারীকর্মদের জন্য ”ডরমেন্টটির “ ব্যবস্থায় নিশ্চিত করতে সরকার কি কর্ম কৌশল নিচ্ছেন? বিদেশগামী শ্রমিকদের মেডিক্যাল চেকআপের সহায়তার জন্য ’গামকা’ কে প্রতিটি বিভাগীয় শহরে চেকআপ সেন্টার স্থাপনে জন্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানের মন্ত্রনালয় কি কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন? এয়ারপোর্ট এ প্রবাসী কল্যান ডেস্ক এ অবস্থান ও কর্মী সংখ্যা এতই নগন্য যে অভিবাসী শ্রমিকরা যাত্রা পথে বিভিন্ন সহাযতার জন্য কোথায় যাবে তা বুঝে উঠে পারে না, এই কারনে ভিজিবিলিটি নিশ্চিত করে কর্মীদের অভিবাসী শ্রমিক বান্ধব করে তুলতে হবে। এখনও অধিকাংশ সম্ভাব্য অভিবাসীরা ”ফ্রি ভিসা “ বলে যে কোন ধরনের ভিসা নেই তা জানে না এবং বৈদিশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন ২০১৩ বিষয়ে দেশের প্রতিটি থানায় কর্মরত পুলিশবাহিনী ও আইনজীবি সংগঠনগুলোতে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কি কি কর্মসূচি নিয়েছেন? বাংলাদেশ বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও সার্ভিস লি.( বোয়েসেল ) মাধ্যমে লোক প্রেরনের মাত্রা আরও বৃদ্ধি করতে হলে সরকার কি কি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না? অভিবাসী শ্রমিকদের সন্তানদের সামাজিক ও পারিবারিক কারনে আজ বিপথগামী তাই এই সকল অবস্থার উন্নয়নে এবং সরকারের সাথে দেশী-বিদেশী এনজিও গুলোকে ব্যাপক কর্মসূচির জন্য কি কি উদ্যোগ নিচ্ছেন? সরকার শুধু অভিবাসী শ্রমিকদের রেমিটেন্স না গুণে ব্যাপক ভাবে আন্তর্জাতিক অভিবাসন ও শোভন কাজের জন্য বিভিন্ন দেশের শ্রম উন্নয়নে অভিবাসন নীতি ও শ্রম অভিবাসন উন্নতর করনে জনসংখ্যা সে অভিসাপ তা আর্শিবাদ হয়ে উঠবে । তাই অভিবাসী শ্রমিকদের ত্যাগ ও বিনির্মিত জাতি গঠনে তাদের অবদান কে মাথায় রেখে জাতীয় বীর হিসেবে তাদের স্বীকৃতি দিতে হবে ।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments