September 08, 2024
অপরাধ

সাদুল্লাপুরে অবৈধভাবে সড়কের গাছ কাটার অভিযোগ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি :
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলার বনগ্রাম ও দামোদরপুর ইউনিয়নে বন বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনুমতি এবং দরপত্র আহবান ছাড়াই সড়কের দুইশতাধিক গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে।এরমধ্যে বুধবার থেকে কাটা শুরু হয়েছে দামোদরপুর ইউনিয়নের পশ্চিম দামোদরপুর গ্রামের সন্টু বাবুর বাড়ির সামনে থেকে পূর্ব দামোদরপুর গ্রামের কাঁচা সড়কের দুই ধারের অর্ধ শতাধিক ইউক্যালিপটাস গাছ।

অপরদিকে গত সোমবার (২৮ মার্চ) থেকে কাটা শুরু করেছে বনগ্রাম ইউনিয়নের মন্দুয়ার গুচ্ছ গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামন থেকে চৌকিদারের খেয়াঘাট পর্যন্ত সড়কের দুই ধারের দেড় শতাধিক ইউক্যালিপটাস গাছ।  

সরেজমিন জানা যায়, পশ্চিম দামোদরপুর গ্রামে বুধবার সকালে এইসব গাছ কাটা শুরু করা হলে স্থানীয গ্রামবাসী বাঁধা দেন।

পশ্চিম দামোদরপুর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির সদস্য সামছুল মিয়া জানান, প্রায় ১৫ বছর আগে পশ্চিম দামোদরপুর সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির পক্ষ থেকে সড়কের দুই ধারে প্রায় ১৫০ ইউক্যালিপটাস জাতের গাছ লাগানো হয়। এর মধ্যে সম্প্রতি ৬৩টি গাছ বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়া এরআগেও কিছু গাছ বিক্রি করা হয়েছে। যা সমিতির সদস্যদেরকে অবহিত করা হয় নাই।

গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতির সভাপতি নছির উদ্দিন জানান, সমিতির নিয়মিত সভায় এই গাছ কর্তনের সিদ্ধান্ত হয়। তারপর দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের নিকট অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়। তিনি এই গাছ কাটার অনুমোদন দেন এবং গাছগুলো এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

বুধবার দুপুরে গাছ কাটা শ্রমিক লালবাজার গ্রামের মাহবুব রহমান বলেন, একই ইউনিয়নের কান্তানগর বটেরতল গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া এইসব গাছ ক্রয় করেছেন। আমরা তার নির্দেশে এই সব গাছ কর্তন করছি। এখন পর্যন্ত ৪ টি গাছ কেটে সেলিম মিয়ার বাবা দুলাল সর্দারের করাতকলে রাখা হয়েছে।

কাঠ ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া জানান, এক লক্ষ ৮০ হাজার টাকায় তিনি এইসব গাছ কিনেছেন। এবং দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের অনুমতিক্রমে গাছ কাটা শুরু করেছেন।  

তবে দামোদরপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম জানান, গাছ কাটার সুপারিশ করেছি তবে কেটে নেয়ার বিষয়ে কিছুই জানি না। কেটে নেয়া গাছ চৌকিদার পাঠিয়ে উদ্ধার করে পরিষদে আনা হয়েছে।

অপরদিকে, মন্দুয়ার গ্রামের রাসেল মিয়া জানান, প্রায় ১২ বছর আগে বনগ্রাম ইউনিয়নের মন্দুয়ার গ্রামের সড়কের দুই ধারে লাগানো ইউক্যালিপটাস জাতের ১৫০ গাছ গাইবান্ধা সদরের তালুক মন্দুয়ার গ্রামের কাঠ ব্যবসায়ী সামছুল ইসলামের নিকট বিক্রি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তার অধিকাংশ গাছ কেটে নিয়ে গেছে।

তবে কাঠ ব্যবসায়ী সামছুল ইসলাম জানান, মাত্র ৬৫ হাজার টাকায় তিনি এইসব গাছ ওই গ্রামের সেলিম মিয়া ও নুরু মিয়ার নিকট থেকে ক্রয় করেছেন।  

বনগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীন সরকার জানান, বিষয়টি তিনি জানার পর সাদুল্লাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।  

বন বিভাগের সাদুল্লাপুর উপজেলার ফরেষ্টার গোলাম মোস্তফা জানান, এই সব গাছ কাটার বিষয়ে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, আমি নিজে মন্দুয়ার গ্রামে গিয়ে এইসব গাছ কাটতে নিষেধ করি। তারপরও এই গাছগুলো কাটা হয়েছে।

সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. রোকসানা বেগম জানান, বিষয়গুলো তার জানা নাই। এই দুই বিষয়ে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments