রাজনীতি
রংপুর মহানগর যুবদলের বিভিন্ন ওয়ার্ড কমিটি গঠন॥ নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
রংপুর প্রতিনিধি॥
রংপুর মহানগর জাতীয়তাবাদী যুবদলের কার্যক্রম মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে চলছে। এরই মধ্যে নতুন কমিটি গঠনের দাবি উঠলেও বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্তদ্বয় বিভিন্ন ওয়ার্ডে নতুন করে কমিটি গঠন করেছে। হঠাৎ করে রাতের আধার কোন সভা বা সম্মেলন ছাড়া এই সব কমিটির ঘোষণা দেয় বর্তমান কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। অথচ যুবদলের নিয়ম নীতিমালায় কমিটি গঠন করতে হলে সম্মেলন ও ভোটাভুটি করতে হয়। কিন্তু তারা কোন তোয়াক্কা না করে এই কমিটি গুলো করছে। এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক লিটন পারভেজের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার হলেও তাকে দায়িত্ব পালন করতে দিচ্ছে না একটি অংশ।
এর ফলে কেউ কেউ খুশি হলেও যুবদলের একটি অংশ এই কমিটিতে অখুশি। তৃণমূল পর্যায়ে অনেকের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এতে দলীয় অভ্যনন্দরীণ কোন্দল চরম আকার ধারণ করতে পারে।
বিগত রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হওয়াতে মহানগর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক লিটন পারভেজকে দল থেকে বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় কমিটি। এতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম লেলিনকে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মনোনীত করে চিঠি ইস্যু করে। এছাড়াও মহানগর যুবদলের সভাপতি এ্যাড. মাহফুজ উন নবী ডন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব পদে অসীন হওয়ায় তার স্থলে সিনিয়র সহ-সভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরি মিলনকে দায়িত্ব দেয় কেন্দ্রীয় যুবদল।
এর পরে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিবের অনুসারী এই দুই নেতা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে নিজেদের মতো দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করে। একের পর এর কমিটি গঠন শুরু করে। নিজের ভোট বাড়ার জন্য শুধুমাত্র নিজেদের লোকজনকে তাদের কমিটিতে পদ দেয়। তাদের বিরোধীতা যারা করেন তাদের কোন পদ দেয়া হয় না। এর ফলে নেতাকর্মীরা চরম ক্ষুদ্ধ। কোথায় কোথায় কমিটি নিয়ে দ্বন্ধ চরম আকারও ধারণ করেছে।
এরই মধ্যে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে মহানগর যুবদল নগরীর ৪,৭,৯,১৩,২১,৩১ ও ৩৩ নং ওয়ার্ডে কমিটি গঠন করেছে। তবে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে কমিটিতে তাদের মনোনীত লোকজনকে পদ দেয়া হয়েছে। ত্যাগী, সাবেক ছাত্রনেতা ও দলের নিবেদীতদের পদ দেয়া হয়নি। এমনি সম্মেলন ছাড়াই এইসব কমিটি গঠন করা হয়। এর ফলে দলের তৃণমুলসহ বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয় পর্যায়ে কমিটি নিয়ে বিরোধ চরম আকার ধারণ করতে পারে বলে নেতাকর্মীরা মনে করছেন।
এদিকে তৃণমূল পর্যায়ে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর সাথে কথা হলে অনেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে নতুন আহবায়ক কমিটির বিষয়ে অখুশি ভাব প্রকাশ করেছেন। অনেকে মনে করছেন এতে দলীয় কোন্দল বাড়তে পারে। কেউ কেউ বলছে, মহানগর কমিটিই মেয়াদ উর্ত্তীণ তারা কিভাবে কমিটির অনুমোদন করে। তাছাড়া দলের কার্যক্রম এক ঘিয়েমি হয়ে পড়ছে বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। তারা বলেন, দলে নিবেদিত, ত্যাগী ও সাবেক ছাত্রনেতাদের মূল্যায়ন নেই। দলীয় কার্যালয়ে কয়েকজন সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ওয়ার্ড ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। গালিগালাজ করেন। তবে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সম্পাদকের অনুসারি হলে অন্য র দৃষ্টিতে দেখা হয় বলে কেউ কেউ বলছেন। তাই তারা অবিলম্বে মহানগর কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে সম্মেলন বা কেন্দ্রীয় ঘোষিত কমিটির দাবি করেন।
এব্যাপারে মহানগর যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী মিলন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম লেলিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা বলেন, তারা নিয়ম-নীতি ও গঠনতন্ত্র মেনেই সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের কাজ করছে। এনিয়ে কোন বির্তক নেই। কমিটিতে নিজেদের লোককে পদ দেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্ন করা হলে তারা কোন উত্তর দেননি।
Comments