সারাদেশ
মুক্তিযোদ্ধা দাবিদার গাজী ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি থেকে প্রমানিত ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা
স্টাফ রিপোর্টার: নিবন্ধন বাতিলকৃত জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের মুখপত্র দৈনিক সংগ্রামের বিশেষ প্রতিনিধি ও সাবেক চীফ রিপোর্টার রুহুল আমিন গাজী জ্ঞাত আয় বহির্ভুত কয়েক’শ কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মালিক। তার স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে এবং জামাতার নামে-বেনামে বিপুল পরিমান অবৈধ সম্পদ থাকার কথা জানা গেছে। এদিকে সার্টিফিকেট জালিয়াতের ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় কপাল পুড়লো দৈনিক সংগ্রামের সাবেক চীফ রিপোর্টার রুহুল আমিন গাজীর। সম্পাদক হওযার দৌড়ে জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে দাখিলকৃত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জালিয়াতির পিলেচমকে তথ্য ফাঁস হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাকে তাৎক্ষনিক অব্যাহতি প্রদান করে। এমনকি এই পদের অপব্যবহার করে যাতে দুরভিসন্ধিমূলক কর্মকা- বা স্বার্থ সিদ্ধি করতে না পারে, সেজন্য পত্রিকার ব্যুরো প্রধান ও ৬৪ জেলার প্রতিনিধি এই সিদ্ধান্তের কথা লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। মজার বিষয় হলো-- নিজের চীফ রিপোর্টার পদ ফিরে পাওয়ার জন্য রুহুল আমিন গাজী সর্বোচ্চ তদবির করেও শেষ রক্ষা হয়নি।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, রুহুল আমিন গাজী দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক হওয়ার উদ্দেশ্যে,গত জানুয়ারি মাসের ০১ তারিখে কর্তৃপক্ষের কজাছে জীবনবৃত্তান্ত দাখিল করেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা সরকার ও রাজনীতি বিভাগে অনার্স এবং সমাজ বিজ্ঞানে মাস্টার্স বলে উল্লেখ করা হয়। শিক্ষা সনদে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়-ঢাকা এবং পাশের বছর বিএ অর্নাস ২০০১ এবং মাস্টার্সে ২০০২ সাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের কাছে পরিচয় দিতো মতিঝিল টিএন্ডটি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাশ। এই অসংগতি যাচাইয়ের পর দৈনিক সংগ্রামের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ তাকে চীফ রিপোর্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ওনার স্থলে দায়িত্বভার প্রদান করা হয় সামছুল আরেফীনকে।
এদিকে তার জালিয়াতকৃত সনদ ও ভুল তথ্য উপস্থাপন এবং অফিসে কলিগদের সঙ্গে পেশাগত অসদাচরণ করার অভিযোগে দৈনিক সংগ্রাম কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্যরা অভিযোগের সত্যতা পায় এবং সেই আলোকে ব্যবস্তা গ্রহণ করে।
মজার বিষয় হলো; নিজেকে বীরমুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও তার কোন সার্টিফিকেট নেই। গত বছর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি থেকে বীরমুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা দিতে চাইলে তিনি মুক্তিযুদ্ধের কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। এর আগে কয়েকবার দৈনিক সংগ্রাম কর্তৃপক্ষ রুহুল আমিন গাজীকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র তলব করলেও তিনি দাখিল করেননি। তাছাড়া গাজী নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জনসভায় প্রকাশ্যে বলেছেন, এধরনের মতলববাজি দাবি ভুয়া এবং উদ্দেশ্যমুলক।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জামায়াতপন্থী সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী সংবাদপত্রে ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন পর্যালোচনা ত্রিপক্ষীয় কমিটি (মনিটরিং সেল) এ প্রতিনিধি থাকার সুযোগে নিজের ভাগ্য বদলে নিয়েছেন। জলাঞ্জলী দিয়েছেন সাংবাদিক নেতৃত্বের আদর্শ। পেশাদার সাংবাদিক, শ্রমিক কর্মচারিদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার বঞ্চিত করে অখ্যাত ও আন্ডার গ্রাউন্ড পত্রিকায় ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের ভুয়া রিপোর্ট প্রদানের রেকর্ড গড়েছেন। কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সাংবাদিকদের বেতন ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার বঞ্চিত করে বিজ্ঞাপন বাণিজ্য সুবিধা পান ভুইফোড় মালিকেরা। মনিটরিং সেলে বিএফইউজের নির্বাচিত দু’জন প্রতিনিধি থাকার বিধান রয়েছে। অথচ নিয়ম অমান্য করে তাকে আওয়ামীলীগ সরকারের সময়ও সেলে অবৈধভাবে রাখা হয় তাকে। এ সুযোগে তিনি অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার মালিক। তার সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত শুরু করেছিল তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো। ব্যুরোর চেয়ারম্যান বিচারপতি সুলতান হোসেন খান তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কমিশনারকে। দুদক পুনর্গঠনের সময় বিএনপি ও জামায়াত পন্থীদের তদবিরে সে প্রক্রিয়া এবং পরবর্তিতে তার বিরুদ্ধে উপস্থাপিত অভিযোগগুলো অবৈধ হস্থক্ষেপ করে থামিয়ে দিতে সফলকাম হন কথিত এই সাংবাদিক নেতা রহুল আমিন গাজী।
সূত্র জানায়, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের অল্প সময়ের ব্যবধানে ২৩/ক ইস্কাটন রোডের সাউথইস্ট ব্যাংকে রুহুল আমিন গাজীর একাউন্টে এক সপ্তাহ’র মাত্র চার কর্মদিবসে ৯৬ লাখ টাকা জমা হয়। তখন তার ব্যাংক হিসাবে কয়েক কোটি টাকা জমা হবার তথ্য ফাঁস হয়ে পড়ে। ২০ নিউ ইস্কাটন গাউস নগর, রমনা, ঢাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, মিরপুর ১১ ব্লক এফ এ অবস্থিত জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বরাদ্দকৃত মিরপুর সাংবাদিক গৃহসংস্থান সমবায় সমিতির ২৭ নম্বর প্লটে ৫ তলা আলীশান বাড়ি, রাজউক পূর্বাচল ব্লকে সেক্টর ২, রোড ৪০৩, প্লট নং-০০৬ এ অবৈধভাবে ১০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। রাজধানীর বঙ্গবাজার সিটি করপোরেশনের মার্কেটে তার দোকান ঘর থাকার কথা জানা গেছে। উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরে দওউড় নামক স্থানে তার আছে এক বিঘা জমির উপরে একটি বাড়ি। রংমহল হিসেবে পরিচিত এ বাড়িতে তিনি পশুপাখি পোষেন। সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণ প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন স্থানে এবং বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট আছে রুহুল আমিন গাজী ও তার স্ত্রী-সন্তানের নামে। বিলাসী গাড়ী ব্যবহার করেন। তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা হওয়ার আগে ঘন ঘন বিদেশে সফরে যেতেন। পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ভ্রমন ব্যয় এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্য যাচাইয় করলে তার কালো টাকার ডিপো গড়ার পিলে চমকানো তথ্য উদঘাটিত হবে বলে ঘনিষ্ট সূত্র দাবি করেছে।
সূত্র জানায়, মিরপুর সাংবাদিক গৃহসংস্থান সমবায় সমিতির সভাপতি থাকাকালে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে রুহুল আমিন গাজী কালো টাকার মালিক এবং অসাংবাদিকদের সেখানে জালিয়াতি করে প্লট মালিক হবার সুযোগ করে দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হয়েছেন। সরকারের গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের বরাদ্দ দলিলের শর্ত হচ্ছে: কেবল সাংবাদিকদের কাছে আলোচ্য আবাসিক এলাকার প্লট হস্তান্তর করা যাবে। সাংবাদিকতার বানোয়াট কাগজ যোগাড় করে দিয়ে বেশ কয়েকটি প্লট অসাংবাদিকদের কেনার সুযোগ করে দিয়েছেন তিনি। এ পর্যন্ত হস্তান্তরিত প্লটের নথি যাচাই করলে তার সত্যতা মিলবে। এছাড়া সরকার অনুমোদিত নকশা জালিয়াতি এবং অবৈধ প্লট বানিয়ে উৎকোচের বিনিময়ে বিক্রির অভিযোগে মামলায় ফেঁসেছেন তিনি। মসজিদের উত্তর পাশে তিনি দুটি প্লট বানিয়ে যৌথ জরিপকালে অভুক্ত করেন অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে।
রহুল আমিন গাজীর বিরুদ্ধে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের ল্যান্ডসার্ভে ট্রাইব্যুনালে মামলা চলমান। সমিতির প্রতিবাদী সদস্য রফিকুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি ও দি এশিয়ান এজ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদারসহ সংক্ষুব্ধ ৬ জন সদস্য মামলা দায়ের করেন। গাজীর দুর্নীতির প্রতিবাদকারীদের কণ্ঠরোধ এবং হাউজিং এলাকায় ভবিষ্যৎ প্রতিদ্বন্ধিতা নিরঙ্কুশ করতে তিনি হাউজিংয়ে মসজিদ নির্মানে দুর্নীতির অভিযোগে সমিতির নির্বাচিত সভাপতি মোস্তফা কামাল মজুমদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেছেন। মামলা পরিচালনার নামেও সমিতির অর্থ তসরুপের অভিযোগ রয়েছে গাজীর বিরুদ্ধে। মামলায় তিনি হেরে গেছেন। ফের এ সমিতি কব্জায় নিতে নানা ফন্দিফিকির করছেন বলে ঘনিষ্টরা স্বীকার করেছেন।
বিএনপি-জামায়াতপন্থী সাংবাদিক সংগঠন বিএফইউজের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মো: মেহেদী মাসুদ ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাহী পরিষদ সভায় গাজীর বিরুদ্ধে বিএনপিসহ বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানসহ নানা উৎস থেকে সাংবাদিকদের কল্যাণ, ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের নামে অনুদান এনে আত্মসাৎ করে বিপুল সম্পদের মালিক হবার এবং সংগঠনকে কলঙ্কিত করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উত্থাপন করেন। গাজীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অভিযোগ তদন্তে ৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। জামায়াতপন্থী সাংবাদিক নেতা রুহুর আমিন গাজীর নানামুখী অপতৎপরতা এবং তদন্ত কমিটিকে প্রভাবিত করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ড. মেহেদী মাসুদ ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারী তদন্ত কমিটির প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন। ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত বিএফইউজের বৈঠক তিনি বর্জন করেছেন। অভিযুক্ত সাবেক বিএফইউজের সভাপতি রহুল আমিন গাজীর বিরুদ্ধে অভিযোগকারী সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের অভিযোগ প্রত্যাহার করিয়ে নিতে অবৈধভাবে নানামুখী প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রাখেন। সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মেহেদী মাসুদ অভিযোগ তদন্তপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে এখনও অনগ অবস্থানে আছেন। শ্রম অধিদপ্তর, এনবি আর এবং দুদকসহ রাষ্ট্রীয় সংবিধিবদ্ধ সংস্থার মাধ্যমে আনিত অভিযোগের সুষ্ঠ তদন্ত হলে তার অভিযোগ সত্য প্রমানিত হবে বলে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন তিনি। তার এই সাহসী ভূমিকা সাংবাদিক মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে বলে জানা গেছে। সাংগঠনিক ক্ষমতা কলংকিত করার অভিযোগে গাজীকে অপসারনের দাবিতে তিনি বিএফইউজের বৈঠক বর্জনের ঘোষণা দিয়ে ছিলেন। তবে সুচতুর গাজী বিএফইউজের সভাপতির পদ থেকে পদত্যগ করবেন বলে নিকটজনদের কাছে প্রচারণা চালিয়ে আনুকুল্য পাবার কৌশল নিয়েছেন।
এদিকে কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন (রেজিঃ নং ঃ খুলনা ২০৬৯) রুহুল আমিন গাজীকে বিএফইউজের অবৈধ সভাপতি আখ্যায়িত করে অবিলম্বে অপসারন এবং তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি এবং সংগঠনবিরোধী নানা অনিয়মের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তদন্তপূর্বক শাস্তি দাবিও করা হয়েছিল। সংগঠনের সভাপতি নজরুল ইসলাম মুকল স্বাক্ষরিত এই আবেদন ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারী ১৯ শ্রম পরিদপ্তরে দাখিল করা হয়। এতে তার সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়াকে বে আইনী দাবি করা হয়েছে । শ্রম পরিদপ্তরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা অভিযোগ আমলে নেয়ার কথা স্বীকার করেছেন গণমাধ্যমের কাছে। তিনি বলেছেন, অনিবন্ধিত দুটি ইউনিয়নকে অন্তর্ভুক্ত করে ভোটার তালিকা প্রনয়ন এবং পরিদপ্তরের প্রতিনিধির অনুপস্থিতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান বে আইনী এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
রুহুল আমিন গাজীর উত্থান এবং অবৈধ অর্থ উপার্জন এবং অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ার চাঞ্চল্যকর তথ্য রয়েছে। তিনি জামায়াতের তৎকালীন আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের নাগরিকত্ব পুর্নবহালের জন্য সাংবাদিক সমাজ এবং সুধী মহলের গণস্বাক্ষর গ্রহণ করে দলটির নেতাদের নেক নজরে আসেন। ওই আবেদনে স্বাক্ষরকারী আওয়ামীলীগপন্থী একজন সাংবাদিক নেতার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার দোহাঈ দিয়ে প্রতিবাদকারীদের দমনের কৌশল গ্রহণ করেন তিনি। যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াত আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর স্ত্রী শামসুন্নাহার নিজামী অসাংবাদিক হওয়া সত্বেও জালিয়াতি করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যপদ প্রদান এবং রাজধানীর মিরপুর সাংবাদিক গৃহসংস্থান সমবায় সমিতি লিঃ এ বে আইনীভাবে একটি প্লট কিনে দিয়ে নিজামীর পরিবারে ঘনিষ্ট হয়ে যান। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি সেই সময় অবৈধভাবে মাওলানা নিজামীর বউ শামসুন্নাহার নিজামীর মাধ্যমে জোর তদবির করে দৈনিক সংগ্রামের চীফ রিপোর্টার পদ দখল করেন। তখন থেকেই গাজীর বিরুদ্ধে দৈনিক সংগ্রামের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করে। সাংবাদিক দাবিদার রহুল আমিন গাজী গত ৩০ বছরে দৈনিক সংগ্রামের বিশেষ প্রতিনিধি ও চীফ রিপোর্টার হওয়ার পর একটি নিউজও লিখেন নাই এবং নিজের নামে একটি বিশেষ নিউজও প্রকাশ করতে পারেননি? তাইলে তিনি সাংবাদিক হয় কিভাবে যে কিনা দৈনিক সংগ্রামের গ্রুফ রিডার থেকে চীফ রিপোর্টার ও বিশেষ প্রতিনিধির পদ অবৈধভাবে দখল করেন।
রুহুল আমিন গাজীর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে দৈনিক সংগ্রাম অফিস জুড়ে আজো মুখরোচক আলোচনা অব্যাহত আছে। কর্তৃপক্ষ তার সনদপত্র তলব কররেও তিনি দাখিল করেননি। যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদ-প্রাপ্ত জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদের সহায়তায় তিনি রক্ষা পান। তাছাড়া গাজী নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা দাবি করলেও চাঁদপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জনসভায় প্রকাশ্যে বলেছেন, এধরনের মতলববাজি দাবি ভুয়া এবং উদ্দেশ্যমুলক। তবে জামায়াত নেতাদের সার্বিক প্রচেষ্ঠায় গাজী ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের মীরপুর সাংবাদিক গৃহসংস্থান সমবায় সমিতির সভাপতির পদ বাগিয়ে নিয়ে তার ভাগ্যের রথে গতি সঞ্চার করেছেন। এছাড়াও ফিল্ম সেন্সর বোর্ড, ওয়াসা পরিচালনা বোর্ডসহ বিভিন্ন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে এবং আওয়ামীলীগপন্থী কয়েকজন সাংবাদিক নেতার সঙ্গে সখ্যতা থাকার দোহাই দিয়ে ব্যক্তিগত অপরাধ ধামাচাপা দিয়ে চলেছেন ধুরন্ধর এই নেতা। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি অফিসের এক জুনিয়র কলিগের সঙ্গে অপেশাদার আচরণ করে আলোচনায় আসেন। একেবারেই অপেশাদার, ব্যক্তিগত আক্রমনাক্ত, অশ্লীল ও অশালীন আচরণের জন্য তার বড় ধরণের খেসারত দিতে হয়। নিজের সহকর্মীকে বেয়াদব, বেয়াদবের বাচ্চা বলায় কেউ তার আচরণকে ভালভাবে নেয়নি। সবাই তার ব্যাপারে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া জানান। কারো কোন কথা তাঁর পছন্দ না হলেই তিনি চিৎকার চেচামেচি শুরু করতেন। এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন, এমনকি বাবা-মা তুলে গালাগালি করতেন বলে সবাই এই দিনের অপেক্ষায় ছিল।
Comments