রাজনীতি
বড় বাজেটের বড় বোঝা জনগণের উপর চাপানো হয়েছে
২০২২-২৩ অর্থবছরে ব্যাংকব্যবস্থা থেকে ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৬ হাজার কোটি টাকা। গত এপ্রিলে এসে দেখা গেল প্রয়োজন আরও বেশি। ফলে ব্যাংকঋণের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা যা বর্তমান অর্থবছরের ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকার তুলনায় ২৬ হাজার কোটি বা ২৪ শতাংশ বেশি। এর ফলে ঘাটতি পূরণ হয়তো হবে কিন্তু মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে বহুগুন।
বাজেটে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, কর্ম সংস্থানের ক্ষেত্রে বরাদ্দ তুলনামুলকভাবে না বাড়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব ৩৮ হাজার ৫২ কোটি টাকা যা গত বাজেটে ছিল ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা। সেই ৫ শতাংশের ঘরেই থেকে গেল স্বাস্থ্য বাজেট। করোনার আঘাত, চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি, চিকিৎসা ব্যায়ের ৭২ শতাংশ জনগণের নিজেদের পকেট থেকে ব্যয় করার তথ্য জানা থাকার পরও স্বাস্থ্য খাতে কিন্তু বরাদ্দ বাড়লো না উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। যে কোন রাষ্ট্রের জন্য শিক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খাত। বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষায় ৩৪ হাজার ৭২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে যা গত বাজেটে ছিল ৩১ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা খাতে ৪২ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে যা গত অর্থবছরে ছিল ৩৯ হাজার ৯৬১ কোটি টাকা। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ১০ হাজার ৬০২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে, যা গত বছরে ছিল ৯ হাজার ৭২৭ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ দাঁড়ালো ১১.৫৮ শতাংশ। যা ছাত্র সমাজের দীর্ঘদিনের আকাংখা আর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার সাথে কি সঙ্গতিপূর্ণ হলো কি? যে কৃষি দেশের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানের প্রধান খাত সেই খাতে বরাদ্দের পরিমাণটাও দেখা যাক। কৃষি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা যা গত বছরে ৩৩ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। মোট বাজেটের ৪.৬৪ শতাংশ। খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে এত উদ্বেগ সত্তে¡ও কৃষি খাতে বরাদ্দ কি প্রয়োজন পূরণের মতো হয়েছে, সে প্রশ্ন করাই যায়।
প্রতি বছর শ্রম বাজারে আগত ২০ লাখ কর্ম প্রত্যাশীদের কর্ম সংস্থানের বিষয়ে উদ্বেগ যত আছে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী দক্ষতার ঘাটতি যত উদ্বেগ তৈরি করেছে সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাজেটের বরাদ্দ তেমন দৃশ্যমান নয়।
কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, সামগ্রিকভাবে এই বাজেট পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক শোষণমূলক ব্যবস্থার ভিত্তিকে আরও সম্প্রসারিত করবে, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে আরও প্রান্তসীমায় ঠেলে দেবে, বৈষম্য বৃদ্ধি করবে।
Comments