অপরাধ

সরকারি প্রকল্পের শ্রমিক কাজ করছে চেয়ারম্যানের ইটভাটায়

স্থানীয়রা একাধিকবার তার ব্যক্তিগত ইটভাটায় সরকারি প্রকল্পের শ্রমিকদের দিয়ে কাজ বন্ধ করে রাস্তা সংস্কারের কথা বললেও তিনি কোনও কর্ণপাত করেননি। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও থামানো যায়নি সরকারি প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে চেয়ারম্যানের ইটভাটার মাটির কাজ।

স্থানীয়দের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যানকে একাধিকবার এসব শ্রমিক দিয়ে ভাটার কাজ বন্ধ করে রাস্তা সংস্কারের জন্য বলা হয়েছিল, কিন্তু এলাকাবাসীর কথা তিনি শোনেন না।

এরপরও অদৃশ্য শক্তির বলে অন্যায়ভাবে সরকারি প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে তিনি তার নিজের ভাটায় মাটি কাটা অব্যাহত রেখেছেন।

পরে ২২ ফেব্রুয়ারি চেয়ারম্যানের দাম্ভিকতা তুলে ধরে অবৈধভাবে প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে ইটভাটায় মাটি কাটা বন্ধ করাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এলাকাবাসী।

তাদের অভিযোগ, চেয়ারম্যানের এমন অনিয়মের লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।

সরেজমিনে উপজেলার খোদ রসুলপুর এনএম ব্রিকস্ ইটভাটায় গিয়ে দেখা যায়, এই প্রকল্পের ৪নং ওয়ার্ডের ৩১ জন শ্রমিক (নারী-পুরুষ) ভাটার মাটি সরানোর কাজ করছেন। সাংবাদিকের ছবি তোলা বুঝতে পেরে মাটি কাটা বন্ধ করে কোদাল-খাচারি রেখেই কেউ কেউ দ্রুত সরে যান। আবার কেউ ভাটার মাঠ থেকে কিছুটা দূরে সরে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।

ভাটায় কাজ করা প্রকল্পের শ্রমিকরা জানান, তারা কাজ করেন, চেয়ারম্যান তাদের যেখানে কাজ করতে বলবেন সেখানেই তাদের কাজ করতে হয়। চেয়ারম্যানের হুকুমে তারা ভাটায় মাটি কাটার কাজ করছেন।

লিখিত অভিযোগপত্রে স্বাক্ষরকারী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। বর্ষাকালে হাঁটু পরিমাণ কাদা হয়। চেয়ারম্যান এসব রাস্তায় মাটি না দিয়ে প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে নিজের ভাটায় মাটি কাটাচ্ছেন।

তৌহিদুল আরও জানান, এ বিষয়ে আমরা ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। এক সপ্তাহের বেশি সময় পার হলেও অদৃশ্য কারণে তিনি কোনও ব্যবস্থা নেননি। এখনও প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে ভাটায় মাটি কাটার কাজ চলমান আছে।

সরকারের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে প্রকল্পের শ্রমিকদের রাস্তা উন্নয়নের কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করাসহ এমন অনিয়মের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জামালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান মন্ডল।

তিনি বলেন, শ্রমিকরা ভাটার কাজ করেননি। তারা ভাটা থেকে মাটি নিয়ে পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকে দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগটি সত্য নয়, তার প্রতিপক্ষরা এটি করে থাকতে পারে।

লিখিত অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোকসানা বেগম। কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে তিনি জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকার কথা জানিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments