সারাদেশ
লিচুর রাজ্যে জৈষ্ঠের হানা
আল মামুন মিলন, পার্বতীপুর(দিনাজপুর)প্রতিনিধিঃ
লিচুর রাজ্য নামে পরিচিত দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলায় শুরুতেই লিচুতে ভালো মুকুল দেখা গেলেও শেষ মুহুর্তে লাভের মুখ দেখছেনা বাগান মালিকরা। প্রতিবছর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে লিচু রফতানি ও বিক্রি করে সন্তোষ জনক টাকা উপার্জন করতো তারা।
মওসুমের শুরুতে ভালো ফলনের সম্ববনা থাকলেও প্রতিকুল আবহাওয়া আর জৈষ্টের প্রচন্ড তাপ প্রবাহে বাগানেই ফেটে যাচ্ছে লিচু। এছাড়াও লিচুতে কালো দাগ ও পচন পড়ে বিক্রির অনুপযোগী হয়ে পড়েছে অধিকাংশ বাগান। বোটা শুকিয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছে খন্ড খন্ড লিচু। বেশ কিছু বাগান মালিক লিচু পরিপক্ষ হওয়ার আগেই ভালো মুনাফায় লিচু বাগান বিক্রি করলেও সেক্ষেত্রে লোকসান গুনতে হচ্ছে ব্যাবসায়ী ক্রেতাদের। লিচু উৎপাদনশীল এলাকা উপজেলার মন্মথপুর, খয়ের পুকুর হাট ও আমবাড়ীর বড় বড় লিচু বাগান ঘুরে এমনটাই দেখা গেছে। রামপুর ইউনিয়নের সিংগীমারী হিন্দুপাড়া গ্রামের বর্গাচাষি জসোদা
জানান, প্রায় ৪০ টি গাছ নিয়ে লিচু বাগানে ব্যায়ের খরচও জুটবেনা। এদিকে লিচু ক্রয় বিক্রয়ের মোখাম শহরের নতুন বাজার শহীদ মিনার সড়কে দেখা গেছে লিচুর আমদানী কম। চাহিদা থাকা সত্বেও মিলছেনা পছন্দের লিচু। ব্যাবসায়ীরা জানান,বাজারে লিচুর আমদানী কম হওয়াতে দামও কিছুটা বেশী গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। লিচুর ফলন আবহাওয়া নির্ভর হওয়া সত্বেও এবার এ উপজেলায় বসতবাড়ি সহ লিচুর উৎপাদন এরিয়া ছিল ৫৭২ হেক্টর জমি। বোম্বাই, মাদ্রাজি বেদানা ও চায়ন-ত্রি জাতের লিচু নিয়ে বাগান ছিল মোট ৪৮৪ টি। ফলন হয়েছে ৪ দশমিক ৯২ মেট্রিক টন। কর্তন করা হয়েছে দেড়শ হেক্টর জমির ফলন। চলমান আছে চায়না- ত্রি লিচুর কর্তন। অধিক মুনাফা লাভের আসায় কৃষকরা লিচু চাষে ঝুঁকে প্রয়োজনীয় সার কিটনাশক ও পরিচর্যার মাধ্যমে লিচুতে স্বপ্ন গুনতে থাকে। আশানুরুপ মুকুলও দেখা দেয় লিচুতে। কিন্তু জৈষ্টের প্রচন্ড খরোতাপ আর অনাবৃষ্টিতে এখন সেই স্বপ্ন পুড়ে ছাই এ অঞ্চলের কৃষকের। ফলন দীর্ঘ খরায় পড়ে উৎপাদন গতবারের চেয়ে কমে যাওয়ার কথা শি^কার করে পার্বতীপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা সাজেদুর রহমান জানান, মাঠ পর্যায়ে বাগান মালিকদের লিচু গাছের পাতায় স্প্রে ও গাছের গোড়ায় পানি সেচের পরামর্শ দিয়ে কিছু কিছু বাগানের ফলন ভালো হয়েছে বলে দাবী করেন।
Comments