সারাদেশ

দাম বেড়েছে পেঁয়াজ ও মরিচের, অস্বস্তিতে ক্রেতারা

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধাঃ ঈদুল আজহার আগে থেকেই বাজারে দেশি কাঁচা মরিচের দাম আকাশচুম্বী। এক পর্যায়ে সরকার কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দিতে বাধ্য হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় কাঁচা মরিচ বাজারে আসলে দেশি মরিচের দাম কিছুটা কমে যায়। তবে নানা অজুহাতে গত কয়েকদিনে দেশি ও ভারতীয় কাঁচা মরিচ দুটির দামই বেড়েছে। সব মিলিয়ে বাজারে চরম অস্বস্তিতে সাধারণ ক্রেতারা। বিশেষ করে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষরা সংসারের প্রয়োজনীয় চাহিদা ঠিকমতো পূরণ করতে পারছেন না। অনেককেই বাজার থেকে ফিরতে হচ্ছে ব্যাগের তলানিতে কিছু পণ্য নিয়ে।
বর্তমানে খুচরা বাজারে আমদানি করা কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায়, যা কয়েকদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ২৫০ টাকা। আর দেশি মরিচের কেজি ৩২০ থেকে ৪০০ টাকা।

এদিকে বাজের পেঁয়াজের দামও ফের বাড়তে শুরু করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পলাশবাড়ীতে খুচরা ও পাইকারি বাজারগুলোতে দেশি ও আমদানি করা উভয় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে খুচরা বাজারে এক কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকা, যা কয়েক দিন আগেও ছিল ৬০-৬৫ টাকা। আমদানি করা ভালো মানের ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ৪০-৪৫ টাকা, যা আগে ছিল ৪০-৪৫ টাকা।
শুক্রবার (৭ জুলাই) পলাশবাড়ীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ পণ্যের দাম গত সপ্তাহের চেয়ে কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৪৩০ টাকা দরে বিক্রি হওয়া আদা এ সপ্তাহে ৫১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, ৩০ টাকা দরের লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে। গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। ১৬০ টাকা কেজি দরের ছোট সাইজের রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। তবে ১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া বড় সাইজের রসুনের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাঝারি মানের প্রতিটি চাল কুমড়া ৩০ টাকায়, মাঝারি মানের ফুলকপি ৫০ টাকা, ঢেড়স ৪০ টাকা, ও মূলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

এদিকে ফার্মের মুরগির লাল ডিম ১৪৫ টাকা ডজন, কিছুটা আকারে ছোট ডিম ১৪০ টাকা ডজন। গত সপ্তাহে সাইজভেদে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে ডিম। এছাড়া গত সপ্তাহে ফার্মের সাদা ডিম ১২৫ টাকা ডজন বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে ১৪০ টাকা ডজন বিক্রি করা হচ্ছে।
দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এ সপ্তাহে কিছুটা কমে ১৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকার ও মানভেদে পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা কেজিতে। তবে গত সপ্তাহে ৩০০ টাকা কেজি দরে এসব মাছ পাওয়া গেছে। রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে। মাঝারি মানের পাঙ্গাস বিক্রি করা হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে। তেলাপিয়া বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া গরুর মাংস আগের মতোই ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কালিবাড়ী বাজারে কথা হয় বেসরকারি আবুল কালাম আজদের সঙ্গে। তিনি বলেন, সবকিছুতেই অতিরিক্ত দাম। বাজার করতে আসার আগে যে পরিকল্পনা থাকে বাজারে এসে তা ভেস্তে যায়। লিস্ট লম্বা থাকলেও দাম বেশি হওয়ায় অনেক হিসাব করে পরিমাণে কম নিয়ে বাজার করতে হচ্ছে। প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়তি। সরকার বোতলজাত গ্যাসের দাম কমালেও আমি গতকাল ১২৫০ টাকাতে কিনেছি। এই কাঁচা বাজারেও একই অবস্থা। ৩৫০ টাকা এখনো মরিচের দাম। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়।
নাসির নামের আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে এলেই ঘাম ছুটে যায়। সবকিছু কিনতে পারি না। সব জিনিসের অতিরিক্ত দাম। সবকিছুর দাম বাড়লেও আমার বেতন তো বাড়েনি। মাংসের যে দাম তাতে আমার মতো মানুষের মাংস খাওয়া এখন বিলাসিতা। কিছুই বলার নেই। দাম বাড়ে আর আমরা কিনে খাই। এভাবেই চলছে। কিছুই ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নেই।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments