অপরাধ

গাইবান্ধায় রুমমেটকে নির্যাতন, চেয়ারম্যানের ছেলের বিরুদ্ধে মামলা

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ রুম ভাড়ার হিসেব চাওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়েছে চেয়ারম্যানের ছেলেসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে। শুক্রবার (৭ জুলাই) রাতে ভুক্তভোগী জাহেদ পারভেজ জনি চৌধুরী সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যা চেষ্টার মামলা করেন।
রুম ভাড়ার টাকার হিসেব চাওয়ায় জাহিদ পারভেজ জনি চৌধুরীকে দলবল নিয়ে পেটান গাইবান্ধা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীরের ছেলে শাহ ছিরাতী মাজহাব ওরফে অরণ্য (২৭)। জনিকে একটি কক্ষে দুই ঘণ্টা ধরে অন্তত ১১ জন মিলে নির্যাতন চালান। এ নিয়ে জনির উপর একই ঘটনার জেরে দুই দফায় হামলা চালানো হয়।এর আগে গত ২৯ জুন (ঈদের দিন) রাত ৯টার দিকে শহরের দাস বেকারিমোড় এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার পর থেকে জনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। আহত জনি গাইবান্ধা ডেভিড কোম্পানিপাড়ার মৃত আব্দুল হালিম চৌধুরীর ছেলে। চেয়ারম্যানের ছেলে অরণ্য ও জনি একে অপরের রুমমেট। তারা ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে দেড় বছর ধরে এক সঙ্গে থাকতেন।
মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন- একই এলাকার নান্নু মিয়ার ছেলে সুজন মিয়া (২৫), মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আসিফ মিয়া (২৪), রন্জু মিয়ার ছেলে জীবন (২৩), নজরুল ইসলামের ছেলে সাগর মিয়া (২৫) ও জুয়েল (২২)।মামলার এজাহারে বলা হয়, হামলার শিকার জনি ও শাহ ছিরাতী মাজহাব ওরফে অরণ্য ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় একই বাসায় একটি রুম ভাড়া নিয়ে থাকতেন। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি কয়েক মাসের হিসেবে বেশ গরমিল পাওয়া যায়। পরে অরণ্যের কাছে হিসেব জানতে চান জনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাসা ছেড়ে দিতে হুমকি দেন অরণ্য। এমন আচরণের প্রতিবাদ করায় তর্কাতর্কির একপর্যায়ে অরণ্য ছুরি দিয়ে জনির বুকে আঘাত করার চেষ্টা করে। এ সময় জনি আটকাতে গেলে তার হাতের কবজি এবং আঙুলের অগ্রভাগের মাঝামাঝি স্থানে মারাত্মকভাবে কেটে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় রুমমেট আবির ও এক বড় ভাইয়ের সহায়তায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরদিন ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (নিটোর) ভর্তি হন তিনি।
জনি হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ফেরার পর অরণ্য তার মোটরসাইকেল আটকে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। গত ২০ মে ঢাকার ভাটারা থানায় অরণ্যের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে জনি তার মোটরসাইকেল ফেরত পায়।
পরবর্তীতে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে ছুটিতে বাড়িতে আসেন জনি। আগের ঘটনার জের ধরেই ২৯ জুন রাত ৯টার দিকে দ্বিতীয় দফায় অরণ্য দলবল নিয়ে শহরের দাস বেকারির মোড়ে জনির পথরোধ করে। অরণ্যসহ সুজন, আসিফ, জীবন, সাগর ও জুয়েল পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক দেশীয় অস্ত্র দিয়ে জনিকে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। অভিযুক্তরা মারধরের এক পর্যায়ে তারা জনিকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। আহত জনিকে তারা টেনে হিঁচড়ে অরণ্যের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে জনির স্বজনরা স্থানীয়দের সহায়তায় রাত ১১টার দিকে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওয়াহেদুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করছে।
অভিযুক্ত অরণ্যের বাবা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ সারোয়ার কবীর বলেন, আমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে আমার জানা নেই। আর মামলা হলে তো আদালত আছে, আদালত থেকে জামিন নেব।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments