সারাদেশ

ফুলছড়ি উপজেলায় বন্যায় রাস্তা ভাঙ্গন, দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ৩০ হাজার মানুষ

ছাদেকুল ইসলাম রুবেল,গাইবান্ধাঃ ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার নিম্নাঞ্চলের গ্রামগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বন্যার পানির তোড়ে গজারিয়া ইউনিয়নের নীলকুঠি আর্দশ গ্রামের রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে। এতে আর্দশগ্রামসহ ওই এলাকার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। তাদের যাতায়াতের একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্লাস (ইজিপিপি+) ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৭৯ হাজার ৭ হাজার ৫০০ টাকা ব্যয়ে গজারিয়া ইউনিয়নের আকরামের বাড়ি হতে আর্দশগ্রাম পর্যন্ত রাস্তাটি মেরামত করলেও বন্যার পানির স্রােতে ভেঙ্গে গেছে। এ রাস্তাটি দিয়ে আর্দশগ্রামের ৮০টি পরিবার, আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে ১৩০টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারসহ প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চলাচল করে।

আর্দশ গ্রামের বাসিন্দা চান্দু শেখ জানান, বন্যার পানিতে রাস্তাটি ভেঙ্গে গেছে। এখন ১০ টাকা নৌকা ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। এ কষ্ট যে কত দিন থাকবে আল্লাহ জানে। মালতি রানী বলেন, হামঘরে আর্দশ গ্রামে কারেন্ট থিকি শুরু করি সবে আচে। কিন্তু হামঘরে রাস্তাটা হয় নাই। প্রত্যকবার বন্যার সময় ওটা ভাঙবেই। এতে হামঘরে কষ্টের শেষ নাই। আগোত তিনচারবার যাওয়া-আসা করছি, এখন একবারে সারাদিনের কাজ শেষ করার নাগে।

প্রকল্প কমিটির চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য জিহাদুর রহমান জানান, নদীর মাঝখান দিয়ে আর্দশ গ্রামের রাস্তাটি করা হয়েছে। প্রায় আধা কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে দুটি ব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রতিবছরেই এটি মেরামত করা হয়। কিন্তু বন্যার সময় রাস্তাটি ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা করে যেখানে প্রতিবছর ভেঙ্গে যাচ্ছে সেখানে রাস্তার দু’পাশে খোয়া, রট-সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করলে আর ভেঙ্গে যাবে না।

এসব নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও গাইবান্ধা সদর উপজেলার নদী তীরবর্তী নিচু অঞ্চল এবং উত্তর উড়িয়া, রতনপুর, কাবিলপুর, রসুলপুর, খলাইহাড়া, মাঝিপাড়া, ছাতারকান্দি, বাজে তেলকুপি, বুলবুলির চর, কাউয়াবাধা, উজালডাঙা, কৃষ্ণমণি, পূর্ব খাটিয়ামারী, জিয়াডাঙা চর এলাকায় নতুন করে পানি উঠতে শুরু করেছে। ফলে ওইসব এলাকার মানুষ বন্যা আতঙ্কে নানা উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছে।

যমুনা-ব্রহ্মপুত্র, ঘাঘট ও তিস্তার পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব নদনদীর পানি এখনও বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়ির তিস্তামুখঘাট পয়েন্টে আজ শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার, ঘাঘট নদীর নিউব্রীজ পয়েন্টে ৩৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯৭ সেন্টিমিটার ও করতোয়া নদী পানি ২৪ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৪০৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাফিজুল হক বলেন, ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়েছে। চরাঞ্চলে নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করছে। গতকাল পর্যন্ত জেলার সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়লেও এখনও বিপদসীমার অনেক নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments