September 16, 2024
সারাদেশ

ভূমিহীনদের পুনর্বাসনসহ তিন দফা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুরে ভূমিহীন ও গৃহহীন সংগঠনের মিছিল সমাবেশ

৩১ আগস্ট ২০২৩ বৃহস্পতিবার ভূমিহীনদের পুনর্বাসন, চাল-ডাল-তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম কমানো এবং আর্মি পুলিমের রেটে সকল গরীব মানুষের জন্য রেশনের দাবিতে ভূমিহীন ও গৃহহীন সংগঠন, রংপুর এর উদ্যোগে মিছিল, সমাবেশ ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি পেশের কর্মসূচি পালিত হয়।সকাল ১১টায় প্রেসক্লাব থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ শেষে রংপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়।এখানে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান সংগঠক আনোয়ার হোসেন বাবলু, সংগঠক আহসানুল আরেফিন তিতু।নেতৃবৃন্দ বলেন, রংপুর সিটি কর্পোরেশন এবং এর আশেপাশের উপজেলার কয়েক সহস্র ভূমিহীন ও গৃহহীন ছিন্নমূল, ঠিকানাবিহীন পরিবার খাস জমিতে তাদের পুনর্বাসনের জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে। উল্লেখিত পরিবারগুলো নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে অভাবের তাড়নায় ভিটামাটি হারিয়ে নিঃস্ব বা জন্মগতভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীন। এসব পরিবারের বিরাট অংশ সড়ক মহাসড়কের ধারে,রেললাইনের ধারে মাটি ভাড়া নিয়ে চালাঘর করে বা ঘর ভাড়া নিয়ে একই ঘরে ১০/১২ জন মিলে থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ২০২২ সালের মধ্যে মুজিববর্ষে দেশের সকল ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের আশ্বাসে রংপুরের ভূমিহীন গৃহহীনরাও আশায় বুক বেঁধেছিলো।ইতিমধ্যে অন্যের জমিতে ভাড়ায় ঝুপড়ি ঘরে বসবাসকারী ভূমিহীনদের জমির মালিক/দখলদাররা উচ্ছেদ শুরু করেছে।জমির মালিকের বেধে দেওয়া সময় অতিক্রম হলে ঘরদোর ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।অথবা কোন কোন ভূমিহীনদের চলে যেতে বাধ্য করার জন্য রাতের অন্ধকারে ঘরের বারান্দায়, আঙ্গিনায় মল ঢেলে দেওয়া হচ্ছে বা মল দিয়ে ঢিল ছুড়ছে।ইতিপূর্বে ভূমিহীনদের সংগঠন ভূমিহীন ও গৃহহীন সংগঠন, রংপুরের উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কাছে রংপুর সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন উপজেলার ৫ সহস্রাধিক ভূমিহীন পরিবারের তালিকা ভোটার আইডি কার্ডসহ জমা দেওয়া হয়।কিন্তু জেলা প্রশাসক জানান সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ভূমিহীনদের পুনর্বাসনে বাধা আছে।কারণ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় সকল খাস জমি অকৃষি।এসব ভূমিহীনদের উপজেলায় পুনর্বাসনের কথা জেলা প্রশাসক বলেন।কিন্তু রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ক্ষেত্রে একথা খাটে না।কারণ রংপুর সিটি কর্পোরেশনে পুরাতন পৌরসভার সাথে নতুন যে ১৫৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা যুক্ত হয়েছে তার পুরোটাই কৃষি জমি।।আবার যেসব ভূমিহীন এখানে বাস করে তারা ভ্যান, রিক্সা, অটো চালিয়ে,দিনমজুরী করে, বাসাবাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে, নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে, হ্সপাতাল, ক্লিনিক, রাস্তাঘাট, ড্রেন পয়-পরিষ্কারসহ বিভিন্ন আত্মকর্মসংস্থানমূলক কাজ করে কোনরকমে জীবন চালায়।গ্রামে বছরে তিনমাস কৃষিকাজ ছাড়া অন্য কাজের সুযোগ নেই বললেই চলে।তাই জীবন বাঁচানোর তাগিদে শহরে বসবাসকারী ভূমিহীনদের উপজেলায় ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করলে পরিবার পরিজন নিয়ে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে।তাই সিটি কর্পোরেশন এলাকায় যে বিশাল পরিমাণ খাসজমি স্বনামে, বেনামে বিত্তবানরা ভোগদখল করছে তাদের কাছ থেকে সেসব জমি উদ্ধার করে ভূমিহীনদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাই।এছাড়া রংপুর শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় কালেকটরেট এর অধীনে অনেক জমি ও বাড়ি রয়েছে,যেখানে সরকারী আমলা ও প্রভাবশালীরা বেনামে ভোগদখল করছে বা জমি কিংবা বাড়ি ভাড়া দিয়ে লাভবান হচ্ছে। ইতিমধ্যে উচ্ছেদকৃত ভূমিহীনদের এসব জমি বা বাড়িতে পুনর্বাসন করতে হবে। এছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম গরীব মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে হবে এবং আর্মি-পুলিশের রেটে ভূমিহীনসহ সকল নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য রেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। দীর্ঘ এক ঘন্টা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ চললেও জেলা প্রশাসক বা তার কোন প্রতিনিধি ভূমিহীনদের সাথে দেখা করতে আসেননি এবং শেষে সমাবেশের পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও তিনি ভূমিহীনদের সাথে কথা বলেননি।এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন জেলা প্রশাসক প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী অথচ জনগণের সাথে কথা বলার তার সময় নেই।ভবিষ্যতে বিষয়টি তিনি খেয়াল করবেন বলে আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments