September 19, 2024
মুক্তমত

বর্তমান সাংবাদিকতা কোন পথে ?

।। মোল্লা তানিয়া ইসলাম তমা ।।
 একেবারে ছোটবেলা থেকেই সাংবাদিকতা পেশা নিয়ে আমার অনেক আগ্রহ ছিল । ৫ম শ্রেণির ছাত্রী থাকাকালে টিভির খবর ও পত্রিকার রিপোর্ট দেখে ভালো লাগতো। ভাবতাম যদি আমি রিপোর্টার হতে পারতাম তাহলে ভালোই হতো । তখন থেকেই মোটামুটি ভালো লাগা শুরু । বাবার লেখালেখি দেখে নিজেও চেষ্টা করি কিছু লিখতে । আর তখন থেকেই মূলত লেখালেখিতে যুক্ত । বর্তমানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী । পড়ালেখার পাশাপাশি সময় পেলেই কোন এক বিষয় নিয়ে লিখার চেষ্টা করি । আমার লেখা গুলো বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে যখন প্রকাশ হয় তখন আমার লেখার গতি আরও বেড়ে যায় । তাই আমি সাংবাদিকতাকে মনে প্রানে শ্রদ্ধা করি । কারন সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা । সাংবাদিকতাকে বলা হয়, রাষ্ট্রের ৪র্থ স্তম্ভ । যাকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রের উন্নয়ন কল্পনা করা যায় না । কিন্তু আজকে কিছু সাংবাদিক নামধারী মহান এই পেশাটিকে কলুষিত করছে এবং করতেছে । সাংবাদিকতা যে একটি মহৎ পেশা এতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই । তবে, বর্তমানে যা হচ্ছে তা দেখে আমি বিড়ম্বনায় পড়ে গেছি । আসলে আমি যেই সাংবাদিকতার স্বপ্ন দেখেছিলাম, সেই সাংবাদিকতা করতে পারবো তো? বলার অপেক্ষা রাখেনা, কিছু প্রতারকদের জন্য সাংবাদিকতার মতো মহৎ পেশা আজ কলঙ্কিত । টাকার বিনিময়ে প্রেসকার্ড ধরিয়ে দিচ্ছে রাস্তার হকার থেকে শুরু করে টমটমচালক, কাঠমিস্ত্রি থেকে শুরু করে রাজমিস্ত্রি, হোটেলের ম্যানেজার থেকে বাবুর্চী, মাদকসেবী থেকে শুরু করে মাদক বিক্রেতা, মূর্খ থেকে শুরু করে গ-মূর্খ পর্যন্ত সবার হাতে । কার্ড ধারী সবাই এখন সাংবাদিক । হোটেলের এক বেয়ারার কাছে কয়েকদিন আগে দেখলাম, প্রেস-কার্ড! দেখে একটু অবাক-ই হলাম । এরা যদি প্রেস-কার্ড নিয়ে ঘোরে, তাহলে পড়াশোনা শিখে সাংবাদিকতা করে লাভ কি? লেখাপড়া না করেই তো সাংবাদিকতা করা যাবে । শুধু এখানেই শেষ নয়; জেলা প্রতিনিধি, ক্রাইম রিপোর্টার আর বিশেষ প্রতিনিধির তমকাধারী এ প্রতারকরা সর্বত্র বিচরণ করছে । হুমকিদাতা, টাকা দাবিকারী আর টাকার বিনিময়ে কার্ড-বাণিজ্য করছে অহরহ । এখন আবার নানা কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের এমআর, এসআররা কার্ডধারী কথিত সাংবাদিক । নানা দোকানে অর্ডার নিতে গিয়ে দেখি স্বগৌরবে পরিচয় দেয় “সাংবাদিকতা করি”! হায় সাংবাদিকতা! বর্তমানে বিভিন্ন জেলায় সাংবাদিক নামধারী দোকানীদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে । খোদ রাজধানীসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শহরেও স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন অনেকে ব্যুরো অফিস খুলে বসেছেন । আর কতো এদের দৌরাত্ম্য? আসলেই এসব অপসাংবাদিকতার জন্যই, এই পেশা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন । এবং নিজেকে নিজেই প্রশ্ন করি। “যারা পেশাদার সাংবাদিক, মানুষ তাদেরকে এমনিতেই চেনে । কার্ড দেখে চিনতে হয় না । সাংবাদিকের আচার-আচরণ, কথাবার্তা দেখলেই বোঝা যায় । কেনো যেন মনে হয়, ভূঁইফোড়রাই কিভাবে জেন ম্যানেজ করে নেয় আমাদের সমাজপতি, পুলিশ-প্রশাসন, রাজনীতিবীদসহ সমাজের উচ্চবিত্তদের । আর যারা তেলবাজ কিংবা চাটুকার নয় তাদের অনেককেই লোকে সাংবাদিক হিসেবে অযোগ্য ভাবে । এ কথা-ই সত্য যে, আমাদের বর্তমান যে রাষ্ট্রীয় নীতি কিংবা সমাজব্যবস্থা তাতে যোগ্যতম কেউ আর সাংবাদিকতায় আগ্রহবোধ করেন না । বিভিন্ন যায়গায় গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে “ইতোমধ্যে বিভিন্ন জেলা-উপজেলার চা-দোকানি, সেলসম্যান, ফুচকা-চটপটিওয়ালা, বাদামওয়ালা, রিকশা-ভ্যান চালক, নামধারী কথিত বাউল শিল্পী, আইসক্রিম বিক্রেতাসহ অনেকে এ পদের কাবিল হয়েছেন । এসেছেন সাংবাদিকতা পেশায় । কিন্তু প্রশ্ন এ পেশায় কিছু মানুষ এতো আগ্রহী কেন? বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, একটা সময় তরুণ-তরুণীদের স্বপ্নের পেশা ছিল সাংবাদিকতা । সাহসী ও চ্যালেঞ্জিং পেশা হিসেবে সাংবাদিকতাকেই তারা বেছে নিতেন । এখন অনেকটায় বদলে গেছে কথাটি । দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সাংবাদিকতা বিষয়ে পড়াশোনার হার হয়তো বেড়েছে, কিন্তু পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীদের সাংবাদিকতায় আসার হার কমে যাচ্ছে । আবার যারা এসেছেন, তাদের অনেকেই এই পেশা ছেড়েছেন । আর যারা আছেন, তাদের কেউ কেউ ছাড়ার অপেক্ষায় আছেন । সুযোগ পেলেই অন্য কোনো চাকরিতে চলে যাচ্ছেন তারা । গেলো কয়েক বছরে আমার পরিচিত অনেকেই সাংবাদিকতা পেশা ছেড়েছেন । বিশেষ করে মেধাবী সাংবাদিকরা, যাদের রিপোর্ট আলোচনায় ছিল, যারা নজরকাড়া প্রতিবেদন করেছিলেন, তেমন কেউ যখন সাংবাদিকতা ছেড়ে দেন, তখন বিষয়টি মনকে নাড়া দেয় । তারা কেন এই মহান পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় ধাবিত হচ্ছেন? তাহলে কি এর জন্য সমাজ দায়ী না অপসাংবাদিকতা? নাকি তারা তাদের মান পাচ্ছেন না বলে চলে যাচ্ছেন অন্য পথে? এদিকে যেমন মেধাবীরা সাংবাদিকতা ছাড়ছেন, অপরদিকে স্বাক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন অযোগ্য, অপসাংবাদিকতা সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে । বাড়ছে ফেসবুক সাংবাদিকতা । জেনে রাখতে হবে, একটি সভ্য দেশের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে সাংবাদিক সমাজ। কোনো দেশের সাংবাদিক সমাজ যখন দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখে, তখনই সেই দেশ এগিয়ে যায় । সাংবাদিকরা যখন তৈলাক্ত পথে হাঁটেন, তখন সেই দেশও তৈলাক্ত পথ বেয়ে নিচে নেমে যায় । সংবাদপত্র হচ্ছে আয়নার মতো । আয়না কখনো মিথ্যা বলে না । যে আয়না মিথ্যা বলে, সেটি আয়না নয়, অন্য কিছু । তার মানে হচ্ছে, যে সংবাদপত্র মিথ্যা বলে, সেটি সংবাদপত্র নয় । এক ফালি ছাপা কাগজ মাত্র । তাই প্রকৃত সাংবাদিকদের এই অপসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে স্ব-স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে এসে প্রতিবাদী হতে হবে । না হলে ইজ্জত বাঁচাতে প্রকৃত সাংবাদিকদের এ পেশা ছেড়ে পালাতে হবে । ক্ষতিগ্রস্ত হবে রাষ্ট্র । একমাত্র সংবাদপত্রের পাতায় ফুটে উঠে সমাজের প্রতিচ্ছবি । সামাজিক উন্নয়ন,মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা,সত্য-সুন্দর এবং ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গঠনে সংবাদপত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন,একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শুরু করে মানুষের অধিকার আদায়ের বিভিন্ন সংগ্রামের পাশাপাশি রাষ্ট্রের সামগ্রিক উন্নয়নে সংবাদপত্রের অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপট সম্পুর্ন ভিন্ন। এই মহান পেশাটাকে একেকজন একেক ভাবে নিয়েছে । একটা সময় ছিল যখন সাংবাদিকতা শুধু খবরের কাগজের গ-ির মধ্যেই আবদ্ধ ছিল। এখন খবরের কাগজের স্থান দখল করে নিয়েছে টেলিভিশন চ্যানেল ও অনলাইনগুলো।একজন সাংবাদিকের কাজ কি? তিনি সমাজের সচিত্র প্রতিবেদন তার নিজ মিডিয়ায় প্রকাশ করবে। কিন্তু এখন দেখা যায়,সাংবাদিকের হাতে একটা মোবাইল ফোন আছে। তিনি ঘটনা ঘটার সাথে সাথে তথ্য প্রমাণ যাচাই বাছাই না করেই ফেসবুকে পোস্ট করে তার সাংবাদিকতা শেষ করেন । এই কাজটা সাধারণ মানুষ করতে পারেন। কিন্তু একজন সাংবাদিক করতে পারেননা। তার ফেসবুকে কোন বিষয়ে পোস্ট করতে হলে অন্তত ১০ বার ভাবতে হবে তাকে। ঘটনার সার্বিক পরিস্থিতি শতভাগ নিশ্চিত না হয়ে একজন সাংবাদিক ফেসবুকে পোস্ট করাটা মোটেই উচিত নয়। কারণ সাধারণ মানুষ সাংবাদিকের ফেসবুকটাকেও মিডিয়া মনে করে । সমাজের আরো দশটা মানুষের থেকে আলাদা হয়ে ভাবতে হয় একজন সাংবাদিককে। অনেক সাংবাদিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে গণ্যমান্যদের সঙ্গে হাহা হিহি করে সেলফি তোলেন। সেগুলো আবার গর্ব করে তার ফেসবুকে আপলোড করেন। একবার ভাবুন তো, যার সঙ্গে আপনি সেলফি তুলতে গেলেন, তিনি কি কখনও আপনার সঙ্গে সেলফি তুলতে আসছেন? মানুষ যেখানে ভাবনা শেষ করে,সেখান থেকে একজন সাংবাদিকের ভাবনা শুরু হয় । এই ভাবে নিজের ব্যক্তিত্ব তুলে ধরতে হবে কেন? নিজেকে হালকাভাবে উপস্থাপনের কোনো প্রয়োজন নেই । এই ফেসবুক পোস্ট সাংবাদিকতা আর সংবাদপত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে । মানুষ কোন বিষয়ে জানার জন্য সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের দিকে তাকিয়ে থাকে । আর আপনি ফেসবুকে একটা পোস্ট করে বিষয়টির গুরুত্ব শেষ করে দিলেন । আপনার ফেসবুক সাংবাদিকতার কারণে মুলধারার গণমাধ্যমগুলো এই সংবাদটি আর ছাপতে চায়না । তখন ঘটনার আসল রহস্যও বের করা বা জানা যায়না । এই জন্য গণমাধ্যমকর্মীকে অবশ্যই ফেসবুক পোস্ট থেকে যত সম্ভাব বিরত থাকতে হবে । তবে বিশেষ ক্ষেত্রে অন্য হিসাব । সংবাদপত্র বর্তমানে একটি দলিল,যা যুগ যুগ ধরে সংরক্ষন করে রাখা যায়। সংবাদপত্র মূলত পাঠকের জন্য এবং সে পাঠক অবশ্যই সমাজমনস্ক পাঠক। সংবাদপত্র যখন নির্বিঘেœ সমাজের নানা ঘটনার একটি নিরপেক্ষ সংবাদচিত্র পাঠকদের উপহার দিতে পারে,তখন সে সংবাদপত্র শুধু পাঠকের খোরাক যোগায় না, একজন সাধারণ পাঠককেও সু-নাগরিক করে তোলে । সাংবাদিকের লিখনীর কারনে সংবাদপত্রের সার্কুলেশন বৃদ্ধি পায় । আপনি স্থানীয় খবরগুলো সঠিক তথ্য যাচায় করে খবরের পিছনের খবরকে যখন শিরোনাম করবেন, তখন আপনার ওই পত্রিকার সার্কুলেশন অটোমেটিক বৃদ্ধি পাবে । পাঠক আপনার পত্রিকা পড়তে আগ্রহী হবেন । আপনি পাঠককে খোঁজতে হবেনা । পাঠক আপনাকে খোঁজবে । অনেকে মনে করছেন টেলিভিশন ও রেডিও চ্যানেল বৃদ্ধির সাথে সাথে সংবাদপত্রের গুরুত্ব লোপ পেতে পারে। আসলে এটা ঠিক নয়। সংবাদের গ্রহণযোগ্যতা ও পেছনের ভূমিকা উপস্থাপন এবং সংবাদের পেছনের সংবাদ খুঁজতে সংবাদপত্রের বিকল্প নেই। সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে সংবাদপত্রই উৎকৃষ্ট স্থান বলে আমার বিশ্বাস । বাংলাদেশের সংবাদপত্রের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি বাংলা ও ইংরেজি পত্রিকা ছিল । তার মধ্যে দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, দৈনিক সংরাম, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক খবর, দৈনিক বাংলা, দৈনিক অবজারভার উল্লেখযোগ্য । বর্তমানে শুধু ফেসবুক সাংবাদিকতা পরিহার করে খবরের পিছনের খবর ঘটনার পিছনের ঘটনা তুলে আনতে পারলেই সত্যিকারের সাংবাদিকতা আবার ফিরে পাবে জাতি । বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সাংবাদিকতা পুরোপুরি পণ্যে পরিণত হয়েছে। এখন সাংবাদিকতায়-আসা মেধাহীন মূর্খরা দু’লাইন লিখতে না পারলেও সাংবাদপত্রের বড় বড় পদ এদের দখলে । এদের অনেকে প্রকাশ্যে বলে,আমি তো লেখি না, লেখি কী হবে? ভালোই তো আছি। এতোকাল জানতাম,যে সাংবাদিক ভালো লেখেন, বেশী লেখেন এবং যার লেখার ধার যত বেশি,তিনিই তত বড় সাংবাদিক, নামকরা সাংবাদিক। কিন্তু আজকের অবস্থা সম্পূর্ণ ভিন্ন। আজকে বলে আমার মাসে একটা অথবা বছরে ৪/৫ টা নিউজ ছাপা হলেই চলে। অথবা কোন সাংবাদিক কারোর বিরুদ্ধে লেখলে অন্যরা তেল মারে। নিজেকে বড় সাংবাদিক দাবি করে বলেন,আমি তো আপনার বিরুদ্ধে লেখেনি। আমার সময় নেই। আমি আরেকটা পেশায় আছি, কি দরকার আছে এতো লেখালেখির। নানান কথা বলতে শুনা যায়। এতো কিছু থাকলে আপনাকে এই পেশার আসতো বলছে কে? আপনি তো সাংবাদিক নয়। একজন প্রতারক। কারণ আপনি সাংবাদিকতার সাথে প্রতারণা করছেন। ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করে আইডি কার্ড ব্যবহার করে ঠিকই সুবিধা হাসিলে ব্যস্ত। লেখবেন কি ভাবে,লেখার যোগ্যতা থাকলেই তো লেখতেন। সাইনবোর্ড ব্যবহার করবেন,আর লেখবেননা এটা তো হতে পারেনা। আপনাকে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিয়োগ দিয়েছে কি জন্য? শুধু মুখে সাংবাদিক সাংবাদিক বলে পরিচয় দেওয়ার জন্য? আমরা কেউ ভুলের উর্ধ্বে নই। ভুল লেখকেরও হতে পারে। ভুল আমারও হতে পারে। আসুন সব সাংবাদিক বন্ধু মিলে পেশাটাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাই,সবক্ষেত্রে রুচিশীলতার পরিচয় দেই। পেশার সম্মান বাড়াতে আরও পেশাদার এবং সচেতন হই ।


Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments