September 08, 2024
কৃষি

ড্রাগন ফল চাষ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন জাহাঙ্গীর

কষ্টের সংসার। কোনো রকমে এইএসসি পাস করেন। এরপর আর লেখাপড়া করার সুযোগ হয়নি তার। চাকরির পেছনে না ছুটে ড্রাগন ফল চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন তিনি। প্রযুক্তি ও ইউটিউবের সহায়তায় তিনি বাবার পতিত জমিতে ড্রাগন চাষ শুরু করেন। তিনি প্রাথমিকভাবে ১ লাখ টাকা পুঁজি নিয়ে এই ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। বলছি দিনাজপুরে জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ড্রাগন ফল চাষি জাহাঙ্গীর আলমের কথা। কয়েক বছরের ব্যবধানে এখন তার বাৎসরিক আয় ১০ লাখ টাকা। বাগানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন অনেকে।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হচ্ছে সব ধরনের পরামর্শ। শুরুর গল্পটা এত সহজ ছিল না। ড্রাগন চাষের জন্য পরিবারের কাছে অর্থ-সহায়তা চাইলে তার পরিবার তাকে নিরুৎসাহিত করেন। কিন্তু জাহাঙ্গীরের যে স্বপ্ন, তা থেমে যায়নি। স্থানীয় একটি ব্যাংক থেকে সে লোন নিয়ে যাত্রা শুরু করেন। এখন তার ছোট ভাইও তার সঙ্গে সময় দিচ্ছেন ড্রাগন বাগানে। এখন তিনি দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করেন ড্রাগন চাষ সম্প্রসারণে। চারা তৈরি, এলাকার বেকার যুবকদের উৎসাহিত করা, বাগান তৈরিতে সহায়তা করাই তার মূল কাজ।
দীর্ঘ ৬-৭ বছরে নিজের স্বপ্ন পূরণের পথে অনেকটা এগিয়ে এখন অন্যদেরও তিনি ড্রাগন ফল চাষে পথ দেখাচ্ছেন। ২০২০ সালে যে স্বপ্ন শুরু করেছিলেন জাহাঙ্গীর, কয়েক বছরের ব্যবধানে তার বাগানে এখন ফলযোগ্য ড্রাগন গাছ রয়েছে ১ হাজারের ওপরে। এর মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদনে তিনি আট ধরনের জাত ব্যবহার করলেও তার কাছে আরও বেশ কিছু উন্নত জাতও রয়েছে। প্রতিটি ড্রাগন গাছ বছরে ৮ মাস (শুধু শীতকাল বাদে) একাধারে ফল দেয়। প্রতিটি গাছ থেকে ২০ কেজি পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। বর্তমান বাজারে প্রতি কেজি ফল পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত। তিন বছরে একটি ড্রাগন গাছ পরিপক্বতা অর্জন করে। ১৫ বছর পর্যন্ত ফল দিতে সক্ষম ড্রাগন গাছ।
স্থানীয় কয়েকজন বলেন, আমরা ড্রাগন বাগান দেখতে আসছি। আমরা জাহাঙ্গীর ভাইয়ের কাছ থেকে ড্রাগন ফল চাষ বিষয়ে বিভিন্ন পরামর্শ নিচ্ছি। নিজেরাও একটা বাগান তৈরি করব।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমার ৩০ শতাংশ জমিতে ১ হাজারের ওপরে গাছ রয়েছে। এইসব গাছ থেকে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকার মতো ফল বিক্রি করে আয় আসে। অন্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায় বললেন এই তরুণ উদ্যোক্তা।
নবাবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৭ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছে। আবহাওয়া উপযোগী থাকায় জেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেকেই ড্রাগন চাষ করছেন। অনেকেই শখের বসে বাসার ছাদেও চাষ করছেন, ফলনও পাচ্ছেন। আমাদের এখানে কৃষি উদ্যোক্তা জাহাঙ্গীর আলম সফলতা এলাকার অন্য যুবকদেরও পথ দেখাচ্ছে। আমাদের কৃষি বিভাগও তাদের সব ধরনের সহায়তা প্রদান করছেন।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments