সারাদেশ
তারাগঞ্জে ধর্ষণ মামলায় পলাতক চেয়ারম্যান পাইলট সেবাবঞ্চিত সয়ার ইউনিয়নবাসী
রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ৫নং সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আল-ইবাদত হোসেন পাইলট গত পাঁচ দিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদে না আসায় সেবাবঞ্চিত ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন সয়ার ইউনিয়নবাসী। গত সোমবার ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তালা ঝুলতে দেখা যায় চেয়ারম্যানের কক্ষে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, চেয়ারম্যান আল-ইবাদত হোসেন পাইলটের বিরুদ্ধে গত ৫ অক্টোবর ৯/১ (ক) ধারায় নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে তারাগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে। তাই চেয়ারম্যান পাইলট পাঁচ দিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদে না এসে আত্মগোপনে আছেন। এদিকে আলোচিত ঘটনাটি গণমাধ্যমে ব্যাপক হারে প্রচার হওয়ায় চেয়ারম্যান আল-ইবাদত হোসেন পাইলটকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে তারাগঞ্জ থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেন তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (তদন্ত) ওসি জহুরুল হক।
সয়ার ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন আবেদন নিয়ে আসা সেবাপ্রত্যাশীরা চেয়ারম্যানের দেখা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদপত্র সহ বিভিন্ন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সয়ার ইউনিয়নবাসী।
ফরিদাবাদ গ্রামের সাগর মিয়া বলেন, আমার ছোট বোন রুমা আক্তারের জন্ম নিবন্ধনে স্বাক্ষর নেওয়ার জন্য দুই দিন ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলাম। চেয়ারম্যান না থাকায় বাধ্য হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে।
বারাপুর গ্রামের আরজু বেগম বলেন, আমি প্রত্যয়ন নিতে ইউনিয়ন পরিষদে আসছি। শুনলাম চেয়ারম্যান পরিষদে পাঁচ দিন থেকে আসেন না। স্বাক্ষরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চেয়ারম্যান নেই স্বাক্ষর কে দিবে তাই ফিরে যাচ্ছি।
৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ বলেন, চেয়ারম্যান কয়েকদিন থেকে ইউনিয়ন পরিষদে আসেন না। এতে জনগণকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। আমরাও খুব সমস্যায় আছি।
ধর্ষিতা ওই কলেজ ছাত্রীর বাবা আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সয়ার ইউপি চেয়ারম্যান পাইলট আমার কলেজ পড়–য়া মেয়ের সরলতার সুযোগ নিয়ে যে ক্ষতি করেছে আমি তার বিচার চাই। ওই চেয়ারম্যান পাইলটের কারণে আমার মেয়ের সংসার ভেঙে গেছে। এজন্য আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার দাবী করছি। তারাগঞ্জ থানা পুলিশ এখন পর্যন্ত ধর্ষক চেয়ারম্যান পাইলটকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তারের জন্য অনুরোধ করছি।
সয়ার ইউপি সচিব এনামুল হক মন্ডল বলেন, চেয়ারম্যান অনুপস্থিত থাকায় জন্ম নিবন্ধন করতে সমস্যা হচ্ছে। তার পরিবর্তে এখন পর্যন্ত অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি। দুই একদিনের মধ্যে যদি চেয়ারম্যান আল-ইবাদত হোসেন পাইলট ইউনিয়ন পরিষদে উপস্থিত হতে না পারেন তাহলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সিন্ধান্ত নেওয়া হবে।
চেয়ারম্যান আল-ইবাদত হোসেন পাইলটের মুঠোফোনে কল করলে ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
ধর্ষণ মামলার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান আল-ইবাদত হোসেন পাইলট ইউনিয়ন পরিষদে আসতে না পারায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুবেল রানার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার পরিবর্তে নিয়ম অনুযায়ী অন্য কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে।
Comments