September 08, 2024
খেলা

রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে তরী ডুবাল কিউইরা

অস্ট্রেলিয়ার রানের পাহাড় পাড়ি দিতে বিশ্বকাপের ইতিহাসের রেকর্ড গড়তে হত নিউজিল্যান্ডের। রাচিন রবীন্দ্রর সেঞ্চুরি এবং ড্যারিল মিচেল-জিমি নিশামের ফিফটিতে জয়ের পথে বেশ ভালভাবেই এগোচ্ছিল তারা। কিন্তু রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ দিকে এসে তরী ডুবাল কিউইরা। এতে ৭৭১ রানের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে কাঁদিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে জিতল অজিরা। এই জয়ে প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর টানা চার ম্যাচে জিতল প্যাট কামিন্সের দল।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার ট্রাভিস হেডের হেডের বিস্ফোরক সেঞ্চুরিতে ৩৮৮ রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া। বিশাল টার্গেটে ব্যাট করতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩৮৩ রানে থেমে যায় কিউইদের ইনিংস। এতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে প্যাট কামিন্সের দল ৫ রানে জিতেছে।

শেষ ওভারে নিউজিল্যান্ডের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৯ রান। মিচেল স্টার্কের প্রথম বলে সিঙ্গেল রানের পর, দ্বিতীয় ডেলিভারিতে ওয়াইড ও চার মিলিয়ে জয়ের স্বপ্ন চাঙা হয় কিউইদের। পরপর দুই বলে নিশামের দুটি শটই ছিল চারের বাউন্ডারি পাওয়ার মতো। অজি ফিল্ডাররা দু’দফায় সেখানে দুটি করে রান ঠেকিয়েছেন। শেষ তিন বলে ৩ রান নিতেই এক উইকেট হারানোয় আর বিশ্বরেকর্ড গড়া হয়নি টম ল্যাথামের দলের।
এদিন টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে অজিরা। দুই অজি ওপেনার ট্রাভিস হেড এবং ডেভিড ওয়ার্নারের রীতিমতো ঝড়ে ৮ দশমিক ৫ ওভারেই দলীয় ১০০ পেরিয়ে যায় অজিরা। আর পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে কোনো উইকেট না খুইয়ে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১১৮ রান।
ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরেই বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচেই যৌথভাবে দ্রুততম ফিফটি হাঁকান ট্রাভিস হেড। মাত্র ২৫ বলে ৫০ রান তুলে নেন তিনি। এর আগে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৫ বলে ফিফটি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার কুশল মেন্ডিস।
অন্যপ্রান্তে ২৮ বলে হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ওয়ার্নার। তবে ব্যক্তিগত ৫০ এর পর দ্রুতই সেঞ্চুরির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন অজি এ ওপেনার। তবে তা আর হয়নি। ব্যক্তিগত ৮১ রানেই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন তিনি। কিউইদের পার্টটাইম স্পিনার ফিলিপসের বলে ফেরার আগে খেলেন ৬ ছক্কা ও ৫ চারের মার।
অন্যদিকে ওয়ার্নার ফেরার পর দ্রুতই নিজের সেঞ্চুরি তুলে নেন হেড। তবে সেঞ্চুরির পরপরই সাজঘরে ফেরেন তিনিও। তাকে ফিরিয়ে চলতি ম্যাচে নিজের ঝুলিতে আরও এক উইকেট নেন উইকেটকিপার ব্যাটার ফিলিপস। দলীয় ২০০ রানের মাথায় ফেরার আগে ৭ ছক্কা ও ১০ রানে ১০৯ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন হেড।
দুই ওপেনার ফেরার পর বেশ খানিকটা মন্থর হয়ে পড়ে অজিদের তাণ্ডব। বাকিরা ইনিংস লম্বা না করতে পারলেও খেলেন কার্যকরী সব ইনিংস। ৫১ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলেন মিচেল মার্শ। এ ছাড়া স্টিভেন স্মিথের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।
তবে শেষ দিকে ঝড় তুলেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবং জশ ইংলিশ। তাদের ঝোড়ো ইনিংসে আরও স্বপ্ন বুনতে থাকে অজিরা। ২৪ বলে ৪১ রানের বিধ্বংসী খেলে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। শেষ দিকে ইংলিশের সঙ্গে তাণ্ডবে সঙ্গ দেন প্যাট কামিন্সও। এ দুই ব্যাটার মিলে অজিদের সংগ্রহ ৪০০ এর কাছাকাছি নিয়ে যান। শেষ পর্যন্ত ৪৯ দশমিক ২ ওভারে ৩৮৮ রান গুঁটিয়ে যায় অজিরা।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ৩১ বলেই পঞ্চাশ তুলে ফেলেন দুই কিউই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়ং। তবে জশ হ্যাজলউড পরপর দুই ওভারে দুজনকে বিদায় করে দিলে নিউজিল্যান্ডের রানের গতি কিছুটা কমে আসে। এরপর নিউজিল্যান্ডকে মূলত জয়ের পথে ধরে রাখেন রাচিন রবীন্দ্র। তিনে নামা এই বাঁ-হাতি ব্যাটার প্রথমে ড্যারিল মিচেল, এরপর অধিনায়ক টম ল্যাথামকে নিয়ে দুটি পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি গড়েন।
সতীর্থদের আসা–যাওয়া দেখলেও একপ্রান্তে রবীন্দ্র টিকেছিলেন ৪১তম ওভার পর্যন্ত। উদ্বোধনী ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলা এই বাঁ-হাতি এই দফায় থামেন ১১৬ রানে। প্যাট কামিন্সকে তুলে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে মারনাস লাবুশেনের ক্যাচ হয়েছেন তিনি। তার আগে ৮৯ বলের ইনিংসটিতে মারেন ৯টি চার ও ৫টি ছয়। বিদায়ের আগে রবীন্দ্র কিউইদের হয়ে বিশ্বকাপে দ্রুততম (৭৭ বল) সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন।
রবীন্দ্র আউট হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডকে শেষের রোমাঞ্চে নিয়ে যান নিশাম। রান আউট হওয়ার আগে ৩টি করে চার ও ছয়ে ৩৯ বলে ৫৮ রান করে যান এই বাঁ-হাতি ব্যাটার। এছাড়া ৫১ বলে ৫৪ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। অজিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নিয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা, এছাড়া দুটি করে শিকার করে হ্যাজলউড ও কামিন্স।


Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments