খেলা

আবারও সেমির দেয়ালে আটকা প্রোটিয়ারা, ফাইনালে অজিরা

অল্প পুঁজি দাঁড় করিয়ে ফাইনালে উঠার লড়াই থেকে আগেই ছিটকে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে খেলা বেশ জমিয়ে তুলেছিল প্রোটিয়ারা। কিন্তু তাদের হতাশ করে ১৬ বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটের জয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অজিরা।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) কলকাতার ইডেন গার্ডেনসে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৪৯ ওভার ৪ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২১২ রান তুলে প্রোটিয়ারা। জবাবে লক্ষ্য তাড়া করতে ৪৭ দশমিক ২ ওভারে ৩ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় অজিরা।
২১৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত করেন দুই অজি ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। মাত্র ৬ ওভারেই ৬০ রান তুলে ফেলেন তারা।
এরপরই ঘটে ছন্দপতন। ব্যক্তিগত ২৯ রানে ফেরেন ওয়ার্নার। ফিফটির দলীয় ১০৬ রানে ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৬২ রানে ফেরেন ট্রাভিস হেড।
এরপর দলীয় ১৩৩ রানের মাথায় ১৮ রানে ফেরেন লাবুশানে। ৪ রান ব্যবধানে ফেরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। এতে কিছুটা বিপাকে পড়ে যায় অজিরা।
এরপর ষষ্ঠ উইকেটে জশ ইংলিসকে নিয়ে দলকে টানেন স্মিথ। দলীয় সংগ্রহে ৩৭ রান যোগ করে এই জুটি। এরপরদলীয় ১৭৪ রানে ষষ্ঠ উইকেট হারায় অজিরা।
শেষ দিকে প্রোটিয়াদের থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে নেন মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। তাদের ২২ রানের জুটি ১৬ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে অজিরা।
এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বড়সড় ধাক্কা খায় প্রোটিয়ারা। প্রথম ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন ওপেনার এবং অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ইনিংসের প্রথম ওভারেই ৪ বলে ০ রানে আউট দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। স্টার্কের করা ওভারের ষষ্ঠ বলটি অফ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে অ্যাঙ্গেল করে বেরিয়ে যাচ্ছিল। সে বলে খোঁচা দিয়েছেন ফর্মহীনতায় ভোগা বাভুমা। এতে প্রথম ওভারেই উইকেটের দেখা পায় অস্ট্রেলিয়া।
ফর্মে থাকা আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি ককও ফেরেন অল্প রানে। টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ফেরেন ১৪ বলে ৩ রান করেই।
শুরুতেই দুই ওপেনারের বিদায়ের পর রাসি ফন ডার ডুসেন ও এইডেন মার্করাম চেষ্টা করেন দলকে টেনে তোলার। তবে অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের বোলিং তোপের মুখে ব্যর্থ হয়েছেন তারাও। ডুসেন ৩১ বলে করেন মাত্র ৬ রান। আর মার্করাম ২০ বলে করেন ১০ রান। প্রথম ৪ উইকেট সমানভাবে ভাগাভাগি করেন স্টার্ক ও হ্যাজলউড।
১৪ ওভারের খেলা শেষে ম্যাচে হানা দেয় বৃষ্টি। এতে বন্ধ থাকে খেলা। বৃষ্টি বাগড়া শেষে দলের হাল ধরেন হেনরিখ ক্লাসেন এবং ডেভিড মিলার। ঠাণ্ডা মাথায় পরিস্থিতি সামাল দেন দুজনে। এরপর থিতু হন ক্রিজে। তাদের সাবলীল ব্যাটিংয়ে বিপর্যয় কাটায় দক্ষিণ আফ্রিকা
পঞ্চম উইকেটে দুজন মিলে যোগ করেন ৯৫ রান। তবে প্রথমবারের মতো আক্রমণে এসে ব্রেকথ্রু এনে দেন পার্ট-টাইম বোলার ট্রাভিস হেড। ওভার দ্য উইকেটে হেডের ফুললেংথের বলটি রক্ষণাত্মক ধাঁচে খেলতে চেয়েছিলেন ক্লাসেন। এতে ফাঁদে পড়েন এই মিডল-অর্ডার ব্যাটার। বড় শট খেলার পরিকল্পনা সটকে দিয়ে বিপদ ডেকে এনে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
ঠিক পরের বলেই আবারও উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। এলবিডব্লু মার্কো ইয়ানসেন! পেছনের পায়ে খেলতে গিয়ে উল্টো মিস করেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। শেষ পর্যন্ত রিভিউ নিলেও তাতে খুব একটা লাভ হয়নি।
শুরুর ধাক্কার পর মাঝের বিপর্যয় সামলে দলের পুঁজি বাড়ানোর চেষ্টা করে মিলার-কোয়েৎজির জুটি। মিলারকে বেশ ভালোই সঙ্গ দেন কোয়েৎজি। কিন্তু কামিন্সের বাউন্সার আলতো করে হুক করতে গিয়ে কাটা পড়েন তিনি। কট বিহাইন্ডের ফাঁদে পড়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন ব্যক্তিগত ১৯ রানে। এতে ভাঙে মিলারের সঙ্গে তার ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি।
এরপর প্যাট কামিন্সের বলে দুর্দান্ত এক ছক্কায় সেঞ্চুরি তুলে নেন ডেভিড মিলার। এবার মনে হচ্ছিল, রানের গতি বাড়বে প্রোটিয়াদের। তবে তা হয়নি, আবারও উইকেট হারায় দলটি। সেঞ্চুরির পরপরই ড্রেসিংরুমে ফেরেন মিলার। ২৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর একাই লড়াই করেছিলেন এই ব্যাটার। খাদের কিনারা থেকে দলকে এনে তুলেনও। তবে ডিপ স্কয়ার লেগে ট্রাভিস হেডের তালুবন্দি হওয়ার আগে ১১৬ বলে খেলেন ১০১ রানের ইনিংস।
শেষ পর্যন্ত ২১২ রানের পুঁজি পেয়েছে প্রোটিয়ারা। ফাইনালে উঠতে অজিদের দরকার ২১৩ রান।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments