খেলা

ভারতকে কাঁদিয়ে ‘বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন’ অস্ট্রেলিয়া

রোহিত শর্মার ব্যাটে শুরুটা একদম ঝড়ের বেগেই করেছিল ভারত। তবে শ্রেয়াস আইয়ার-সূর্যকুমাররা ব্যর্থ হওয়ায় বড় সংগ্রহ গড়তে পারেনি স্বাগতিকরা। বিরাট কোহলি ও লোকেশ রাহুলের ফিফটিতে ভর করে কোনোরকমে ২৪০ রানের দুর্বল পুঁজি সংগ্রহ করে ভারত। মাঝারি টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও লাবুশানের ফিফটিতে ৪২ বল হাতে রেখে একদম হেসেখেলে ৬ উইকেটের বড় জয় তুলে নেয় অজিরা।
আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে উপস্থিত লক্ষাধিক ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীদের ‘স্তব্ধ’ করে দিয়ে, ষষ্ঠবারের মতো বিশ্বকাপ জিতে শিরোপার ‘হেক্সা মিশন’ পূর্ণ করলো অস্ট্রেলিয়া।
একা হাতেই যেন দলকে টানলেন ট্রাভিস হেড। ফাইনালের বড় মঞ্চে এসে নিজেকে আরো একবার প্রমাণ করলেন। দলকে শিরোপা উপহার দেয়ার পাশাপাশি তুলে নেন ব্যক্তিগত সেঞ্চুরিও। মাত্র ৯৫ বলে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন তিনি।
দলীয় ৫০ রানের আগেই ওয়ার্নার, মিচেল মার্শ ও স্মিথের উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল অজিরা। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেছেন ট্রাভিস হেড, তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন লাবুশানে। চতুর্থ উইকেটে এই দুইজনের অবিচ্ছিন্ন একশোর্ধ্ব জুটিতে জয়ের পথ থেকে একবারের জন্যও বিচ্যুত হয়নি অজিরা।
এর আগে, টস হেরে শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে অস্ট্রেলিয়াকে সব উইকেট হারিয়ে ২৪১ রানের লক্ষ্য দেয় রোহিত-কোহলিরা। ইনিংসের পঞ্চম ওভারে এসে প্রথম উইকেটটা পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। উইকেটে খুব একটা ক্যারি না থাকায় এর আগে অল্পের জন্য স্লিপে ক্যাচ হওয়া থেকে বাঁচেন শুভমন গিল। কিন্তু স্টার্কের শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ব্যাটের ঠিক জায়গায় লাগাতে পারেননি। ৭ বলে ৪ রান করে মিড অনে দাঁড়ানো অ্যাডাম জ্যাম্পার ক্যাচ হয়ে ফিরে যান সাজঘরে।  
তার বিদায়ের পরও রোহিত শর্মা রানের গতি রেখেছিলেন ঠিকঠাক। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ভারত তোলে ৮০ রান। কিন্তু এর মধ্যে তাদের হারাতে হয় রোহিত শর্মার উইকেটও। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৩১ বলে ৪৭ রান করে পার্ট-টাইম স্পিনার ম্যাক্সওয়েলের বল তুলে মারেন তিনি। বল উঠে যায় বেশি উপরে, কাভার থেকে দৌড়ে গিয়ে ঝাঁপিয়ে দারুণ এক ক্যাচ ধরেন ট্রাভিস হেড।  
শ্রেয়াস আয়ারও দ্রুত ফিরলে বিপদেই পড়ে যায় ভারত। ৩ বলে ৪ রান করে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি, তার উইকেট নেন অজি অধিনায়ক কামিন্স। শ্রেয়াসের বিদায়ের পর রাহুলকে নিয়ে ধীরে ধীরে দলকে টেনে তোলেন বিরাট কোহলি। এর মধ্যে তিনি তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি।  
এই বিশ্বকাপে কোনো ব্যাটার ছয়শও রান করতে পারেনি, তিনি ছুটছিলেন আটশ রানের দিকে। কিন্তু এবারও অস্ট্রেলিয়ার ত্রাতা হন অধিনায়ক কামিন্স। আগের দিন তিনি বলেছিলেন, আহমেদাবাদের লাখের বেশি সমর্থককে চুপ করিয়ে দিতে চান। সেটি কোহলিকে ফিরিয়ে করে দেখান কামিন্স।  
তার শর্ট বল কাট করতে গিয়ে কোহলির ব্যাটে লেগে স্টাম্পে যায়। অবিশ্বাসের চোখ নিয়ে ক্রিজে কিছুক্ষণ ঠাঁয় দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। এই বিশ্বকাপের ১১ ম্যাচে ৯৫.৬২ গড় ও ৯০.৩১ স্ট্রাইক রেটে ৭৬৫ রান করেছেন। রোহিত শর্মা ৫৯৫ রান করে আছেন দুইয়ে।  
কোহলির সঙ্গে ৬৭ রানের জুটি ভাঙার পরও রাহুল ‘এংকরিংটা’ ঠিকঠাকই করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু স্টার্কের দুর্দান্ত এক বলে আর টিকতে পারেননি তিনি। ১০৭ বল খেলে স্রেফ একটি বাউন্ডারি হাঁকানো রাহুল করেন ৬৬ রান। তার বিদায়ের পর সব আশাই ছিল সূর্যকুমার যাদবকে ঘিরে।  
কিন্তু তাকে স্লো বল করে বিপাকে ফেলে দেয় অস্ট্রেলিয়া। আলো না ছড়িয়েই সাজঘরে ফেরত যান সূর্য। ২৮ বলে ১৮ রান করে হ্যাজেলউডের শিকার হন তিনি। এরপর শেষ উইকেট জুটিতে যোগ হয় আরও ১৪ রান। ১৮ বলে ১০ রান করে ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হন কুলদিপ যাদব। ৯ রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ সিরাজ।
 বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার স্টার্ক ৩টি এবং হ্যাজেলউড ও কামিন্স ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন। এছাড়া ম্যাক্সওয়েল ও জাম্পার ঝুলিতে গেছে ১টি করে উইকেট।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments