খেলা
শেষ বিকেলের স্বস্তিতে লিডের স্বপ্ন বাংলাদেশের
বুধবার (২৯ নভেম্বর) ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে ম্যাচের বেশিরভাগ সময়ই দাপট দেখিয়েছে নিউজিল্যান্ড। লাঞ্চ বিরতির পর ২ উইকেটে ৭৮ রানে দ্বিতীয় সেশন শুরু করে ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। এ সময়ে সাবলীল উইলিয়ামসনের সঙ্গে প্রতিরোধ গড়ার মনোবলে হেনরি নিকোলসের দেখা মিলে।
তবে খুব বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হননি নিকোলস। দলীয় ৯৮ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন নিকোলস। ৪২ বলে ব্যক্তিগত ১৯ রানে তাকে ফেরান শরিফুল ইসলাম।
এরপর উইলিয়ামসনের সঙ্গে জুটি বাঁধেন ড্যারিল মিচেল। তাদের অনবদ্য জুটিতে এগোতে থাকে কিউইদের ইনিংস। তাদের ফেরানোর বেশ কয়েকটি চেষ্টায় ব্যর্থ হয়েছেন টাইগার বোলাররা।
উইকেটে থিতু হয়ে দ্রুতই ফিফটি হাঁকান উইলিয়ামসন। অন্যপ্রান্তে মিচেলও ব্যক্তিগত ৫০ এর কাছাকাছি ছিলেন। তবে ভাগ্য সহায় না হওয়ায় দলীয় ১৬৪ রানের মাথায় প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। তাইজুলের বলে ফেরার আগে খেলেন ৪১ রানের দারুণ এক ইনিংস।
এরপর তাইজুলের ভুলেই খেসারত দিচ্ছে লাল-সবুজ শিবির। চা বিরতিতে যাওয়ার আগেই বাংলাদেশের সামনে উইলিয়ামসনের উইকেট তুলে নেওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। তবে তা পারেননি তাইজুল।
চা বিরতির পর ৪ উইকেটে ১৬৮ রান নিয়ে দিনের খেলা শুরু করে কিউইরা। এ সময়ে ক্রিজে নামা টম ব্লান্ডেলকেও বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হতে দেননি নাইম। কট-বিহাইন্ড হওয়ার আগে ৬ রানে ফেরেন উইকেটকিপার এই ব্যাটার।
ষষ্ঠ উইকেটে ফিলিপসকে নিয়ে পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের জুটি গড়েন উইলিয়ামসন। এ নিয়ে এক ইনিংসে তৃতীয় পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটির অংশ হন উইলিয়ামসন। ক্রমেই নিজের ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রকাশ ঘটিয়েছেন উইলিয়ামসন। সাবলীল ব্যাটিংয়ে দারুণভাবে টেনেছেন দলের ইনিংস। তার ব্যাটে চড়ে লিড নেওয়ার স্বপ্ন দেখতে থাকে সফরকারীরা।
এরপর দলীয় ১৭৫ রানের মাথায় ৫ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। সেখানে থেকেই প্রতিরোধ গড়ে ঘুরে দাঁড়াতে অবদান রাখেন কেন উইলিয়ামসন-গ্লেন ফিলিপস জুটি। এই জুটিতেই বড় সংগ্রহের স্বপ্ন বুনে কিউইরা। তবে দলীয় ২৫১ রানের মাথায় তাদের ৭৮ রানের জুটি ভাঙেন খণ্ডকালীন স্পিনার মুমিনুল হক। তার দারুণ এক ডেলিভারিতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ৪২ রানের ইনিংস খেলেন ফিলিপস। ফিলিপস ফিরলেও অন্যপ্রান্ত আগলে রেখে ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন কেন উইলিয়ামসন। এটি তার ক্যারিয়ারের ২৯তম সেঞ্চুরি। এ নিয়ে টানা চার ম্যাচে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার ছুঁলেন সাবেক এই কিউই অধিনায়ক।
এর আগে, টাইগার ফিল্ডারের ব্যর্থতায় অন্তত দুইবার নিশ্চিত জীবন পেয়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন। আর সুযোগ পেয়ে তা খুব ভালোভাবেই কাজে লাগান এই ব্যাটার। তবে সেঞ্চুরির পর খুব বেশি সময় ক্রিজে থাকতে পারেননি তিনি। শেষ বিকেলে তাইজুলের ঘূর্ণিতে বোল্ড হয়ে তারও বিদায় ঘণ্টা বেজেছে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ১১ চারের মারে খেলেছেন ১০৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।
শেষ বিকেলে আরও এক উইকেট নিজের ঝুলিতে পুরেন তাইজুল। উইকেটের ফায়দা তুলে ইশ সোধিকে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় করেন তিনি।
৮ উইকেটে ২৬৬ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে কিউইরা। এখনও ৪৪ রানে এগিয়ে আছে শান্ত-জয়রা। তাই বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ড দুই দলের সামনেই লিড নেওয়ার সুযোগ আছে।
টাইগারদের হয়ে তাইজুলের শিকার চার উইকেট। এ ছাড়া একটি করে উইকেট তুলেছেন মুমিনুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাঈম হাসান এবং শরিফুল ইসলাম।
দ্বিতীয় দিন শেষে প্রথম টেস্টের সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস ৮৫.১ ওভারে ৩১০ (জয় ৮৬, শান্ত ৩৭, মুমিনুল ৩৭, সোহান ২৯)
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংসে ৮৪ ওভারে ২৬৬/৮ (টিম সাউদি ১*, কাইল জেমিসন ৭*; ল্যাথাম ২১, কনওয়ে ১২, হেনরি নিকোলস ১৯, ড্যারিল মিচেল ৪১, টম ব্লান্ডেল ৬, গ্লেন ফিলিপস ৪২, কেন উইলিয়ামসন ১০৪, ইশ সোধি ০)
Comments