পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধিঃ রংপুরের পীরগঞ্জে নিখোঁজের ৩ দিন পর ৬ষ্ঠ শ্রেণী পড়ুয়া এক স্কুল ছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পীরগঞ্জ থানা পুলিশ। হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নিহতের সহপাঠী উমর ফারুক ছামিউল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার চৈত্রকোল ইউনিয়নের পালগড় গ্রাম সংলগ্ন অগভীর নলকুপের ঘর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, পালগড় গ্রামের নুর আলম মিয়ার পুত্র ও শাল্টি সমস দিঘী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণী পড়–য়া ছাত্র তৌহিদুল ইসলাম ওরফে নাইফুলকে প্রতিবেশী আব্দুস সালাম এর পুত্র সামিউল ইসলাম (১৪) গত ২৩ এপ্রিল শনিবার বিকালে বাড়ী থেকে নিয়ে যায়। ওইদিন থেকেই নাইফুল নিখোঁজ। নাইফুল ও সামিউলের মধ্যে সামান্য বয়সের ব্যবধান থাকলেও একই গ্রামের হওয়ায় তাদের বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। তাছাড়া করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় দু’বন্ধু মিলে স্থানীয় ইটভাটায় শ্রমিকের কাজও করতো। স্কুল ছাত্রের পরিবার নাইফুলের সন্ধান চেয়ে সামিউলকে বারবার জিজ্ঞেস করলে সে জানায়, আমরা দু’জন একসঙ্গে স্থানীয় কলোনী বাজারে যাই। বাজার থেকে নাইফুল কোথায় গেছে তা সে জানেনা। সামিউলের কথাবার্তা ও আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে নাইফুলের পরিবার পুলিশে সংবাদ দেয়। প্রাথমিক পর্যায়ে পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে নাইফুল হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেয়। সামিউলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ পালগড় গ্রাম সংলগ্ন তাদের নিজের অগভীর নলকুপ ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখা নাইফুলের মরদেহ উদ্ধার করে। জানা গেছে, সামিউল অল্প বয়সে ড্যান্ডি নামক নেশায় আসক্ত ছিল। নাইফুল নিখোঁজ হওয়ার দিনগত রাতে সামিউল তাদের অগভীর নলকূপ ঘরে নাইফুলকে ডেকে নিয়ে যায় এবং গভীর রাত পর্যন্ত ড্যান্ডি নেশা করে। এক পর্যায়ে নাইফুল অচেতন হয়ে পড়লে সামিউল তাকে রেখেই বাড়ি চলে আসে। পরদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত নাইফুলকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাকে জাগানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সে নাইফুলকে শ্বাসরোধে মৃত্যু নিশ্চিত করে নলকূপ ঘরের মেঝে খুঁড়ে মাটির নিচে পুঁতে রাখে। এ ব্যাপারে (পীরগঞ্জ-মিঠাপুকুর) দায়িত্বপ্রাপ্ত সার্কেল এসপি কামরুজ্জামান জানান, মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রকৃত হত্যাকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পিতা নুর আলম মিয়া বাদী হয়ে পীরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেছেন মামলা নং- ৪৩।