কৃষি

পীরগঞ্জে জনপ্রিয় হচ্ছে ধানের চারা রোপন যন্ত্র রাইস ট্রান্স প্লান্টার

পীরগঞ্জ (রংপুর)প্রতিনিধি: যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল হচ্ছে জীবন যাত্রার মান। কৃষিতেও পিছিয়ে নাই যন্ত্রের ব্যবহার যুগের সাথে তাল মিলিয়ে মাধ্যতা আমলের লাঙ্গল, জোয়াল গরু এখন দেখাই যায়না তেমন।চারা রোপনেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। স্বল্প সময়ে, স্বল্প ব্যয়ে ও স্বল্প লেবারে জমিতে ধানের চারা রোপন যন্ত্র ‘‘রাইস ট্রান্স প্লান্টার’এখন দিন দিন হচ্ছে জন প্রিয়। এ কারণেই ধানের চারা রোপনে রংপুরের পীরগঞ্জে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে আধুনিক এ যন্ত্র।আর এই যন্ত্র দিয়েই উপজেলার শতাধিক কৃষক ২/৩ বছর ধরে ধানের চারা রোপন করছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে,উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের ধল্যাকান্দি গ্রামে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিম ও সাদেকুল ইসলাম ‘‘রাইস ট্রান্স প্লান্টার’ দিয়ে ধানের চারা রোপন তদারকি করছেন। একই গ্রামের কৃষক মো. ইসমাঈল হোসেন (৫৫) জানান- ‘একর প্রতি জমিতে বীজতলা থেকে ধানের চারা উঠানো ও জমিতে রোপণ করা পর্যন্ত কমপক্ষে ১২ জন কৃষিশ্রমিকের প্রয়োজন লাগে। তাঁদের পারিশ্রমিক দিতে হয় ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা। রাইস ট্রান্সপ্লান্টের মাধ্যমে একর প্রতি জমিতে ধানের চারা রোপন করতে পেট্রোল লাগে ২ লিটার। যার বর্তমান বাজার মূল্য মাত্র আড়াইশ টাকা। আর সময় লাগে সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই ঘন্টা। আর সেই কারণে এ যন্ত্র দিয়ে ধানের চারা রোপন করছি। তিনি আরও বলেন, শুরুতে এ মেশিন নিয়ে ভুল ধারণা ছিলো আমার। ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা রেজাউল করিমের পরামর্শে একবার আবাদ করার পর সেটি কেটে গেছে। এখন আমি নিজেই ১টি মেশিন কৃষি অফিস থেকে ৫০% ভূর্তকিতে নিয়েছি।নিজেরাই ট্রেতে বীজ বপন এবং জমিতে মেশিনের সাহার্যে চারা রোপন করছি। অর্থ এবং সময় দুটোই কম লাগছে। আমার দেখা দেখি এই ইউনিয়নে আরও দু’জন এই মেশিন নিয়েছে।একই ইউনিয়নের কৃষাণী মরিয়ম বেগম সাথী (২৮) বলেন, গত বছর আমি ২৫ শতক জমিতে এই যন্ত্রের মাধ্যমে ধান রোপন করেছিলাম। ধানের ফলনও হয়েছিল খুব ভালো এ কারনে এ বছর ৪০ শতক জমিতে মেশিনের মাধ্যমে ধান রোপন করেছি। এদিকে কৃষক মুক্তার হোসেন জানান, ধানের বীজ চারা হয় ট্রেতে। ধানের বীজ ফেলতে হবে ট্রেতে রাখা ওই মাটির উপর। এরপর ওই ধানের বীজের উপর আবারও এক ইঞ্চি পরিমাণ ঝড়-ঝড়ে মাটি দিয়ে ধানের বীজ গুলো ঢেকে রাখতে হয়। তারপর সেখানে হালকা পানি সেচ দিতে হয়। ২০ থেকে ২৫দিনের মধ্যে চারা রোপনে উপযোগী হয়ে উঠে। এরপর জমিতে মেশিন দিয়ে চারা লাগাতে হয়। ইউনিয়ন উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম জানান-রাইস ট্রান্স প্লান্টার পদ্ধতির মাধ্যমে চাষাবাদে অনেক সুবিধা আছে। সুবিধাগুলোর অন্যতম কয়েকটি হচ্ছে, এ পদ্ধতিতে ট্রেতে উৎপাদন করায় ধানের চারার শিকড় ছেড়েনা। সে কারণে অল্প সময়ে মাটির সঙ্গে লেগে যায়। ট্রেতে করে উৎপাদন করতে জায়গা লাগে অনেক কম। তুলনামূলক ফলনও বেশি এ পদ্ধতির চাষাবাদে। সনাতন পদ্ধতির চেয়ে ১০ থেকে ১৫ দিন আগেই কাটার উপযোগী হয় ধান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, ‘সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষিযান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় সমলয়ে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে ধানের চারা রোপন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।শুধুমাত্র শানেরহাট ইউনিয়নেই ৩জন কৃষককে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্র দেয়া হয়েছে। যন্ত্র গুলো শতকরা ৫০ ভাগ ভূর্তকি মূল্যে প্রদান করা হয়েছে। অল্প সময় আর স্বল্প খরচে ধানের চারা রোপন করা যায়। আর কারণেই পীরগঞ্জ উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ধান চাষাবাদে এ মেশিনটি। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ধান আবাদ করায় এক দিকে যেমন খরচ হবে কম। ফলে ধান উৎপাদনে কৃষককে আর লোকসান গুনতে হবেনা।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments