September 08, 2024
সারাদেশ

গাবতলীতে ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন

আল আমিন মন্ডল (বিপ্লব) (বগুড়া) থেকেঃ ঢাকঢোল পিটিয়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে পূর্ব বগুড়ার তথা গাবতলী ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ সন্ন্যাসী ও জামাই মেলা গতকাল বুধবার (১৪ই ফেব্রুয়ারী-২৪) শান্তিপূর্ন ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার হবে বউ মেলা।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ মেলায় এসে ক্রয়-বিক্রয় করেছে। উপভোগ করেছে নানা ধরনের বিনোদন ও খেলা। মেলায় বিক্রি হয়েছে কয়েক হাজার মন মাছ ও মিষ্টি। মাছের দাম কিছুটা চড়া হলেও বিক্রি হয়েছে বড় বড় চিতল, ভেউস, বোয়াল, রুই ও কাতলা’সহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশী-বিদেশী মাছ। হিন্দু-মুসলমান-পুরুষ-নারী বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের ঢল নেমে ছিল ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায়। তবে মেলায় বাঘাইড় মাছ না পাওয়া গেলেও দেশী-বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির বড় বড় অসংখ্য মাছ ছিল। এরমধ্যে মেলায় ভেউস মাছ কেজি প্রতি বিক্রি করা হয় ১হাজার ৫শ থেকে ২হাজার টাকা, পাখিমাছ প্রতি কেজী বিক্রি হয়েছে ১৫শত থেকে ২হাজার টাকা, বোয়াল মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হয়েছে ৭শ থেকে ১হাজার ৫শ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি বিক্রি করা হয় ৮শ থেকে ১হাজার টাকা, কাতলা মাছ কেজি প্রতি বিক্রি করা হয় ৮শ থেকে ৯শ টাকা, ব্লাক-কাপ প্রতিকেজী ৭শ থেকে ৯শত টাকা, আরকাটা প্রতিকেজী ২২শত থেকে ২৫শত টাকা, ব্রি-কেট প্রতিকেজী ৬শত থেকে ৮শত টাকা, গ্লাস-কাপ প্রতিকেজী ৫শত থেকে ৮শত টাকা। এছাড়া বিভিন্ন রকমের মাছ নানা মূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। শেষ পর্য়ন্ত ১ থেকে ২কোটি টাকার মাছ বিক্রি আশা করছেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয় সন্ন্যাসী পূজা উপলক্ষে ৪শত বছর পুরানো এ মেলায় ছিল প্রশাসনের কঠোর নজরদারী। মেলায় প্রসিদ্ধ হলো বড় বড় মাছ, হরেক রকম মিষ্টি, কাঠ বা ষ্ট্রীল র্ফানিচার, বড়ই (কুল) ও কৃষি সামগ্রী বিভিন্ন আসবাবপত্র এবং খাদ্য দ্রব্য হাট-বাজার ন্যায় কেনা-বেচা করা হয়। এছাড়া বিনোদন মূলক ছিল সার্কাস, মোটর সাইকেল খেলা, নৌকা খেলা ও নাগোরদোলা এবং শিশুদের জন্য দোলনা। উল্লেখ্য, গাবতলী উপজেলার মহিষাবান ইউনিয়নের অর্ন্তগত গোলাবাড়ী বন্দর সংলগ্ন প্রায় ৪শত বছরপূর্বে থেকে স্থানীয় সন্ন্যাসী পূর্জা উপলক্ষে গাড়ীদহ নদী ঘেঁষে সম্পূর্ন ব্যক্তি মালিকানা জমিতে একদিন জন্য মেলাটি বসে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ মেলায় এসে ক্রয়-বিক্রয় করে। মেলা উপলক্ষে আশপাশের গ্রামের প্রতিটি বাড়ীতে আতœীয়-স্বজন এসে সমবেত হয়। ঈদ বা কোন উৎসবে জামাই-মেয়ে অন্যান্য আতœীয়-স্বজন’কে দাওয়াত না দিলেও তেমন কোন সমস্যা নেই। তবে মেলা উপলক্ষে দাওয়াত দিতেই হবে যা রেওয়াজে পরিনীত হয়েছে। মেলাটি একদিন জন্য হলেও ওই এলাকায় মেলা আমেজ থাকে ১সপ্তাহ ব্যাপী। মেলাটি জন্মের পর থেকে মহিষাবান গ্রামের মন্ডল পরিবার মেলা পরিচালনা করে আসছেন। স্থানীয় মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মেলা লাইসেন্স দেয়া হয়। এবারও মেলাটি পরিচালনায় এবং নেতৃত্বে ছিলেন মন্ডল পরিবার সদস্য ও স্থানীয় মহিষাবান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ মন্ডল। বাংলা প্রতি বছরে মাঘ মাস শেষ অথবা ফাল্গুন মাস প্রথম বুধবার মেলাটি উদযাপিত হয়। কিছু সমস্যা কারনে গত ২/৩বছর হলে একটু দুরে মেলা হলেও এবারে মূল জায়গায় মেলাটি বসানো হয়েছিল। মেলার পরিচালক ও মহিষাবান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ মন্ডল জানান, প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সার্বিক সহযোগিতায় শান্তিপূর্ন ভাবে মেলা সম্পন্ন হয়েছে। গাবতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত জাহান বন্যা জানান, সকলের সার্বিক সহযোগিতায় মেলাটি অত্যান্ত শান্তিপূর্ন ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। গাবতলী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রতিবছরে ন্যায় এবারও পোড়াদহ মেলায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা কঠোর নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল। অপরদিকে, পোড়াদহ মেলা শেষে আজ বৃহস্পতিবার মহিষাবানে বউ মেলা অনুষ্ঠিত হবে। শুধু তরুণী-মেয়ে-স্ত্রীদের জন্যই হবে এই ‘বউ মেলা’। এই মেলায় পুরুষদের প্রবেশ নিষেধ থাকায় তরুণী-গৃহবঁধু সব বয়সের মেয়েরা স্বাদছন্দে মতে কেনাকাটা করবে। প্রায় ২৫বছর পূর্বে থেকে ‘বউ মেলা’ হয়ে আসছে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments