September 19, 2024
অপরাধ

লাখ ডলারের ফাঁদ পেতে কোটি টাকা আত্নসাৎ

                     নিয়ন্ত্রন ঢাকায়, দেশজুড়ে সক্রিয় শতাধিক প্রতারক চক্র

লিখন রাজঃ রাজধানীর উত্তরার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সুমন আল রেজা। ফেসবুকের প্রতারক চক্রের সঙ্গে পরিচয় হওয়ার পর তিনি তাকে বলেন, আমেরিকার ফ্লোরিডা সিটি ব্যাংকে এক ক্লায়েন্টের ৬০ লাখ টাকা ডিপোজিট রয়েছে। ওই ক্লায়েন্ট হাইতিতে মৃত্যুবরণ করেছেন। তার কোন ওয়ারিশ নেই। কিছু পেপারস সাবমিট করলে ওই টাকার মালিকানা দিতে পারবেন তিনি।
লোভনীয় এই কথাতেই সুমন সব পেপারস দিয়ে দেন। এরপর প্রতারক জানায় তার টাকা ডিপোজিট করনা হবে কিন্তু তার ফেডারেল ঠ্যাক্স হিসেবে ৫৫ হাজার ডলার ব্যাঙ্কের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে। সুমন ব্যাংকিং চ্যানেলে সেই টাকাও পরিশোধ করেন। কিন্তু পরিশোধের পর আর টাকা আসেনা। এমন অবস্থায় তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার মধ্যে পড়েছেন তিনি। এমন অবস্থায় তিনি উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে এ রকম অভিনব পন্থায় একটি চক্র মানুষের নিকট থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনায় গোয়েন্দা নজরদারী শুরু করে অপরাধ তদন্ত সংস্থা (সিআইডি)। এক পর্যায়ে এই চক্রের অন্যতম সদস্যসহ পুরো চক্রকেই সনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে গতরাতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতারও করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো এই চক্রের মূল হোতা অপু। তাদের সহযোগী হলো আকাশ ও ইব্রাহিম।
সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, এই চক্রটি বড় বড় ব্যবসায়ী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের টার্গেট করে ফাঁদ পাতে। আর এই ফাঁদে পা দিয়ে কেউ লাখ টাকা আবার কেউ কোটি টাকা পর্যন্ত হারান। অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে থানায়ও অভিযোগও করেন না।
তিনি বলেন, আরা এই চক্রকে গ্রেফতার করার জিজ্ঞাসাবাদে আরো তথ্য পেয়েছি। তারা এভাবে প্রতারণা করে তাদের নিজ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে প্রায় ২ কোটি টাকার ওপরে ডিপোজিট রয়েছে। অর্থাৎ প্রতারণার টাকায় এরা কোটি পতি হয়ে গেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি, এই চক্রটি যে শুধু দেশি তা নয়, এদের সঙ্গে অবৈধভাবে আমাদের দেশে বসবাসরত কিছু বিদেশিও রয়েছে। এরা লাখ লাখ ডলার দেয়ার নাম করে কাষ্টম, ব্যাংক ক্লিয়ারেন্স, কুরয়িার চার্জ এগুলো বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ফেসবুক কিংবা মেইল কেউ এ ধরনের ম্যাসেজ পাঠালে তার সঙ্গে যোগাযোগ না করাটাই ভালো। আর যদি যোগাযোগ হয়ে যায় তবে লেনদেন করার আগেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্মরানাপন্ন হওয়াটাই ভালো। “ভার্চুয়াল টোপ থেকে সাবধান”। আপনার মূল্যবান অর্থ প্রতারকদের দিয়ে সর্বস্ব হারাবেন না।“সাইবার ওয়ার্ল্ডে অপরিচিত নতুন বন্ধুদের কাছ থেকে নগদ টাকা/মূল্যবান গিফট নেয়ার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করুন এবং প্রতারিত হওয়া থেকে বাচুঁন”।
এদিকে সূত্র জানায়, এ ধরনের অন্তত ১০ টি চক্র রয়েছে। চক্রের প্রতারকরা ঢাকায় বসে সবকিছু নিয়ন্ত্রন করে। আর এদের প্রায় শতাধিক সদস্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রয়েছে। এরা ঢাকা ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলে বড় বড় ব্যবসায়ী, অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তাকে টার্গেট করে। সমাজে তাদের আর্থ সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করে তারপর ফাঁদ পাতে। এভাবেই লাখ লাখ ডলারের ফাঁদ পেতে কোটি কোটি টাকা আত্নসাৎ করছে। অচিরেই এই চক্রের সবসদস্যকে আইনের আওতায় আনা হবে সিআইডি নিশ্চিত করেছে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments