রাজনীতি
রোডমার্চের রংপুরের সমাবেশে কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ
নেতৃবৃন্দ
বলেন, উজানের দেশ থেকে নেমে আসা নদীগুলো জালের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেশের
ঋতুবৈচিত্র্য, প্রাণপ্রকৃতি, কৃষিকে রক্ষা করেছে। কিন্তু ভারত
আন্তঃনদীসংযোগ প্রকল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেচ প্রকল্পের নামে একে একে ৪৯টি
নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করার আগ্রাসী নীতি গ্রহণ
করেছে।এতে খরাকালে তিস্তা নদীতে আর পানি মিলছে না বললেই চলে।এই ভরা বোরো
মৌসুমে পানি সংকটের কারণে ধান উৎপাদন ১০ শতাংশ কমে যাবে। নদীতে পানি না
থাকায় ভূ-গর্ভস্ত পানির স্তর ক্রমাগত নেমে যাচ্ছে,আর্সেনিকের মাত্রা বাড়ছে,
হারিয়ে যাচ্ছে বিশাল মৎস্য সম্পদ,বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।তিস্তা
চুক্তির বিষয়টি দুই দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়, এতে কোন রাজ্য সরকার
বাধা দিতে পারে না।নতজানু নীতি পরিহার করে তিস্তা পানি চুক্তিতে সরকারকে
জোড়ালো ভূমিকা রাখতে হবে।এতেও সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক ফোরামে এটি অভিযোগ
আকারে পেশ করে দ্রুত এই সংকট নিরসন করতে হবে।নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারত-
পাকিস্তানের সম্পর্ক বৈরীপূর্ণ হলেও তারা সিন্ধু নদের পানি প্রত্যাহার
করেনি।সরকার দাবি করে বাংলাদেশ - ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। বন্ধুত্বের
নমুনা আমরা দেখছি পানি প্রত্যাহারে, বর্ষাকালে সবগেট খুলে দিয়ে বন্যায়
ভাসিয়ে দিয়ে, সীমান্তে আমাদের দেশের মানুষকে গুলি করে হত্যার
মধ্যে।সাম্রাজ্যবাদী ভারত দেশে ভূ-প্রাকৃতিক, বানিজ্যিক, সাংস্কৃতিক
আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন।কমরেড ফিরোজ বলেন,
এই রংপুর অঞ্চলের ধান,পাট,আলুসহ অন্যান্য কৃষি ফসল দেশের অনেকাংশে চাহিদা
পূরণ করে। এখন পানির অভাবে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত আর ক্রমান্বয়ে উত্তরাঞ্চল
মরুকরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে।বর্তমান জনস্বার্থ বিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের
লুটপাট,দুর্নীতি আর নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে
তুলে মরুকরণের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান
জানান।সমাবেশে শেষে একটি মিছিল নগরের প্রধান সড়ক পথে জেলা স্কুল মোড় গিয়ে
রোড মার্চটি তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে যাত্রা করে।
Comments