সারাদেশ
পীরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন হ্যট্রিক করতে যাচ্ছেন নুর মোহাম্মদ!
আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পীরগঞ্জ উপজেলায় শেষ মুহুর্তে অনেক জমে উঠেছে। চেয়ারম্যাদের মধ্যে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মন্ডল(আনারস) এর প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মোকাররম হোসেন জাহাঙ্গির চৌধুরী (ঘোড়া) ও জাপার নুর আলম যাদু(লাঙ্গল)প্রতীকে নির্বাচন করছেন। মনোনয়ন দাখিলের পর থেকেই যাদুর লাঙ্গলে পানি পাচ্ছে না। জাপার কোন নেতা কর্মীরাই তারে সাথে নেই। নেই তেমন কোন নির্বাচনী সভা সমাবেশ। নির্বাচনে অংশ নেয়া তার এক ধরনের নেশা হয়ে দাড়িয়েছে। গত সংসদ নির্বাচনেও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে তিনি জামানত হারিয়েছেন। মোকাররম হোসেন জাহাঙ্গির চৌধুরী বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে(ঘোড়া) প্রতীকে অংশ নিয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন নুর মোহাম্মদ মন্ডল (নৌকা)। তখনও জাহাঙ্গির চৌধুরী ও নুর আলম যাদু দু’জন মিলে যে পরিমান ভোট পেয়েছিলেন, নুর মোহাম্মদ মন্ডল একাই ওই পরিমান ভোট পেয়েছিলেন। যদিও এবারের নির্বাচনে দলীয় প্রতীক নেই ,তবুও ইঙ্গিত রয়েছে। যে কারনে গোটা উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা কর্মীরা মাঠে নেমেছেন নুর মোহাম্মদ মন্ডলের পক্ষে। পাশাপাশি ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্য/সদস্যারাও কাজ করছেন আনারস প্রতীকের পক্ষে। কয়েকদিন আগেও নির্বাচনী মাঠের অবস্থা দোদুল্যমান ছিল। কিন্তু গত দু দিন থেকে সব কিছু পাল্টে গেছে। নুর মোহাম্মদ মন্ডল এর অবস্থা এখন তাই রমরমা। সব কিছু মিলিয়ে আগামী নির্বাচনে নুর মোহাম্মদ মন্ডল আনারস প্রতীকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে হ্যাট্রিক করতে যাচ্ছেন,একথা নির্দ্বিধায় বলা যেতে পারে। সাধারণ ভোটারদের আগ্রহ অনেক কম। এদিকে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণায় সরগরম জমে উঠেছে উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও ১ টি পৌরসভা এলাকায়। দ্বিতীয় ধাপের এ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামী ২১ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে দিবারাত্র চলছে প্রার্থীদের প্রচারণার ও হরেক রকমের গান শ্লোগানের মাইকিং। দেয়ালে ও রশিতে টানানো পোস্টারে ছেয়ে গেছে উপজেলার অলিগলি ও দোকান পাট। বিরামহীন প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। গ্রামগঞ্জে সাধারন ভেটাররা কাজকর্ম নিয়ে ব্যতিব্যস্ত রয়েছেন। যে কারনে ভোটের প্রতি তাদের খুব একটা আগ্রহ নেই। সরেজমিন দেখা যায়,আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মাঝে নির্বাচনী আমেজ ও ফুরফুরে মেজাজ লক্ষ্য করা গেছে। মোট ১’শ ২৩ টি কেন্দ্র ২৫ জন ম্যজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। উপজেলা নির্বাচন অফিস জানায়,উপজেলায় মোট ১১ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। উপজেলায় এবার মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৯৭২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫৭ জন,নারী ভোটার ১ লাখ ৬৭ হাজার ১১ জন এবং হিজড়া ৪ জন। এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থীরা যাতে নির্বাচনের আচরণবিধি মেনে চলেন সে লক্ষ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রার্থীদের সাথে। উপজেলার চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আনারস প্রতীকের আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ মন্ডল বলেন, আমি দীর্ঘ ১০ বছর সংসদ সদস্য এবং ১০ বছর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছি। নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে মানুষের সেবা করার চেষ্টা করেছি। তাই আমি আশাবাদী জনগণ আমাকে চেয়ারম্যান পদে বিজয়ী করবে ইনশাআল্লাহ। নির্বাচিত হলে আধুনিক, উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট উপজেলা পরিষদ গঠনে কাজ করব। ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তালা প্রতীকের শফিউর রহমান মিলন বলেন এবারের উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সংখ্যা বেড়েছে। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নিতে পারবেন। আমি বিশ্বাস করি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ ইকবাল হাসান জানান, নির্বাচন ঘিরে আমাদের মনিটরিং কার্যক্রম জোরদার রয়েছে। প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছে। কোথাও যদি আচরণ বিধিমালার লঙ্ঘন হয় আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। উপজেলায় আমাদের দু’জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আচরণবিধি পর্যবেক্ষণে মাঠে সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এখন পর্যন্ত আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
Comments