বিনোদন

পীরগ‌ঞ্জের একমাত্র বি‌নোদন কেন্দ্র আনন্দ নগর

আব্দুল করিম সরকার : শত ব্যস্ততা, কর্মযজ্ঞ, যান্ত্রিকতা নিয়েই মানুষের বসবাস। এ সবের ক্লান্তিতে যখন সে নেতিয়ে পড়ে, একঘেয়েমি জীবন যখন তাকে অতিষ্ঠ করে তোলে, তখন সে চায় একটু বিশ্রাম, বিনোদন, একটু অন্যরকম জীবন। আর তাই এসব থেকে একটু দূরে থেকে চার দেয়ালের বাইরে বেড়াবার আকাংখা জাগে তার। চাকরিজীবীরা ঈদ উৎসবের ছুটি পেলে বড় জোর বাড়ি পর্যন্ত ঘুরে আসেন। কিন্তু ভ্রমণ বলতে যা বোঝায়, তার আস্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা সবার হয় না। কারণ সবার ভাগ্যে তো আর কুয়োকাটা, সেন্টমার্টিন, সুন্দরবন, রাতারগুল কিংবা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত যাবার সময় ও সামর্থ হয়না। এসব সাধারন মানুষের কথা মাথায় রেখে এক আনন্দঘন পিকনিক স্পট আনন্দ নগর তৈরী করেছেন রংপুরের পীরগঞ্জে সাবেক সাংসদ ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ মন্ডল। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় উত্তরবঙ্গের একমাত্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর বিনোদন পিকনিক স্পট আনন্দ নগর সর্ব সাধারনের জন্য একটু সুস্থ বিনোদনে সময় কাটানোর লক্ষ্যে তৈরী করেছেন তিনি। হাজার হাজার দর্শনার্থী এবং ভ্রমণপিয়াসী মানুষের ক্রম-পদচারণায় মূখরিত এই আনন্দ নগর পিকনিক স্পট। কি নেই এখানে। ইট, বালি, সিমেন্ট দিয়ে ঘোড়া, বাঘ, হরিণ, কুমির, গ্রামীণ ঐতিহ্য ঢেঁকিতে চাল ভানা, গাভীর দুধ দোহন (দুধ দোয়া), প্ল্যানোটরিয়াম, সৌরজগত, আজব গুহা, বরফের দেশ, কৃত্রিম চিড়িয়াখানা, একুরিয়াম ভর্তি মাছের খেলা, ক্যাবেল কার, বাঘের গলা থেকে বকের হাড় বের করা। কৃত্রিম চিড়িয়াখানা মাছের গাছ থেকে শেয়ালের কাঁঠাল চুরি, গাছে ময়ুর পাখির মনমুগ্ধকর ভাস্কর্য করে হাজারও দর্শানার্থীদের তাক লাগিয়ে দিয়েছে। বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কার্য করার পাশা-পাশি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি নজরুল ইসলাম, শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, কর্নেল এম.এ.জি ওসমানী সহ বিখ্যাত ব্যক্তিত্বদের ভাস্কর্য। ঈদের পরেও প্রতিদিনই আনন্দ নগরে ভাস্কর্য থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে বিনোদন কেন্দ্রে আসছেন। সাবেক সাংসদ নিজে উপস্থিত থেকে সব গুলো কাজ করে থাকেন। সারা রাত্রি চিন্তা করে দিনের বেলা তার প্রতিফলন ঘটান আনন্দ নগরের বিভিন্ন কাজ করে। স্পটের তিন পার্শ্বে বিরাট নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে। বিরাট আকৃতির চরকী ও শিশুদের হেলিকপ্টার এবং পানিতে চলছে আকর্ষনীয় ভাসমান হেলিকপ্টার নৌকা। চিড়িয়াখানার কাজ প্রায় শেষের দিকে। ভাসমান হোটেলে আকর্ষনীয় খাবার সহ বেশ কয়েক রকমের দোকানী বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করছেন। এর প্রবেশ দ্বারে বিরাট আকৃতির একটি পরী গোলাপ ফুল হাতে নিয়ে সবাইকে যেন শুভেচ্ছাই জানাচ্ছে। এ ব্যাপারে সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব নূর মোহাম্মদ মন্ডল বলেন- ‘আমার এখানে একটি বড় পুকুর ছিল তার পার্শ্বে আমি কিছু গাছ লাগাই। কয়েকদিন পর দেখি মানুষ এখানে এসে পিকনিক করেন। আমি আশ্চর্য হলাম। তখন থেকে মুলত শুরু হলো আমার এই পথ চলা। আমি আরও বেশি আশ্চর্য হই যখন দেখি বিভিন্ন জেলা থেকে হাজারও বাস, মিনি বাস, কারে করে বহু দর্শনার্থী পিকনিক করতে আসছেন। বিভিন্ন এনজিও ব্যাংকের জন্য কনফারেন্স রুম আছে। বড় বড় অনুষ্ঠান এবং সভা-সেমিনারগুলো আমার এখানে করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। অনেক শিক্ষনীয় জিনিস ইতিমধ্যে বিভিন্ন চিত্রকল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা বলেন- যেহেতু এখানে পুকুর আছে সেহেতু লাইফ জ্যাকেট বা সুইমিং পুল করা প্রয়োজন। আমি সে বিষয়টিও মাথায় রেখেছি। এ ছাড়া এখানে দেশ বরেণ্য নামি-দামি শিল্পীদের এনে বড় অনুষ্ঠান করলে আরও জম-জমাট পরিবেশের সৃষ্টি হবে এবং দর্শনার্থীদেরও ভাল লাগবে। উল্লেখ্য এই ভাস্কর্যগুলো যার নিপুণ হাতের তৈরী, সে হলো পার্শ্ববর্তী চন্ডিপুর গ্রামের শ্যামল। সরে জমিনে দেখা গেছে দীর্ঘ ২ দুইবছর করোনা মহামারী থাকায় দেশের বিনোদন প্রেমিরা আনন্দ থেকে বিরত ছিল। এখন আবার বিনোদন প্রেমিরা বিনোদন কেন্দ্রে আত্মীয় স্বজন বন্ধন বান্ধব ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেছেন আনন্দ নগরে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments