September 16, 2024
সারাদেশ

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির এলাকায় ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন॥

ফুলবাড়ী, দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়নের চৌহাটি বাজারে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কয়লা উত্তোলনের কারণে চৌহাটি এলাকায় প্রায় ১ হাজার বাসাবাড়ি কম্পনে ফেটে যাওয়ায় জীবন ও বসত ভিটা রক্ষা কমিটির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল বুধবার সকাল ১০টায় পার্বতীপুর উপজেলার চৌহাটি বাজারে জীবন ও বসত ভিটা রক্ষা কমিটির সভাপতি মোঃ মতিয়ার রহমানের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। পাতিগ্রাম ও পাঁচঘরিয়ার প্রায় ৪ হাজার নারী পুরুষ ও স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধন শেষে দুপুর ১২টায় চৌহাটি বাজারে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে জীবন ও বসত ভিটা রক্ষা কমিটির সভাপতি মতিয়ার রহমান বলেন, আমরা ৮ দফা মেনে নেওয়ার জন্য খনি কর্তৃপক্ষকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। কিন্তু আমাদের কোন কথা কয়লা খনি কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিচ্ছেনা। ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নের মধ্যে রয়েছে; ফাটা বাড়ির ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, বসবাসের পুন:নিশ্চয়তা দিবে হবে, সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ঘর ঘর চাকুরী দিতে হবে, বিশুদ্ধ পানির সু-ব্যবস্থা করে দিতে হবে, আবাদি জমিতে পানি থাকছে না যার ফলে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে তার সুব্যবস্থা করে দিতে হবে, কয়লাখনির গেইট হতে চৌহাটি গ্রামের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কার করে দিতে হবে, মসজিদ-মন্দির, ঈদগাহ মাঠ এবং কবরস্থান গুলির উন্নয়নের ব্যবস্থা করে দিতে হবে, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বা বসবারের অযোগ্য বসতবাড়ি ও স্থাপনা স্থায়ী সমাধান করে দিতে হবে।  
আমাদের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে খনি কর্তৃপক্ষ ও পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সংসদ সদস্যকে অবগত করলেও আজ পর্যন্ত কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছেনা। আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে আর কতদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই গ্রামে বসবাস করব? এই এলাকার ভূ-গর্ভ থেকে কয়লা তোলার কারণে প্রতিনিয়ত দেবে যাচ্ছে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির কর্মকর্তা কর্মচারীরা লাভবান হলেও এলাকার গ্রাম ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমরা অতি দ্রুত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি আমাদেরকে বাঁচান, তা না হলে এই যন্ত্রণা থেকে মৃত্যু অনেক ভালো। সমাবেশে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন স্কুল কলেজ মাদ্রাসা কবরস্থান রাস্তাঘাট সবই ধ্বংস হয়ে গেছে। বাকি কিছু নেই। কিন্তু আমরা এখান থেকে অসুস্থ রোগীকে নিয়ে হাসপাতালে যাব, রাস্তার বেহাল অবস্থা থাকায় অ্যাম্বুলেন্স্ও এই গ্রাম আসতে চায় না। তাহলে আপনারা বোঝেন আমরা কিভাবে জীবনযাপন করছি? একাধিক ব্যক্তি জানান, নলকুপে পানি উঠছে না, এ এলাকায় তাপমাত্রা বেড়ে গেছে, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, স্কুল কলেজ মাদ্রাসাগুলিতে যাওয়ার রাস্তা থাকলেও বর্ষাকালে চলাচল করা সম্ভব হয়না। আমরা এর প্রতিকার চাই ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জীবন ও বসত ভিটা রক্ষা কমিটি চৌহাটির সংগঠনের উপদেষ্টা শাহ্ এনামুল মাস্টার, প্রফেসর শাহ্ ইনতেজামুল হক, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান আতাউর রহমান, সাইদুর রহমান প্রমুখ। চৌহাটি গ্রামের আনছার ফকির, হরিদাস, কালু মন্ডল জানান উত্তর দিকে নতুন করে কয়লা তোলা হলে এলাকা ধ্বংস হয়ে যাবে। মানববন্ধনে যারা আজ অংশগ্রহণ করেছেন তাদের ৮ দফা দাবি মেনে নেওয়া উচিত খনি কর্তৃপক্ষকে।  
এই বিষয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ সাইফুল ইসলাম এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে মোবাইল গ্রহণ করেননি। চৌহাটি গ্রামের প্রায় ৫ হাজার নারী-পুরুষ স্কুল কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র ছাত্রী স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ মানবন্ধনে অংশগ্রহণ করেন। পরিশেষে সভাপতি বলেন, আমাদের আজকের এই সমাবেশে ৮দফা দাবী মেনে না নিলে আগামীতে কঠোর থেকে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ঘেরাও করা হবে কয়লা খনি।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments