সারাদেশ

কালীগঞ্জে ভেজাল ছানা ও ঘি তৈরি কারখানার সন্ধান!

ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কোলা বাজার এলাকায় নদীর তীরবর্তী মেহগনি বাগান সংলগ্ন একটি ভেজাল ছানা ও ঘি তৈরির কারখানা স্থাপন করে দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন এক অসাধু ব্যবসায়ি। এই কারখানাটির মালিক রিপন ঘোষ।তিনি এই উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা নন। মাগুরার বাগাট অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দা তিনি। কারখানাটিতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে এবং পাউডার দুধ ব্যবহার করে ছানা তৈরি ও ইন্ডিয়ান মেশিনের সাহায্যে ছানার ক্রিম তৈরি করে তা দিয়ে ভেজাল ঘি বানানো হচ্ছে। শ্রমিকরা একটি বস্তা থেকে গুড়া দুধ বের করে ছানা তৈরির উদ্দেশ্যে তা পানিতে দিয়ে গোলাচ্ছে।আগেও পাউডারের তৈরি দুধ জ¦ালিয়ে তা দিয়ে ছানা তৈরি করার জন্য বাতাসে ঠান্ডা করতে দেওয়া হয়েছে। কারখানাটিতে ছানা তৈরীর কাজে গরুর দুধের ব্যবহারের থেকেও বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে বাজার থেকে কেনা গুড়া দুধ। ওই কারখানার একটি ঘরে ইন্ডিয়ান মেশিনে গুড়া দুধের ছানা থেকে ক্রিম তৈরি করা হহয়। ঐ ঘরে কয়েকটি গুড়া দুধের ৫০ কেজির বস্তা ও ময়দার প্যাকেটও দেখা যায়। কারখানার ভেতরে এবং বাইরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কোন বালাই নেই। বরং মশা মাছি প্রচুর পরিমানে দুধ ও ছানার উপরে বসছে। আবার ছানাকাটার জন্য রাখা পাত্রে পাখিও বসতে দেখা যায়। আর জ¦ালানি হিসেবে বড় বড় মাটির চুলায় ব্যবহার করা হচ্ছে লাকড়ি বা খড়ি। এই কারখানা জুড়ে রয়েছে স্যাঁতসেঁতে ভাব ও দুর্গন্ধ। কারখানাটির একজন শ্রমিক জানান, আমরা পাঁচজন এখানে কাজ করি। প্রতিদিন ৫০০ টাকা মজুরি পাই। কারখানাটিতে প্রতিদিন পাউডার ও গরুর দুধ মিশিয়ে প্রায় ১৫০০ লিটার দুধ জালানো হয়। তা থেকে উৎপাদিত হয় প্রায় ৭০০ কেজি ছানা। আর কারখানাটিতে উৎপাদিত প্রতি কেজি ছানা স্থানীয় ও আশপাশের জেলা শহরের বড় বড় মিষ্টির দোকানে বিক্রি হয় ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দামে। কারখানাটিতে দুধ বিক্রি করে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একজন জানান, রিপন ঘোষ অনেকদিন ধরেই এখানে কারখানা দিয়ে ব্যবসা করছেন। তার মাল বিক্রির অনেক জায়গা রয়েছে। যে কারণে দুধের পাশাপাশি তিনি গুড়া দুধও ছানা তৈরির কাজে ব্যবহার করেন।আবার ইন্ডিয়ান মেশিনে ভেজাল ছানার ক্রিমও তৈরি করেন। এই ক্রিম এর সাথে ডালডা ও কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করেন ভেজাল ঘি। ক্রিম তৈরির মেশিন সব সময় তিনি কারখানায় রাখেন না। কোলা বাজারের পাশে তার ছোটো আরো একটি কারখানা রয়েছে। তার ছোটো ২ টি পিকআপ রয়েছে। এই পিকআপে করেই তিনি উৎপাদিত ছানা ও ঘি দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে ফেলেন। অবশ্য তার কারখানাটি হওয়াই আশপাশে আমার মতো অনেক ঘোষ তাদের দুধ বিক্রি করতে পারছে। ভেজাল ছানা ও ঘি তৈরির কারখানার মালিক রিপন ঘোষের মুঠোফোনে বেশ কয়েক বার ফোন দিলেও তিনি কলটি রিসিভ করেননি। কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আহমেদ জানান, লোকমুখে শুনেছি নদীর ধারে একটি ছানা তৈরির কারখানা রয়েছে। আমার পরিষদ থেকে প্রতিষ্টানের মালিকের নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্স আছে বলে আমার জানা নেই। আপনি বললেন আমি খোঁজ নিবো এই প্রতিষ্ঠানে যথাযথ নিয়ম মেনে খাদ্যজাত পণ্য উৎপাদন করছে কিনা সে ব্যাপারে। কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাবিবুল্লাহ হাবিব জানান, যথাযথ নিয়ম মেনে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত না করে যদি ছানা ও ঘি তৈরি মতো গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য দ্রব্য উৎপাদন করা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এই কারখানাটির কোনো তথ্য আমার জানা ছিলনা। আপনার মাধ্যমে কারখানাটি তথ্য ও লোকেশন পেলাম। অবশ্যই আমি ওই কারখানাটি ভিজিট করবো এবং সেখানে কোনো অনিয়ম পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করব।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments