September 16, 2024
কৃষি

ফুলবাড়ীতে বেগুন গাছের শেকড় পচে মরে যাচ্ছে গাছ, লোকসানে কৃষক

মোঃ আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার ৬নং দৌলতপুর ইউনিয়নের বারাইপাড়া, ঘোনাপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের কৃষকরা লোকসানে পড়েছেন বেগুন চাষ করে। বেগুন গাছের শেকড় পচে মরে যাচ্ছে গাছ। এতে বেগুন ক্ষেত রক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বেগুন চাষিরা।
সরেজমিনে ফুলবাড়ি উপজেলার বারাইপাড়া গ্রামের মিসির উদ্দিনের ছেলে মিজানুর রহমানের বেগুন ক্ষেতের গিয়ে দেখা যায়, মিজানুর রহমানের ২০ শতক জমিতে হাইব্রিড ও হাজারী জাতের বেগুন চাষ করা হয়েছে। বৈশাখ মাসে বেগুন চারা লাগানোর পর থেকে এ পর্যন্ত সর্বসাকুল্যে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৪ হাজার টাকা। এ পর্যন্ত তার ক্ষেতের উৎপাদিত বেগুন বিক্রি হয়েছে মাত্র ২ হাজার টাকার। অথচ এ পর্যন্ত মিজানুর রহমানের ৩০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করার কথা। কিন্তু ক্ষেতের বেগুন গাছে শেকড় পচন রোগের আক্রমনে গাছের শেকড় পচে যাচ্ছে আর গাছের ডালগুলো শুকে যাচ্ছে। অন্য গাছ যাতে আক্রান্ত না হয়ে সেজন্য আক্রান্ত গাছগুলো ক্ষেত থেকে উপড়ে ফেলে দিতে হচ্ছে। শুধু মিজানুর রহমানের-ই নয়, বারাইপাড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে বেগুন চাষি ছলেমন আলী, আব্দুল লতিফের ছেলে বেগুন চাষি মমিনুল ইসলাম, আব্দুল আজিজের ছেলে বেগুন চাষি মিজানুর রহমান ও ময়েজ মুন্সির ছেলে বেগুন চাষি বেলাল উদ্দিনসহ প্রায় সকল বেগুন চাষির বেগুন ক্ষেত এ রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তারা উদ্বিঘ্ন হয়ে পড়েছেন।
বেগুন চাষি মিজানুর রহমান বলেন, প্রথম থেকে ক্ষেতের বেগুন গাছ বেশ রিষ্টপুষ্ট ছিল। গাছে ফুল ও ফল আসায় উৎপাদিত বেগুন থেকে আশানুরূপ লাভবান হবেন এমন আশা নিয়ে বুক বেঁধে ছিলেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই ক্ষেতের ফুল ও ফল ধরা গাছগুলোর মধ্যে দু-একটি করে মরে যেতে শুরু করে। মরা গাছ উপড়ে দেখতে পান শেকড় পচন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ রোগ থেকে রক্ষা করতে অন্তত ১০ বার ওষুধ স্প্রে করেও গাছ রক্ষা করা যাচ্ছে না। অথচ প্রতিবার ওষুধ স্প্রে করতে খরচ হয়েছে ৪০০ টাকা। প্রতিদিনই শেকড় পচন রোগে আক্রান্ত গাছ উপড়ে ফেলতে হচ্ছে। এতে বেগুন ক্ষেত এখন গাছ শূন্য হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বেগুনের বাজার দর চড়া। কৃষক পর্যায় থেকে পাইকাররা ৬০ টাকা কেজি দরে বেগুন কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। ক্ষেতের বেগুন গাছে রোগ বালাই না হলে উৎপাদিত বেগুন থেকে আশানুরূপ লাভ পাওয়া যেতো। কিন্তু বর্তমানে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচও উঠবে না, যা গেছে তার পুরোটাই লোকসানে গেছে।
ঘোনাপাড়া গ্রামের বেগুন চাষি আব্দুর রহিম বলেন, ৮শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছিলেন। গাছ বড় হওয়ার পরপরই গাছের মাথা শুকিয়ে গোড়া পচে দু-একদিনেই মরে যাচ্ছে। এতে পুরো বেগুন ক্ষেতের গাছই মরে গেছে। এজন্য আবাদের সাড়ে ৩ হাজার টাকাই লোকসানে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা শাহানুর রহমান বলেন, এ সময় বেগুন গাছ ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ বিষয়ে কোনো কৃষক কৃষি অফিসে আসেননি। তবে সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বেগুন ক্ষেত দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments