September 19, 2024
সারাদেশ

কোটা আন্দোলনে নিহত পীরগঞ্জের সোহাগের খোঁজ রাখেনি কেউ!

পীরগঞ্জ(রংপুর) প্রতিনিধি ঃ মায়ের জন্য ওষুধ কিনেত গিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাজধানীর বাড্ডায় প্রাণ হারিয়েছে বহুমাত্রিক প্রতিবন্ধি সোহাগ(১৭)। সে বাবা মায়ের সাথে বসবাস করে ঢাকার উত্তর বাড্ডার জিএম বাড়ির ভাড়া বাসায়। প্রতিদিনের ন্যায় বাবা রিকসা নিয়ে বের হয়ে গেছে জীবিকার অন্বেষণে। মা বিছানায় কাতরাচ্ছেন পায়ের ব্যাথায়। শুক্রবার ছেলে ঢাকার বাড্ডায় জিএম বাড়ি মসজিদে জুমআর নামাজ শেষে বাড়ি ফিরে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বের হয়ে যায় শারীরিক প্রতিবন্ধী সোহাগ। পাশাপাশি বাবাকেও খুঁজে নিয়ে আসবে জন্য মাকে বলে বাড়ি থেকে বের হয়। মায়ের জন্য ওষুধ কেনা হলেও সেই ওষুধ নিয়ে আর মায়ের কাছে ফিরতে পারেনি সে। দেশব্যাপী চলমান কোটা আন্দোলনে গত ১৯ জুলাই শুক্রবার ঢাকার বাড্ডায় গুলিতে নিহত হয় সোহাগ (১৭)। সে প্রতিবন্ধি ও বয়স কম হওয়ায় কোন গামেন্টেসে কাজ করতে পারেনি। সে ভাড়া বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি রংগের ছোট ফ্যাক্টরীতে কাজ নেয়। তা দিয়েই হতদরিদ্র পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করেন সে। সোহাগের বাড়ি রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার শানেরহাট ইউনিয়নের বড় পাহাড়পুর গ্রামে। বাবা রেজাউল ইসলামের দুই ছেলের মধ্যে ছোট সোহাগ। জন্ম থেকেই সোহাগের পা ও চোখের প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়। নানা চিকিৎসার পরেও সমস্যাই থেকে যায়। গ্রামের বাড়ি বড় পাহাড়পুর গিয়ে দেখা যায়,জরাজীর্ণ ছোট্ট একটি মাটির ঘরের বারান্দায় ছেলের কবরের দিকে মুখ করে বসে আছেন মা সালমা বেগম। অঝরে ঝরছে তার চোখের পানি। তার সাথে গায়ে কাপুনি নিয়ে দাড়িয়ে আছে বাবা রেজাউল ইসলাম। তাদেরকে ঘিরে থাকা প্রতিবেশিরাও কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে মা গার্মেন্টেস কর্মী সালমা বেগম বলেন,হামার বুক কেটা খালি করলি বাবা ? আল্লাহ তারও বুক খালি করবি। অসুখ থাকাতো বাবাকে কোলে নিয়ে সংসার করছি বাবা। রিকসা চালক বাবা রেজাউল বলেন,আমি রিকসা নিয়ে গেছি। আমাকে কে যেন বলল,আমার ছেলের গায়ে গুলি লাগছে। শুনিয়া আমি এমজেড হাসপাতালে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি কাউকে চিকিৎসা দিচ্ছে। আবার কাউকে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখছে। ঢেকে রাখা কাপড়ের নিচ দিয়ে আমার ছেলের পাঞ্জাবী দেখা যাচ্ছে। আমি সেখান থেকে ছেলেকে কোলে নিয়ে রিকসায় করে বাসায় আসি। এরপর গাড়ি ভাড়া করে গ্রামের বাড়িতে আসি। আমার নিজের কোন জমি না থাকায় অন্যের জমিতে ছেলের লাশ দাফন করেছি।এখন আমি কি করে সংসার চালাবো ? আমার শরীর এখন থরথর করে কেঁপে ওঠে। একই গ্রামের ও একই মালিকের ভাড়া বাসায় থাকা নুরু মিয়ার ছেলে হিরু মিয়া বলেন,সোহাগের গুলিটা বুকের বাম পার্শ্বে লেগে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। পুরো শরীর রক্তাক্ত। শানেরহাটইউপি চেয়ারম্যান মেছবাহুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,আমি শুনেছি পাহাড়পুর গ্রামেরএকজন ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।তাকে গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। আমি আজ সেখানে যাব। পরিষদের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন,আমি বিষয়টি জানি না। এ রকম কোন তথ্য আমার কাছে নাই।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments