September 19, 2024
সারাদেশ

স্কুল বিল্ডিং জরাজীর্ণ হলেও বন্ধ হয়নি নিয়োগ বাণিজ্য

 জসীমউদ্দীন ইতি (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:

শিক্ষার প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও উপযোগী পরিবেশ তৈরি না করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কেবল নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার সাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক এর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিস, উপজেলা নির্বাহী অফিস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও অজ্ঞাত কারণে কোন প্রতিকার না পাওয়ায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও স্থানীয়দের মাঝে।

জানা যায়, বিগত আওয়ামী সরকারের নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক থাকায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক প্রতিষ্ঠানের তেমন কোন উন্নয়ন করেননি। অপরদিকে প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের জন্য আসা বিভিন্ন বরাদ্দের টাকা কি হয়েছে তাও বলতে পারেনা কেউ। সরেজমিনে গেলে চোখে পড়বে বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ অবস্থা। শিক্ষার পরিবেশ নেই বললেই চলে, শ্রেণি কক্ষের জানালা-দরজা ভাঙ্গা-চোরা। প্রধান শিক্ষক ক্ষমতার অপব্যবহার করে গোপনে ল্যাব এ্যাসিস্টেন্ট, অফিস সহায়ক, আয়া ও পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেন। নিয়োগের নীতিমালায় জাতীয় বহুল প্রচারিত পত্রিকা ও স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নীতিমালা থাকলেও ব্যক্তি স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে পার্শ্ববর্তী জেলার অপ্রচলিত সার্কুলেশন বিহীন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে উক্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়ে তা গোপন করেন। গত ২৫/১২/২০২৩ ইং তারিখে বড়দিনের ছুটি থাকলেও ওই দিন নিয়োগ বোর্ডের সকলকে ম্যানেজ করে নিয়োগ পরীক্ষা সমাপ্ত করেন এবং মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ দেন।

স্কুলের জমিদাতা আব্দুল কুদ্দুস আক্ষেপ করে জানান, প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুক কৌশলে তার খালাতো ভাই জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানকে সভাপতি করে মোটা অংকের বিনিময়ে স্কুলের নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। ইতিপূর্বে ২০০২ সালেও প্রধান শিক্ষক জাল সার্টিফিকেটের মাধ্যমে তার স্ত্রী ময়রুমা খাতুনকে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন এবং পরবর্তীতে তা তদন্তে ধরা পড়লে বর্তমানে তার বেতন বন্ধ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য করতে এবং বিদ্যালয়ের সকল কাজে একক কর্তৃত্ব খাটাতে সুকৌশলে তার খালাতো ভাইকে সভাপতি, স্ত্রী, মামাতো ভাই, নিজের বোনসহ তার অনুসারী ব্যক্তিদেরকে সদস্য করে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেন।

বিদ্যালয়ের পিয়ন খায়রুল ইসলাম জানান, আসলে কতজন নিয়োগ পেয়েছে তা আমি জানিনা, শুধু দেখি নতুন করে তিনজন হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওমর ফারুকের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। সকল নিয়ম-কানুন মেনে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। আর সময় সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করা হবে।

নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও জেলা পরিষদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অনিয়মের বিষয়ে আমার তেমন কিছু জানা নেই। একদিন আসেন প্রধান শিক্ষকসহ একসাথে বসে আপনার সব প্রশ্নের উত্তর দেওয়া যাবে।

এ ব্যাপারে পীরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ আরিফুল্লাহ জানান, যে নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, সে সময় প্রধান শিক্ষক ল্যাব এ্যাসিস্টেন্ট পদেও নিয়োগ দেওয়ার জন্য সর্বোচ্চ অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু ল্যাবরেটরি না থাকায় আমরা ওই পদে কোন জনবল নিয়োগ দেয়নি।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments