September 19, 2024
অপরাধ

সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সফরের খরচ মেটাতে স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

এস.এম.রকি, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: গত ১৩ জুলাই স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী অধ্যাপক ডা. সামন্ত লাল সেন দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। তাঁর এই সফরের খরচ মেটাতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এটিএম ওবায়দুল্লাহ'র বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নির্ধারিত চাঁদা না দিলে বেতন আটকিয়ে রাখার ভয় দেখান তিনি। জোরপূর্বক চাঁদা আদায় নিয়ে ক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এই সফরের খরচ মেটাতে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফ, সিএইচসিপি, স্বাস্থ্য সহকারী মিলে মোট ১০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন অনুযায়ী ৪০০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা নির্ধারণ করেন তিনি। এই চাঁদা কালেকশনের জন্য তাঁর পছন্দের কর্মচারীকে দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, চাঁদা কালেকশনের এই বিষয়ে অফিসিয়ালি একটি চিঠি ইস্যূ হয়েছিল বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে সেই চিঠি এই প্রতিবেদকের হাতে না থাকায় চিঠির সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, ১৩ জুলাই সকালে ঐ সময়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রী সকালে এসে মাত্র ১৫-২০ মিনিট হাসপাতালে অবস্থান করে সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করলেও আপ্যায়িত বা ফুলেল শুভেচ্ছা নেননি।
এবিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরতদের সাথে এই বিষয়ে জানতে চাইলে কেউ প্রকাশ্যে কেউ বক্তব্য দিতে রাজি না হলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবিষয়ে বিস্তারিত জানান।
নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্বাস্থ্য সহকারী ও সিএইচসিপি জানান, স্বাস্থ্য সহকারী প্রতি ৪শ ও সিএইচসিপিদের ৬শ টাকা চাঁদার জন্য নিয়মিত চাপ দিচ্ছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। টাকা না দিলে বেতন বন্ধ রাখার ভয় দেখাচ্ছেন এটা আসলেই লজ্জাজনক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নার্স ও চিকিৎসক জানান, বেতন অনুযায়ী আমাদের ১০০০-৩০০০ টাকা চাঁদার জন্য চাপ দিচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। তবে আমরা এখনও কেউ চাঁদা দেইনি। এই চাঁদা তিনি প্রতিদিন নিজেই চাচ্ছেন।
চাঁদা কালেকশনের বিষয়টি স্বীকার করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এটিএম ওবায়দুল্লাহ বলেন, মন্ত্রীর সফরের খরচের জন্য নয় এটি আপ্যায়ন বিল মেটাতে নেওয়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন যে আপ্যায়ন বাবদ কোন বিল সরকার থেকে পাওয়া যায় না তাই অফিসে আগত উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ ও অতিথিদের আপ্যায়ন মেটাতে এই টাকা নেওয়া হচ্ছে। তবে চাঁদা না দিলে বেতন আটকিয়ে রাখার বিষয়টা অস্বীকার করেন এই স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা।
এবিষয়ে সিভিল সার্জনের দায়িত্বে থাকা ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. শরীফ মুঠোফোনে বলেন, কোন ভিআইপি'র সফর শুধু নয় যেকোন বিষয়ে চাঁদা কালেকশন নিয়মবহির্ভূত কাজ। এবিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে আপ্যায়ন বিলের বরাদ্দ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অফিসের জন্য সামগ্রিক বিষয়ে বাৎসরিক একটা বরাদ্দ থাকে সেটা কোন খাত ব্যয় করবে তাদের বিষয়। উল্লেখ্য, এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নিয়মিত অফিস থাকেন না বলে জানা গেছে।

Jamie Belcher

info@jagobahe24.com

News portal manager

Follow Me:

Comments