অপরাধ
ঘোষণা দিয়ে স্কুলছাত্রীকে অপহরণের অভিযোগ
স্থানীয়রা বলছেন, ওই গ্রামে এক শিক্ষার্থীকে অপহরণ করা হবে এমন ঘোষণা আগেই দেওয়া হয়েছিল। তবে পুলিশের দাবি, গতকাল অপহরণ হওয়া শিক্ষার্থীর সঙ্গে অপহরণকারীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পূর্বের হুমকির সঙ্গে এ ঘটনার সম্পর্ক নেই।
স্থানীয়রা জানান, গত সেপ্টেম্বরের শুরুতে গ্রামের হিন্দু পাড়ার একটি গাছে কে বা কারা একটি চিঠি টাঙায়। এতে বলা হয়, ‘এই বাড়ির মেয়েকে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে এবং মুসলমান বানানো হবে।’
পরে গত ৪ সেপ্টেম্বর রনজিত চন্দ্র সেন নামে একজন ফুলবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। ওই দিনই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুমের নির্দেশে গাছ থেকে চিঠিটি সরিয়ে ফেলা হয়।
স্থানীয়রা আরও বলছেন, অপহৃত কিশোরী দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। বুধবার বিকেল ৫টার দিকে কোচিং সেন্টার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে অপহরণ করা হয়। এ ঘটনায় অভিযোগের তীর উঠেছে, অনন্তপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হালিমের ছেলে আলিনুর রহমান (৩৫) তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে।
সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে ওই এলাকার হিন্দু পাড়ায় একটি গাছে চিঠি টাঙিয়ে দেওয়া অপহরণের হুমকির চিঠি।সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে ওই এলাকার হিন্দু পাড়ায় একটি গাছে চিঠি টাঙিয়ে দেওয়া অপহরণের হুমকির চিঠি।
অপহৃত কিশোরীর বাবা বলেন, ‘আমার মেয়ে খুবই শান্ত স্বভাবের। সে পড়াশুনায় খুবই মনোযোগী। আমার মেয়ে বাড়ি থেকে কোচিং যাওয়ার পথে আলিনুর ও তার কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গ মিলে তাকে অপহরণ করেছে। আমার মেয়েকে তারা গোপন স্থানে বন্দি করে রেখেছে। আমি আমার মেয়েকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই।’
এদিকে চিঠি টাঙানোর ঘটনায় জিডি করা রনজিত চন্দ্র সেন বলেন, ‘আমরা ৪ সেপ্টেম্বর থানায় জিডি করেছিলাম। পুলিশ আন্তরিকভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখলে দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করতে পারত। দুর্বৃত্তদের আইনের আওতায় আনলে আমাদের গ্রামের মেয়ে অপহরণের শিকার হতো না।’
এ বিষয়ে ফুলবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নওয়াবুর রহমান বলেন, ‘জিডি করেছিলেন ওই গ্রামের রনজিত চন্দ্র আর অপহরণ করা হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের আরেকজনের মেয়েকে। কাজেই ওই চিঠির সঙ্গে এই অপহরণের ঘটনার মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। অপহরণের ঘটনায় আলিনুর, তাঁর ভাই আল আমিন, ভগ্নিপতি আব্দুল হানিফ ও বোন রাশেদাকে আসামি করে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, অপহরণকারী যুবকের সঙ্গে স্কুলছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কয়েক মাস আগে ছেলেটি পারিবারিক চাপে বিয়ে করলেও ছাত্রীটির চাপে গত ১২ সেপ্টেম্বর তার স্ত্রীকে তালাক দেন।’
জানতে চাইলে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রেহেনুমা তারান্নুম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। অপহৃত স্কুলছাত্রীকে অক্ষত উদ্ধার ও অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।’
Comments